শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রতিটি সেমিস্টারের শুরুতে পণ করতাম যে এইবার দেখাইয়া দিমু; পড়ালেখা কারে কয়। নাহিদ মিয়ার এসএসসি/এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের মতো গোল্ডেন এ-প্লাস উঠামু এই সেমিস্টারে । সেমিস্টার শুরু হয়, ক্লাস শুরুর মাস খানেক পরে মিড-টার্ম পরীক্ষাও শুরু হয়; যথাবিহিত প্রতিটা বিষয়ে ২ টা করে মিড-টার্ম পরীক্ষা শেষে দেখা যায় গড়ে ২০ এর মধ্যে ১২-১৪ নম্বর । অতঃপর বাংলা সিনেমার নায়ক/নায়িকাদের মতো চোখে গ্লিসারিন লাগাইয়া কোর্স টিচারের দরজায় দাঁড়াইয়া বিনীত অনুরোধ স্যার আর একটা মিড-টার্ম পরীক্ষা নেন; একজন ভবিষ্যত আইনেস্টাইনের শিক্ষা জীবন অকালে ঝড়ে পড়া থেকে রক্ষা করুন । প্রথম চেষ্টার সফল হইতে না পারিলে দ্বিতীয়বার বান্ধবীদের নিয়া আবারও স্যারের দরজায় হাজির। অতঃপর তৃতীয় মিড-টার্ম পরীক্ষার জন্য স্যারকে রাজি করাতে সফল হওয়া। তৃতীয় মিড-টার্ম পরীক্ষা শেষে আবারও স্যারের কাছে হাজির হইয়া মামার বাড়ির আবদার "স্যার বেষ্ট ওয়ান কাউন্ট করেন"। দীর্ঘ অনুনয় বিনয় করিয়া অবশেষে স্যারকে বেষ্ট দুইটা মিড-টার্ম পরীক্ষার নম্বরের গড় কাউন্ট করাইতে রাজি করানো ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রতি সেমিস্টারের নিয়মিত রুটিন ।
অতঃপর ১২ সপ্তাহ ক্লাস, ২ সপ্তাহ প্রিপারেটরি লিভ এর পরে ফাইনাল পরীক্ষা। দুই পার্টে ৫ টা করে প্রশ্নের মধ্যে প্রতি পার্টে ৩ টা উত্তর করতে হতো। বেশিভাগ ক্ষেত্রে কোর্সের ৫০-৭০ ভাগ পড়ে ফাইনাল পরীক্ষায় হাজির হয়ে দেখা যেত এক পার্টে ৫ টা প্রশ্নের মধ্যে ৫ টাই কমন পড়েছে আর অন্য পার্টে ৫ টার মধ্যে ১/২ টা । অতঃপর ভয়ংকর অভিজ্ঞতা নিয়ে পরীক্ষার রুম ত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয় বাসে বসে এই প্রতিজ্ঞা করে ম্যাচে ফিরতাম যে এই সেমিস্টারই শেষ। আগামী সেমিস্টারের ক্লাস শুরুর প্রথম দিন থেকেই মনোযোগ দিয়া পড়া-লেখা করুম ।
বিদায় ২০১৭; দেইখা নিমু ২০১৮
"বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক॥
যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে-যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক॥
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।
রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি,
আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ।
মায়ার কুজ্ঝটিজাল যাক দূরে যাক॥"
*****************************************
Happy New Year 2018
*****************************************