somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাল্পনিক_ভালোবাসা
বহুদিন আগে কোন এক বারান্দায় শেষ বিকেলের আলোয় আলোকিত উড়ন্ত খোলা চুলের এক তীক্ষ্ণ হৃদয়হরনকারী দৃষ্টি সম্পন্ন তরুনীকে দেখে ভেবেছিলাম, আমি যাদুকর হব। মানুষ বশীকরণের যাদু শিখে, তাকে বশ করে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিব সারাটি জীবন।

শূন্য - এক অদেখা ভুবন।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট আবিস্কারগুলোর মধ্যে অন্যতম হল শূন্য। ছোটবেলায় গনিত ক্লাসে এই কথা শোনার পর আমি বেশ কয়েকবার স্বেচ্ছায় শূন্য পাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। ফলাফল স্বরুপ স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে যখন মনে হতো আমার বাম কানটা ডান কানের চেয়ে বড় হয়ে গেছে, তখন আমার লজিক ছিলো, সবচেয়ে দামী একটা আবিষ্কার আমি পেয়েছি, এখানে খারাপের কি আছে?

যাইহোক, এরপর জীবনের কেটে গেছে অনেকগুলো বছর। শূন্য নিয়ে মাথা ঘামাবার কোন সুযোগ পাই নি। আগে একটা সময় গনিত নিয়ে পড়তে মজা লাগত। গনিত একটা নেশা, গনিত একটা দর্শনও বটে। দার্শনিক পিথাগোরাস বিশ্বাস করতেন প্রকৃতির ভাষা হল গনিত। আমার কাছে মনে হয়, গনিত দিয়েই এই জগতকে বিশ্লেষন করা যায়, মানুষকে চিনতে পারা যায় এমনকি স্রষ্টার অস্তিত্ব সম্পর্কেও ধারনা পাওয়া যায়।

আমি আগে অবসর সময়ে সংখ্যা দিয়ে কোন মানুষকে বুঝার চেষ্টা করতাম। এটা সম্পুর্ণই আমার ব্যক্তিগত একটি ধারনা বা হাইপোথিসিস। যার প্রয়োগ আমার কাছে বেশ যৌক্তিক ছিলো। যেমন আমি কারো সম্পর্কে জানতে চাইলে, তাকে কথার মাঝে হঠাৎ থামিয়ে জিজ্ঞেস করতাম, আচ্ছা ১ থেকে ১০০ এর মধ্যে আপনার ৫ টা পছন্দের সংখ্যা দ্রুত বলেন। দ্রুত বলতে বলতাম কারন এতে প্রকৃত পছন্দ জানা যায়। আর প্রকৃত পছন্দ জানা না গেলে আমার এই স্বভাব বুঝার পরীক্ষা শতভাগ বিফল হবে। যেমন ধরুন, আমাকে একজন তার পছন্দের সংখ্যা বলল - ১০০, ১০, ৫০, ১, ৭।

