somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রংপুর ট্র্যাজেডি, সাম্প্রদায়িকতা রুখতে হবে

২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চিরচেনা পরাজিত সাম্প্রদায়িক শক্তি অনুক‚ল পরিবেশ পেয়ে অপকৌশল নিয়ে অনবরত অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদকে আঘাত করে চলেছে। মাঝে মাঝেই এমন ভাবনা মনে আসে যে, এই বিশ্ব পরিস্থিতিতে অসাম্প্রদায়িক ঘোষণা ও কর্মসূচি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগের মতো একটি দল ছোট ছোট বাম ও কমিউনিস্ট দলগুলোকে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারে কীভাবে? আসলেই এটাকে ‘মিরাক্কেল’ বলে মনে হয়।
আবার ফেসবুক ঘিরে সংখ্যালঘু ট্র্যাজেডি নাটক অনুষ্ঠিত হলো। যতটুকু মনে পড়ছে, বিগত চার বছরে এরকম নাটক কম করে হলেও চারটি হয়েছে। এ বছরটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। কোনে ক্রমেই গ্যাপ দেয়া যায় না। তাই সময় থাকতেই নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। এবারের মঞ্চ রংপুর জেলার গঙ্গাছড়া উপজেলার হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্রাম। নাটকের প্লটও কমবেশি একই। প্রথম অঙ্কে পার্থক্য এক জায়গায়, আগের শিখণ্ডি অভিযুক্তরা এলাকাতেই বসবাস করত আর এবারের অভিযুক্ত টিটু রায় এলাকাতেই থাকেন না। তারপর নাটকের একই ধারাবাহিকতা। পবিত্র ধর্মের অবমাননা হয়েছে বলে উত্তেজনা সৃষ্টি, প্রশাসন ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, স্লোগানসহ বহু মানুষের জঙ্গি মিছিল নিয়ে সংখ্যালঘুদের বসতিতে আক্রমণ, আগুন, লুটপাট, দেবদেবীর মূর্তি ভাঙা, প্রশাসন ও মন্ত্রী-নেতাদের এলাকা সফর ও আশ্বাস, কমবেশি সাহায্য প্রদান, প্রতিবাদ বিবৃতি, পত্রিকায় সম্পাদকীয় ও কলাম প্রকাশ, মামলা প্রদান, কথিত অভিযুক্ত এবং আক্রমণকারী কিছু ব্যক্তি গ্রেপ্তার হওয়া। তারপর চুপচাপ। সব গা সাওয়া করে নেয়া। তবে এবারে ধারাবাহিকতায় কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। আক্রমণকারী উচ্ছৃঙ্খল জঙ্গি জনতার মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে ১ জনের মৃত্যুসহ বেশ কতকজন জখম হয়েছে। পুলিশও হয়েছে জখম। আর মিছিলে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কেউ উপস্থিত ছিল বলে এখন পর্যন্ত অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। কেবল স্থানীয় জামায়াত নেতারা তা সংঘটিত করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে।
ফেসবুক ঘিরে সংখ্যালঘু ট্র্যাজেডি নাটকগুলোর বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, প্রথমত ফেসবুক স্ট্যাটাসে ধর্মীয় স্পর্শকাতর স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আঘাত দিয়েছে বলে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। উত্তেজনা চরমে তুলে মিছিলে হাজার হাজার মানুষ একত্র হয় এবং সংখ্যালঘু এলাকায় আক্রমণ করে। অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনো বিষয় নয়, টার্গেট হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও উপাসনালয়। এত মানুষ একত্রিত হয়ে এমন সাম্প্রদায়িক হিংসাত্মক কাজে নামাটা যেমন ভয়ঙ্কর, তেমনি বিস্ময়কর। যতটুকু মনে হয়, কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা কোনো মন্ত্রী-নেতার পক্ষেও ঘোষণা ও অর্থ জোগানসহ নানা প্রস্তুতি ছাড়া এত মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত ও মিছিল সংঘটিত করতে পারাটা অসম্ভব। আরো লক্ষণীয় হলো- জমায়েতের আকার ও আক্রমণের ধরন দেখে মনে হয় যেন এলাকায় গণজাগরণ হয়েছে। রংপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে ৮ থেকে ১০ হাজার লোক জমায়েত হলে তো তেমনটাই বলতে হয়। আরো দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, মানুষের মধ্য থেকে ওই হিংসাত্মক কাজে বাধা দেয়ার মতো কোনো রাজনৈতিক দল সামাজিক সংগঠন বা মানুষ নেই। স্বাধীন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসা এমন গণরূপ নেবে, তা অতীতে কল্পনাও করা যেত না।
