জুন মাসের ১৯ তারিখে অতিবৃষ্টি ও দেশের কিছু অঞ্চলে স্বল্প মানের বন্যার যে পূর্বাভাষ করেছি সেই একই পূর্বাভাষ করতেছে বাংলাদেশ সরকারের আবহাওয়া ও বন্যা পূর্বাভাষ ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গুলো জুন মাসের ২৫ তারিখে। সারা পৃথিবী যখন চলতেছে সুপারকম্পিউটার এর গতিতে তখনও বাংলাদেশের আবহাওয়া পূর্বাভাষ সম্পর্কিত সংস্থাগুলো চলতেছে সেই ১৯৬৫ সালের মেইন-ফ্রেম কম্পিউটারের গতিতে।
"নতুন করে বাড়ছে তিস্তার পানি। কিছুদিন থমকে থাকার পর সিলেটে সুরমা ও কুশিয়ারার পানি আবারও বাড়তির দিকে। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনার পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। সব মিলিয়ে আগামী এক সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন এলাকা পর্যায়ক্রমে বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।" সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ২৫ শে জুন, ২০১৮
যাই হউক, জুন মাসের ১৯ তারিখে দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাস কিছুটা আপডেট করে (জুলাই মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত) আগামী ২ সপ্তাহের আবহাওয়া পূর্বাভাষ:
১) জুন মাসের ২৬ ও ২৭ তারিখ সারা দেশ ব্যাপী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলিতেছে আবহাওয়া পূর্বাভাষ মডেল মহাশয়। বিশেষ করে আজ ২৫ শে জুন রাত থেকে আগামী কাল ২৬ শে জুন দুপুর পর্যন্ত প্রায় পুরো দেশ ব্যাপী বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাষ দেখাচ্ছে আবহাওয়া পূর্বাভাষ মডেল। এই সময়ে রংপুর, ঢাকা ও সিলেট বিভাগে ভারি বৃষ্টি হবে। জুলাই মাসের ৩ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত সরা দেশে বৃষ্টিপাত হবে। বিশেষ করে ৩, ৪, ৫, ১০ ও ১১ তারিখে ভারি বর্ষণ হবে দেশের একাধিক জেলায়।
২) ২৬ শে জুন থেকে জুলাই মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত প্রায় পুরোটা সময় (২/১ দিন ব্যতীত) রংপুর বিভাগের জেলা গুলোতে হালকা থেকে ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় (জুন মসের ২৬, ২৭ ও ২৯ তারিখ) পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁ, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলায় ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৩) জুনের ২৫ ও ২৬ তারিখ খুবই ভারি বৃষ্টি হবে সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতীয় পাহাড়ি অঞ্চলে ফলে সিলেট বিভাগে চলমান বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে। জুলাই মাসের ১, ২, ৩, ৪, ১০, ও ১১ তারিখ আবারও ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে (বিশেষ করে শিলং ও চেরাপুঞ্জি এলাকায়) ভারি বৃষ্টি শুরু হবে। জুলাই মাসের ৩ ও ৪ তারিখ সিলেট বিভাগে ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৪) ২৬ শে জুন বৃহত্তর ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর ও শেরপুর জেলায় ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রক্ষমপুত্র অববাহিকায় ভারতীয় অংশে জুনে মাসের ২৬ তারিখ থেকে জুলাই মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিশেষ করে জুলাই মাসের ১, ২ ও ৩ তারিখে ভারি বর্ষণ হবে। ফলে দয়ার সাগর দাদা বাবুরা তিস্তার উজানে অবস্থিত গজল-ডোবা বাঁধের দরজা গুলা খুলিয়া দিতে বাধ্য হইবে বলিয়া সম্ভাবনা দেখা যাইতেছে যার ফলে তিস্তা ও যমুনার চর অঞ্চলে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাইতেছে।
৫) চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষদের জন্য পূর্বাভাষ:
২৫,২৬ ও ২৭ এবং জুলাই এর ৪, ৫ ও ১০ তারিখে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, বান্দরবন, ও রাঙ্গামাটির জেলায় ভারি বৃষ্টি হওয়ার নির্দেশ করতেছে আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাষ মডেল। ২৬ শে জুন থেকে ২৭ জুন ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার জেলায় ও ২৯ তারিখ চট্টগ্রাম জেলায় খুবই ভাবি বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে (আমেরিকা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও কানাডার আবহাওয়া পূর্বাভাষ মডেল অনুসারে।
পুরো বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ও তাপমাত্রার বিচ্যুতির মানচিত্রে দেখা যাচ্ছে যে সবচেয়ে গরম পানির অবস্থান চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মায়ানমারের উপকূল অঞ্চলে। যে কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষরা এই বর্ষা মৌসুমের পুরো সময়ে একাধিকবার ভারি বৃষ্টির সম্মুখীন হইবেন। চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা একাধিক আবহাওয়া পূর্বাভাষ মডেল নির্দেশ করতেছে।
পোষ্টে ৬ টা মানচিত্র যোগ করা হলও: প্রথম ও দ্বিতীয়টি আগামী ৪৮ ঘণ্টার (জুনের ২৬ ও ২৭ তারিখ) সারাদেশ ব্যাপী সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ; তৃতীয়টি জুলাই মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত ও চতুর্থটি জুলাই মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত সারাদেশ ব্যাপী সম্ভব্য মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণের মানচিত্র। পঞ্চমটি বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রার ও যষ্ঠটি বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রার বিচ্যুতির মানচিত্র। মানচিত্রের সাথে সংযুক্ত স্কেল থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রা নির্দেশ করতেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:৪১