তার পছন্দের এই সংখ্যা থেকে আমি ধারনা করলাম, তিনি তিনি বেশ উচ্চভিলাষী, ভাগ্যে বিশ্বাসী, অগোছালো, অস্থির এবং কিছুটা আত্মবিশ্বাসহীন ও কুসংস্কারচ্ছন্ন মানুষ। চমকে উঠে নিশ্চয় ভাবছেন, আমি কোন বাবা টাবা হয়ে গেলাম নাকি? আসলে এই বিষয়টার পিছনে আছে সিম্পল অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি। এবার আসি কিছুটা বিশ্লেষনে। যারা বেশ উচ্চভিলাষী এবং যাদের জীবনে প্রথম হবার তীব্র বাসনা থাকে, তাদের ১ এবং ১০০ সংখ্যাটির উপর বেশ দুর্বলতা থাকে। পরীক্ষায় ১০০ মার্ক পেলে আপনি ১ম স্থান অধিকার করবেন। ফলে যারা যে কোন মুল্যে প্রথম হতে চান বা শীর্ষে থাকতে চান তাদের অবচেতন মনে এই দুটো সংখ্যার প্রভাব থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ফলে কেউ যদি ১০০ আর ১ সংখ্যা দুইটিকে তার পছন্দের ৫টি সংখ্যার (কোন কিছু না ভেবে দ্রুত বলার যৌক্তিকতা) ভেতরে রাখেন, তাঁকে উচ্চভিলাষী ভাবাটা সাধারন লজিক বলেই আমার মনে হয়। তাছাড়া তার পছন্দ দেখে আরো মনে হয়, তিনি সেরা ১০ না হলে অন্তত সেরা ৫০ হলেও থাকতে চান। ১০ এবং ৫০ এর গুরুত্ব অবচেতনভাবেই আমাদের মনে আছে। ক্রিকেট খেলায় ৫০ স্কোর একটা অর্জন, কোন প্রতিযোগিতায় সেরা ১০ এ থাকতে পারাও একটা অর্জন। সুতরাং তার উচ্চাভিলাষ নিয়ে আর তেমন সন্দেহ থাকে না। তারপর দেখুন তার সংখ্যার ক্রম ১০০ থেকে এক লাফে ১০, তারপর আবার ৫০, তারপর ১ এবং সব শেষে সাত। এখান থেকে বুঝা যায় তিনি কিছুটা অগোছালো, তিনি স্থির চিত্তের নন। আবার ৭কে বিবেচনা করা হয় শুভ সংখ্যা হিসেবে। ৭ নাম্বার অর্জন করলেই আপনি সফল হবেন, এমন কোন বাঁধাধরা নিয়ম নেই। সাধারনত যারা শুভ অশুভ ব্যাপারকে মাথায় রাখেন, তারা অবশ্যই ভাগ্যে বিশ্বাসী এবং কিছুটা কুসংস্কারচ্ছন্ন মানসিকতার মানুষ। যাদের ভেতর এই দুটো গুনাবলী আছে, তারা নিঃসন্দেহে কিছুটা আত্মবিশ্বাসহীণ মানুষ। লজিক অন্তত তাই বলে।

এখন আমি যেভাবে সংখ্যাতত্ব বা সংখ্যা ক্রম নিয়ে মানুষের স্বভাবকে খোঁজার চেষ্টা করছি, তার কি কোন দালিলিক ভিত্তি আছে? উত্তর না, নেই, এটা শুধু মাত্র একটি ব্যক্তিগত পরীক্ষিত ধারনা। আপনি যদি যৌক্তিকভাবে বিশ্লেষন করেন, তাহলে অনেক কিছুই আমাদের আচরন থেকে বুঝা সম্ভব- আর এটাই আমার ধারনার মুল ভিত্তি।

আগে একটা সময় শূন্য নিয়ে অনেক ভাবতাম। আপনাদের সাথে আমার এই ছেলেমানুষী চিন্তাগুলো শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না, পাশাপাশি এই বিষয়ে যারা গনিত নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, তাদের পর্যবেক্ষন বা মতামতও জানতে চাই শেখার লোভে। যদিও গনিত আমার বিষয় নয়, গনিত নিয়ে আমার সকল আগ্রহ দর্শনের প্রেক্ষাপট থেকে।

আমরা অনেকেই জানি শূন্য মানে খালি বা ফাঁকা। এই খালি স্থানের কোন নির্দিষ্ট অঞ্চল বা অংশ নেই, এটা অসীম। তারমানে শূন্যর যদি কোন মান না থাকে, তাহলে তাকে অসীমও বলা যেতে পারে। যদি শূন্য মানে অসীম হয়, তাহলে কিছু প্রশ্ন থাকে। যেমন, অসীম মানে যার কোন সীমা নেই। কিন্তু কেউ যদি মনে করেন, অসীম বলে কিছু নেই, মানুষ যার সীমা আবিষ্কার করতে পারে নি, সেটাকেই অসীম বলে চালিয়ে দিয়েছে বা যার শেষ সীমা পর্যন্ত না গিয়ে কিছু আনুমানিক ধারনাকে মাধ্যম ধরে, বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে, তাকেই অসীম বলে, - এটা কি ভুল হবে? যদি ভুল হয় তাহলে আরো একটা প্রশ্ন সামনে আসে, তা হলো, এখন পর্যন্ত মানুষ যে জ্ঞান অর্জন করতে পারে নি, জ্ঞানের সেই অপ্রকাশিত অংশকে বিজ্ঞান কি সমর্থন করে না কি সমর্থন করে না? যদি বিজ্ঞান মানুষের অপ্রকাশিত জ্ঞানের উপর আস্থা রাখে বা বিশ্বাস করে, তাহলে 'ঈশ্বর' ধারনাটিকে কি বিজ্ঞান উড়িয়ে দিতে পারে?

(এই বিষয়ে আরো এক পর্ব লেখার ইচ্ছে আছে, জানি না কবে তা প্রকাশ করতে পারব)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:২৪
৩২টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×