দ্বিতীয়ত, একটা মিথও যেন ভেঙে যাচ্ছে। বিশেষভাবে সংখ্যালঘুদের মনে একটা দৃৃৃৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থা ছিল যে, ঐতিহ্যবাহী ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকরী দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সাম্প্রদায়িক গোলোযোগ কখনো হলে তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। প্রটেকশন পাবে সংখ্যালঘুরা। কিন্তু তা মিথ্যা প্রমাণ করে দিচ্ছে ধারাবাহিক ফেসবুক ট্র্যাজেডিসহ বিভিন্ন ধরনের সাম্প্রদায়িক হিংসাত্মক ঘটনা। আর গা সওয়া ভাবটা কল্পনা করতে কিংবা মেনে নিতে প্রচণ্ড কষ্ট হয়। বিশেষভাবে পাকিস্তানি আমলে ছাত্রসমাজ এবং জাতীয় রাজনীতির মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো খুবই দ্রুত সাম্প্রদায়িক অপতৎপরতার বিরুদ্ধে জমায়েত হয়ে অবস্থান নিত। কিন্তু মনে হচ্ছে তাদেরও আবেগ অনুভ‚তি, যুক্তি ও মুক্তমন যেন গেছে ভোঁতা হয়ে। সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসার চেতনা গণরূপ নিচ্ছে আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা মানুষকে টানতে পারছে না। এই প্রেক্ষাপটে সঙ্গতভাবেই এই প্রশ্নটা দাঁড়ায় যে, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা কি বুঝতে পারছি, এ ধরনের সাম্প্রদায়িক প্রতিহিংসাপরায়ণ আক্রমণ জাতিসত্তার কোথায় আঘাত করছে? জাতিসত্তার কোথায় আগুন জ্বেলে সব কিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে? এই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনায় ইতিহাসের দিকে মুখ ফিরে তাকানো ভিন্ন বিকল্প নেই।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নবজাত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যতটুকু মনে পড়ে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের বিশাল ঐতিহাসিক জনসভার ভাষণে প্রথমবারের মতো মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের গৃহীত জাতীয় তিন মূলনীতির সঙ্গে ‘জাতীয়তাবাদ’ শব্দটি যুক্ত করেন। পরবর্তী সময়ে ‘জাতীয়তাবাদ’ শব্দটি জাতীয় চার নীতির (জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা) প্রথম নীতি হিসেবে সংবিধানে যুক্ত করেন। তিনি জাতিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জীবনের শেষ দিনগুলোতে বলেছিলেন, ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ না থাকলে আমাদের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়ে যাবে।’ প্রশ্ন হলো, কেন তিনি জাতীয় মূলনীতিতে সর্বাগ্রে বাঙালি জাতীয়তাবাদ শব্দটি রেখেছিলেন এবং তেমনটা বলেছিলেন? এই প্রশ্নটির মুখোমুখি আজ দাঁড়াতে হবে বঙ্গবন্ধুর অনুসারীদের, জনগণের। এটা কার না জানা যে, আমাদের এই মানচিত্রে বাঙালি জাতিসত্তার ভ্রুণ সৃষ্টি হয় ১৯৪৮ ও ১৯৫২-এর রক্তক্ষয়ী ভাষা আন্দোলনের ভেতর দিয়ে। প্রথম থেকেই দ্বিজাতিতত্ত্বভিত্তিক জাতিসত্তার বিপরীতে ও বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতিসত্তা ঝড়ঝঞ্ঝা বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে ইপ্সিত লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হয়। সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা অর্থাৎ জাতীয় ওই তিন নীতি সঙ্গে থাকলেও জাতীয়তাবাদই হয় জাতীয় গণসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের চালিকাশক্তি।
