দুর্ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং সড়ক পরিবহনকে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে প্রতিবাদ-রত ছাত্র-ছাত্রীদের পোষ্টারে উপরোক্ত স্লোগান দেখার পরে দৃষ্টিগোচর হলও কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক জগন্নাথ বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ. আরিফুল ইসলাম বসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার ৩০ ঘণ্টা পরে পুলিশ বুড়িগঙ্গা নদী হতে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মনে পড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুর স্বল্প-শিক্ষিত কৃষক বাবা'র কথা?
আলবদর বাহিনীর (২০১৮ এর আলবদর বাহিনীর পরিচয় দিলে চাকুরি থাকবে না !!!) হাতে ঢাকার রাজপথে নির্যাতিত কোমল-মতি শিশুরা
"আজকে আমার ছেলে, কালকে আপনার ছেলে, পরশু দিন তার ছেলে এভাবেই দেশটা চলবে। আমরা মরে যাবো তারাই বেঁচে থাকবে।"
বাংলাদেশে পরিবহন সেক্টরে মালিক-শ্রমিক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান ও তার পরিবারের সদস্যদের নেতৃত্বে যে মাফিয়া তন্ত্র চালু হয়েছে সেই মাফিয়া তন্ত্রের বিরুদ্ধে কোমল-মতি শিশুরা পথে নেমে পুলিশের লাঠির বাড়িতে রাজপথে রক্ত বিসর্জন দিচ্ছে তা দেখার পরেও যদি আপনি এই সকল শিশুদের পাশে না দাঁড়ান তবে আপনার প্রতি বিনীত অনুরোধ আজ থকে শপথ করেন আর কোনদিন গাইবেন না "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালো বাসি" কিংবা আর কোন ২১সে ফেব্রুয়ারিতে গাইবেন না "আমার ভাই এর রক্তে রাঙ্গানো ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি"।
পরিবহন সেক্টরের মাফিয়া-তন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে চাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুর স্বল্প-শিক্ষিত কৃষক বাবা'র উক্তিটা আপনাকে বার-বার স্মরণ করতে হবে "'আজকে আমার ছেলে, কালকে আপনার ছেলে, পরশু দিন তার ছেলে এভাবেই দেশটা চলবে। আমরা মরে যাবো তারাই বেঁচে থাকবে।"
যেখানে বাজারে গিয়ে ১৫ টাকায় একটা প্রাণ পাওয়া যায় সেখানে প্রধানমন্ত্রী প্রতি প্রাণের দাম দিয়েছেন ২০ লাখ টাকা করে।
"ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাস-চাপায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিমের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।"
বাংলাদেশ যে এখন মধ্যমে আয়ের দেশ তার প্রমাণ বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০ লাখ টাকা করে দান। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রীর নৌ দুর্ঘটনায় নিহতদের ১ টা করে ছাগল দিয়েছিলেন কারণ সেই সময় দেশ ছিলও উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। দেশ যেহেতু এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের কাতে রে পৌঁছেছে তাই দুর্ঘটনায় নিহত পরিবার প্রতি দানের পরিমাণও বেড়েছে। এই রকম দানবীর প্রধানমন্ত্রীরে নিয়ে যারা ইনিয়ে-বিনিয়ে কুটিক্তি করে আর বিশ্বাস করে না যে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ তারা পাকিস্তানে চলে যেতে পারেন।
Students stop police DIG, find no license or papers
বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মন্জু, যিনি আবার দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার মালিক বাংলাদেশের পতাকা লাগানো গাড়িতে চে বেড়াচ্ছেন; ছাত্র-ছাত্রীরা সেই গাড়ি থামিয়ে দেখে ড্রাইভারের লাইসেন্স নাই। মন্ত্রী ঐ সময় গাড়িতেই বসে আছে। ইনারাই হলেন আমাদের আইনপ্রনেতা।
গতকাল ছাত্র-ছাত্রীরা অবৈধ পথে চলা বাংলাদেশের পতাকা লাগানো গাড়ি থামিয়ে দেখে ঐ সময় গাড়িতেই বসে আছেন শিল্প মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
কয়েক বছর পূর্বে একই ভাবে ট্রাফিক পুলিশ অবৈধ পথে চলা বাংলাদেশের পতাকা লাগানো গাড়ি থামিয়ে দেখে ঐ সময় গাড়িতেই বসে আছেন তৎকালীন রেল মন্ত্রী কালোবিড়াল দাদাবাবু ওরফে সুরন্জিন সেন গুপ্ত। উনি আবার নিজের পরিচয় দিয়ে থাকেন উনি বাংলাদেশে সংবিধানের অন্যতম প্রনেতা। সংবিধান প্রনেতাই দিনে-দুপুরে সংবিধানে বর্নিত আইণকে কাঁচাকলা দেখাচ্ছেন।
ইতিহাস বলে সকল হানাদার বাহিনীর একটা সহযোগী শক্তি থাকে। যেমন ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগী শক্তি ছিলও কাদের মোল্লা-কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে আলবদর আল সামশ বাহিনী। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের সরকারী হানাদার বাহিনীর সাথে আলবদর ও আল সামশ বাহিনীর ভূমিকা পালন করতেছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ।
আলবদর ও আল সাম্শ বাহিনীর কর্মী সামু ব্লগেও কম না। ১৯৭১ সালে আলবদর ও আল সাম্শ বাহিনীর কর্মীরা দেশের মানুষকে ধর্মের দোহাই দিয়া ধর্ষন-খুনের পক্ষে সাফাই গাইত; ২০১৮ সালের সামুর ব্লগের আলবদর ও আল সাম্শ বাহিনীর কর্মীরা চেতনার দোহাই দিয়া ধর্ষন-খুনের পক্ষে সাফাই গায়।
ভাবতেছি সামুর ব্লগের আলবদর ও আল সাম্শ বাহিনীর একটা লিষ্ট করবো ভবিষ্যতের ব্লগারদের জন্য দলিল হিসাবে। সড়ক পরিবহনকে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে প্রতিবাদ-রত ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনে; সরকারি চাকুরিতে কোটা প্রথা সংস্কারে সামু ব্লগের কোন কোন আলবদর ও আল সাম্শের ভূমিকা কি ছিলো তা ভবিষ্যত প্রজন্মের ব্লগারদের জানা দরকার
সদ্য ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতারা আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে গেলে উনি ছাত্রলীগের নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছেন "দুর্ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং সড়ক পরিবহনকে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে প্রতিবাদ-রত ছাত্র-ছাত্রীদের" বুঝিয়ে ঘরে ফেরত পাঠানোর। নেত্রীর নির্দেশ বলে কথা; বন্দুকের গুলি মিস হতে পারে কিন্তু ছাত্রলীগের নেতারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন মিস হবে না। দায়িত্ব পালনের নমুনা তারা দেখানো শুরু করেছে মিরপুরে স্কুলছাত্রদের দিয়ে।
ছবি সুত্র: ডেইলি স্টার পত্রিকা
ছবি সুত্র: ডেইলি স্টার পত্রিকা। ছবির মূল লিংক: Students chased, beaten up in Mirpur, Ctg
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:০৫