আগামীকাল ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ তারিখ থেকে কানাডায় গাঁজা খাওয়া বৈধতা পাচ্ছে। অর্থাৎ আগামীকাল থেকে বিড়ি-সিগারেটের মতই দোকানে (সকল দোকানে না; সরকার অনুমোদিত নির্দিষ্ট দোকান গাঁজা ক্রয় করা যাবে)। গত ১০ বছর ধরে পশ্চিমা বিশ্বে বসবাসের সুবাদে ও প্রতিনিয়ত মানুষের সাথে মেশা ও কথা বলে একটা বিষয় সম্বন্ধে কিছুটা অবগত হতে পেরেছি তা হলও এরা জেনে-শুনে-বুঝে একটা সামাজিক বা বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত সমস্যাকে প্রথমে চিহ্নিত করতে চাইবে এটা কোন সমস্যা না; এর পরে সেই সমস্যাটাকে দৈনন্দিন জীবনের মধ্যে অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করবে; এরও কিছুদিন পরে সেই একই গ্রুপ ক্যাম্পেইনে নামবে সমাজে বৈধতা পাওয়া ঐ সমস্যাটা সমাজে ব্যাপক ভাবে সমস্যার সৃষ্টি করতেছে তা সকলকে জানাতে; তারও পরে তারা মাঠে নামবে ঐ সমস্যা দূর করার জন্য আবারও কোন সমস্যাকে বৈধতা দানের জন্য। সাম্প্রতিক কালে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চিকিৎসা সাময়িকী দ্যা ল্যান্সেট একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে যে গবেষণাটি বিশ্বের ১৯৫ টি দেশের মদখোর মানুষের মাঝে একটি পরীক্ষা চালিয়েছে ২৬ বছর ধরে শরীরের উপর মদ খাওয়ার প্রতিক্রিয়া নিয়ে। সেই গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে যে মদ খাওয়ার কোন নিরাপদ সীমা নাই No alcohol safe to drink, global study confirms। দৈনন্দিন ১ গ্লাস বা ১/২ গ্লাস কোনটাই মানব শরীরের জন্য নিরাপদ না। ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত যে পশ্চিমা বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ মদ খাওয়া জনিত রোগ।
গত কয়েক দিন থেকে প্রতিনিয়ত ইমেইল পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে; সরকারি অফিস চিঠি পাঠিয়েছে গাঁজা আইন নিয়ে; বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান মেইল পাঠাচ্ছে গাঁজা খাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে। সরকারের ব্যাপারটা এই রকম যে আমরা তোমাকে গাঁজা খাওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে যত তথ্য জানানো দরকার তা জানিয়েছি এখন তুমি সিদ্ধান্ত নাও যে নিজের বা বাপ-মা এর উপার্জন করা টাকা দিয়ে গাঁজা খাবা নাকি দুধ-ডিম খাবা তা তোমার ব্যাপার। তবে গাঁজাখোর দের জন্য যে কানাডিয়ান সমাজকে অনেক বেশি মূল্য পরিশোধ করতে হবে তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর কারণে বছরে যে পরিমাণ এক্সিডেন্ট হয় ও যত মনুষ মারা যায় ও আহত হয়ে সরকারের ফ্রি চিকিৎসা ব্যবস্হার বাজেট বাড়িয়ে দেয় তা অনেক বেড়ে যাবে আগামী কাল থেকে গাঁজা আইন বৈধতা পাওয়ার কারণে।
ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটা কনভেনিয়েন্স স্টোরে পার্ট-টাইম চাকুরী করার সময় বেশ কিছু বাংলাদেশি গাঁজাখোর দের কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। এদের বড় একটা অংশ অনার্সে পড়ুয়া। নিশ্চিত করে বলা যায় এদের বয়স ১৮-১৯-২০। ফ্রেন্ড লিস্টে অনেক মানুষ আছেন যাদের আত্নিয়-সজন বা ভাই-বোন কানাডার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটি টাকা (কানাডায় অনার্স পড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে সর্বনিন্ম ৫০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা খরচ করতে হয়) খরচ করে পড়া-লেখা করান। একটু খোজ খবর রাইখেন নিজেদের পরিচিত মানুষদের।
আর কানাডায় যারা থাকেন ও মদ-গাঁজা থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন তারা শক্রু, শনি ও রবিবার রাতে গাঁজাখোরদের দেখে-শুনে গাড়ি চালাইবেন। বন্ধু লিস্টে য সকল কানাডিয়ান গাঁজাখোর আছেন ও এতদিন অবৈধ ভাবে গাঁজা খাইতেন তারা আগামীকাল থেকে সরকারকে ট্যাক্স দিয়া দ্বিগুণ উৎসয়ে ও দ্বিগুণ পরিমাণে গাঁজা খাওয়া শুরু করেন। তবে সাবধান প্রয়াত গুনি অভিনেতা গোলাম মোস্তফা (সুবর্ণা মোস্তফার বাবা) এর মতো গাঁজার কলকি নিয়ে কানাডার রাজপথে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসে গাওয়া কলকিতে টান দিয়ে ধুয়া ছেড়ে যেন গাইতে শুরু না করেন "একটানে সাধু; দুই টানে সন্ন্যাসী; তিন টানে দেখো তোমরা ভগবানের হাঁসি"
বিঃদ্রঃ, মন্তব্যের শেষ বাক্যটা বাংলা সিনেমার একটা জনপ্রিয় গান; ধর্মের সাথে সম্পর্কযুক্ত কোন মন্তব্য না।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:২৬