বলাই বাহুল্য ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘জয় বাংলা’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর’ এই স্লোগানগুলো ছিল তারই বহিঃপ্রকাশ। সার্বিক বিচারে ‘জাতীয়তাবাদ’ হচ্ছে আমাদের জাতিসত্তার প্রাণভোমরা। দূরদর্শী ও স্বপ্নদ্রষ্টা আমাদের জাতির পিতা তাই জাতীয়তাবাদের রূপরেখা ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলার আগেই ৭ মার্চের যুগান্ত সৃষ্টিকারী ভাষণে দিয়েছেন। এটা ছিল জাতির জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেছেন, ‘মনে রাখবেন শত্রুবাহিনী ঢুকেছে নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে, লুটতরাজ করবে। এই বাংলায় হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-নন-বাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের ওপর, আমাদের যেন বদনাম না হয়।’ আর এই কথাগুলোর ওপর ভিত্তি করেই স্বাধীনতার পর সংবিধানে তিনি চার নীতির প্রথম নীতি জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন। সংবিধানে লেখা রয়েছে, ‘ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি।’
প্রসঙ্গত, হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়সহ বাংলাদেশের সব ‘নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্যমূলক আচরণ করিবেন না’ কথাটি হঠাৎ করে বাহাত্তরের সংবিধানে যুক্ত হয়নি। অতীতের দিকে নিতান্ত অন্ধ হয়ে না তাকালে দেখা যাবে, ভারতীয় উপমহাদেশের বিভক্তির ভেতর দিয়ে যে মানচিত্রটি আমরা পেয়েছি, তা বাংলার শোষিত বঞ্চিত নিপীড়িত কৃষক মুসলমান ও হিন্দু (তফসিলরা পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দিয়েছিল) সম্প্রদায়ের সৃষ্ট। পাকিস্তান সৃষ্টির পর ১৯৪৮ সালের ২৫ আগস্ট সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক নেতা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (শহীদ) প্রথম পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবি উত্থাপন করেন। তারপর ভাষা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সব আন্দোলন-সংগ্রামে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। প্রসঙ্গত, গণঅভ্যুত্থানের পর ইয়াহিয়ার সামরিক শাসনামলে পাকিস্তানের শাসক শোষকগোষ্ঠী শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগকে পরাজিত করার জন্য বাঙালি ভোটকে বিভক্ত করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র চক্রান্ত শুরু করে। ২১ ডিসেম্বর ১৯৬৯ ঢাকার বার লাইব্রেরি হলে প্রচুর অর্থ ব্যয় ও পদের লোভ দেখিয়ে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা হিন্দু নেতাদের দিয়ে সংখ্যালঘুদের একটি সভা ডাকা হয়। দাবি হচ্ছে, ধর্মভিত্তিক আলাদা নির্বাচন প্রথা। কিন্তু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তসহ জাতীয় রাজনীতির মূলধারার পক্ষের হিন্দু রাজনীতিক ও ছাত্রনেতারা পাকিস্তানি শাসক শোষকগোষ্ঠীর সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। যুক্ত নির্বাচনপ্রথা বজায় না থাকলে আওয়ামী লীগের কি মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব সত্তরের নির্বাচনে এমন নিরঙ্কুশ বিজয় হতো পারত!
প্রসঙ্গত বলতেই হয়, জাতীয় মূলধারার রাজনৈতিক দল বিশেষত আওয়ামী লীগ ও ন্যাপ এবং ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগ সংখ্যলঘু হিন্দু সম্প্রদায়কে নির্যাতন-নিপীড়ন এবং জানমাল রক্ষায় বিশেষভাবে ষাটের দশকের প্রথমদিক থেকে যে গৌরবোজ্জ্বল ভ‚মিকা রাখে, তা যদি না রাখত তবে সংখ্যালঘুরা কিন্তু যুক্ত নির্বাচনপ্রথার পক্ষে এমন দৃঢ়ভাবে দাঁড়াত না। এখানে ১৯৬৪-এর জানুয়ারিতে আইয়ুব-মোনায়েম সরকার কর্তৃক মূলত অবাঙালি শ্রমিকদের অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহসহ নানা উপায়ে উত্তেজিত করে লেলিয়ে দিয়ে দাঙ্গা বাধানোর ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করতে পারি। ১৫ জানুয়ারি ১৯৬৪-এর দাঙ্গা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তখন শেখ মুজিব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে রাস্তায় নামেন এবং ওয়ারী এলাকায় জীবননাশের মুখোমুখি হন। নজরুল গবেষক আমীর হোসেন দুর্গত সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের উদ্ধার করতে গেলে দাঙ্গাবাজদের দ্বারা নিহত হন। ‘পূর্ব বাংলা রুখিয়া দাঁড়াও’ শিরোনামে বিবৃতি তখন পত্রিকায় প্রকাশিত এবং প্রচারপত্র হিসেবে ছাপিয়ে বিলি হয়। ক্রমেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়ের ছাত্র ও জনগণ প্রতিবাদ ও প্রতিরোধমুখী হতে থাকে। পরিস্থিতি বুঝে ক্ষমতাসীন শাসক শোষক আইয়ুব-মোনায়েম চক্র পিছু হটে এবং দাঙ্গা বন্ধ হয়। ওই সময়ে দাঙ্গাবিরোধী কার্যক্রম ছিল বাঙালি জাতির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গৌরবমণ্ডিত এক অধ্যায়, যা অমোচনীয় কালিতে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবে।
পরবর্তী সময়ে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় যখন উগ্র বাম ডান সম্মিলিতভাব প্রচারে নামে যে, জগন্নাথ হল থেকে টর্চলাইট দিয়ে ভারতের বিমানবাহিনীকে সংকেত পাঠানো হচ্ছে, তখন জাতীয় মূলধারার ছাত্র সংগঠনগুলোই ওই হলকে আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। স্বাধীন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বড় উদাহরণ হলো, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর ভারত থেকে এবং দেশের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাখ লাখ শরণার্থী, যাদের মধ্যে বিপুলসংখ্যক ছিল সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের, তাদের বাড়ি জমি এমন কি জিনিসপত্র ফিরে পেতে কিন্তু তখন তেমন কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। জায়গা ছেড়ে গিয়ে পরে তা ফেরত পাওয়ার ঘটনা খুব কমই ঘটে। এটা ছিল বিশ্ব প্রেক্ষাপটে আমাদের জাতিসত্তার প্রাণভোমরা অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদ তথা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অতি উজ্জ্বল উদাহরণ। এটাও বিবেচনায় নিতে হবে যে, বঙ্গবন্ধুর আমলে নবজাত যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে যখন পুনর্গঠন পুনর্বাসনের কাজ চলছে কিংবা বন্যার পর যখন গণজীবনে খাদ্য নিয়ে দুঃসহ অবস্থা, তখনো উগ্র বাম ও প্রতিক্রিয়াশীল ডান মহল আমাদের জাতির প্রাণভোমরাকে আঘাত করার হীন উদ্দেশ্য নিয়ে কখনো ভারত বিরোধিতা আর কখনো দ্বিজাতিত্ত্বের ভূত উসকে দিতে সচেষ্ট থেকেছে। কিন্তু তখন পরাজিত ওই শক্তি কোনো ফায়দা লুটতে পারেনি। তখন তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখন এসব ঐতিহ্য প্রচার হয় না বললেই চলে। তখনকার ঘটনাপ্রবাহ পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, সেই প্রাণভোমরার ধারক বাহক রক্ষক হচ্ছে জনগণ। ৭ মার্চের ভাষণের উল্লিখিত উদ্ধৃতিতেও আছে সেই নির্দেশ, ‘রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের ওপর, আমাদের যেন বদনাম না হয়।’ এই ‘আপনাদের’ শব্দের অর্থ হচ্ছে গণমানুষ।
কিন্তু ১৯৭৫-এর সেই কালরাত্রিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর পরিস্থিতি যায় পাল্টে। দেশকে ‘মিনি পাকিস্তান’ বানানোর লক্ষ্যে এক সামরিক ফরমানে সংবিধান পরিবর্তন করা হয়। মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে রাজনৈতিক দল করার অধিকার দেয়া হয় এবং দালাল ও ঘাতকদের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন ও মন্ত্রিত্বে বসিয়ে দেশকে ‘পাকিস্তানিকরণ’ করা হতে থাকে। গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের মাত্র ৪/৫ বছরের মাথায় পাকিস্তানি দালাল শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের প্রধান করা ছিল এর একটি জ্বলন্ত প্রমাণ। মুক্তিযুদ্ধের সাড়ে তিন বছরের মাথায় অস্ত্রের জোরে ক্ষমতার এই বিপরীতমুখী পরিবর্তন এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় দেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে পাকিস্তানের দ্বিজাতিতত্ত্বের ভূত শক্তভাবে গেড়ে বসে। পাকিস্তানের ২৪ বছর আর মাঝের সাড়ে তিন বছর বাদে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সামরিক শাসনের ২১ বছর সর্বমোট ৪৫ বছর মানে হচ্ছে দুই প্রজন্ম।
মুক্তিযুদ্ধ যেমন তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অবিনশ্বর। করো সাধ্য নেই গণমানুষের ঐতিহ্যমণ্ডিত শিকড়ের গহিন থেকে উঠে আসা এবং গণমানুষের রক্তস্নাত বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ঘটনা ও সঞ্চিত চেতনার মূলোৎপাটন করার। তাই আবারো জনসমর্থন নিয়ে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ। তবে তা এত সহজ সরল ছিল না। বিএনপি-জামায়াতের বিভক্তি ঘটাতে কাঁটা দিয়েই কাঁটা তুলতে হয়। তাতে ক্ষত থেকে গেলেও সুদীর্ঘ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আবারো ঘুরে দাঁড়ায়, জাতি আবারো জেগে উঠতে শুরু করে। তবে সুদীর্ঘ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করা খুব সহজ নয়। তদুপরি ক্ষত তো ছিলই। ইতোমধ্যে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সামরিক আইনের মধ্যে অর্থ ও অস্ত্র রাজনীতিকে আরো কলুষিত করে ফেলেছে। পরিণতিতে হয় বিএনপি-জামায়াতের চারদলীয় ঐক্যজোট এবং তত্ত্বাবধায়ক সা-ল-শা সরকারের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত। ২০০১ সালের ভোটে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসে। শুরু হয় নিরীহ ভোটার হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর প্রত্যক্ষ আক্রমণ লুটপাট অগ্নিসংযোগ হত্যা ধর্ষণ প্রভৃতি। দেশ হিন্দুশূন্য করা ছিল ওই সময়ের ‘এথনিক ক্লিনজিং’-এর লক্ষ্য।
জাতির দুর্ভাগ্য হচ্ছে এই যে, ওই নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে আমেরিকায় টুইন টাওয়ার ধ্বংসের ঘটনা ঘটে। বিশ্ব প্রবেশ করে ধর্মীয় উগ্রতার যুগে। বিশ^ পরিমণ্ডলে আমেরিকার নেতৃত্বে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ জঙ্গি তৎপরতাকে যেমন তেমনি জঙ্গি গ্রুপগুলোকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়। ধর্ম নির্বিশেষে ধর্মীয় উগ্রতা ও ধর্মভিত্তিক জাত্যাভিমান যেমন বাড়তে থাকে, ঠিক তেমনি ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারও বিশ্বের দেশে দেশে বিস্তার লাভ করতে থাকে। পরিস্থিতি আজ এমনই যে আমেরিকা তার জন্মলগ্নের অঙ্গীকার ধর্মীয় ও জাতিগত সম্প্রীতি ও ঐক্যের অবস্থান থেকে সরে আসতে চেষ্টা করছে। ভারতে ধর্মীয় রাজনীতির উত্থান ঘটেছে। ইউরোপে বিদ্বেষ বাড়ছে। চীন উইঘুর মুসলিমদের ধর্মপালনে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে বলে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত বলতেই হয়, এমনিতেই আমাদের জাতি ছিল পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে ক্ষমতার আশ্রয়- প্রশ্রয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থান ও ডামাডোলের মধ্যে। বিশ্ব পরিস্থিতির উল্লিখিত ধরনের পরিবর্তন আমাদের জাতির প্রাণভোমরা অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদকে আরো বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। চিরচেনা পরাজিত সাম্প্রদায়িক শক্তি অনুকূল পরিবেশ পেয়ে অপকৌশল নিয়ে অনবরত অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদকে আঘাত করে চলেছে। মাঝে মাঝেই এমন ভাবনা মনে আসে যে, এই বিশ্ব পরিস্থিতিতে অসাম্প্রদায়িক ঘোষণা ও কর্মসূচি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগের মতো একটি দল ছোট ছোট বাম ও কমিউনিস্ট দলগুলোকে নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারে কীভাবে? আসলেই এটাকে ‘মিরাক্কেল’ বলে মনে হয়।
বলাই বাহুল্য, রংপুর, নাসিরনগর, রামু প্রভৃতি জায়গার আগুন মানেই কিন্তু হচ্ছে জাতির প্রাণভোমরাতে আঘাত ও আগুন দেয়া। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আজ থেকে ৪৬ বছর আগে আমাদের ‘শত্রুবাহিনী ঢুকেছে নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে, লুটতরাজ করবে’ বলে সজাগ ও সতর্ক করেছিলেন। বলেছিলেন আমাদের যেন বদনাম না হয়।’ প্রশ্ন হলো শত্রু সম্পর্কে সজাগ ও সতর্ক কি গণমানুষ হচ্ছে? বিশেষভাবে বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ কি হচ্ছে? বদনাম ঘোচানোর জন্য কী করছে আওয়ামী লীগ দল? পর্যবেক্ষণে প্রতীয়মান হচ্ছে, যখনই রামু নাসিরনগর বা রংপুরের মতো ট্র্যাজেডি সংঘটিত হয়, তখনই জোরেশোরে আওয়াজ ওঠে প্রশাসন নিশ্চুপ ছিল, প্রশাসনের ব্যর্থতা। ইত্যাদি ইত্যাদি। এটা ঠিক যে, ব্যর্থতা প্রশাসনের আছে। কিন্তু কী করে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ? কী করেন আওয়ামী লীগের গণপ্রতিনিধিরা? নেতা তো এলাকা এলাকায় খুব কম নেই। গণসমর্থনও তো রয়েছে।
প্রশ্ন হলো- ৮/১০ হাজারের পরিবর্তে ১০/১২ না হোক, ছোট জমায়েতও কি করতে পারে না আওয়ামী লীগ? কী করে ছাত্র যুব নেতৃত্ব? গণপ্রতিবাদ ও প্রতিরোধ ছাড়া কি কখনো উগ্র অন্ধ জনরোষ ঠেকানো সম্ভব? কী করেছিলেন বঙ্গবন্ধু ১৯৬৪-এর দাঙ্গার সময়! তখন প্রশাসন পক্ষে থাকার প্রশ্ন ছিল না। ‘পূর্ব বাংলা রুখিয়া দাঁড়াও’ না বলে অগ্রসর হলে কি ৬-দফা আর ৭ জুন হতো! ১১-দফা গণঅভ্যুত্থান! মুক্তিযুদ্ধ! গণমানুষ যদি ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে না দাঁড়ায়, তবে প্রশাসনের পক্ষে অন্ধ প্রতিহিংসাপরায়ণ জনরোষ ঠেকানো কি আদৌ সম্ভব? এলাকার ভারসাম্য রক্ষার্থে তারা তো দক্ষিণমুখী হবেই। তাছাড়া প্রশাসনে আছে শত্রুদের অবস্থান ও অনুপ্রবেশ। যাকে বলে মব, তা রোধ করতে হলে তো চলতে হবে গুলি। হবে প্রাণ হরণ, রক্তক্ষয়। কোন পথ নেবে প্রাণভোমরা রক্ষা করতে বাঙালি জাতি, এটাই তাই আজ বড় প্রশ্ন! এক মুজিব থেকে লাখো কোটি মুজিব যদি জাগ্রত না হয়, তবে আমাদের জাতির প্রাণভোমরাকে আমরা আসলে রক্ষা করতে পারব না। পারব না অন্য তিন নীতি সমাজতন্ত্র গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠার পথ কণ্টকমুক্ত করতে। দেশ ধনসম্পদে উন্নত হবে ও হচ্ছে কিন্তু মনোগত জগতের সম্পদ হতে থাকবে শূন্য। মানচিত্র থাকবে কিন্তু হৃদয় যাবে শুকিয়ে, প্রাণভোমরা থাকবে বন্দি হয়ে। এ কারণেই ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ না থাকলে আমাদের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়ে যাবে।’ জাতির জনকের এই অমোঘ সত্য কথাটি স্মরণে রেখে জাতির অগ্রসর ও পুনর্জাগরিত হওয়া ভিন্ন বাঙালি জাতীয়তাবাদ রক্ষার আসলেই বিকল্প কোনো পথ দেখি না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমিও যাবো একটু দূরে !!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২২

আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×