somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রশ্নপত্র ফাস এবং সমাধান!

২১ শে জুন, ২০১৪ রাত ১১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এস কে দাস : আধুনিক যুগে তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের ফলে চাকরিসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস একটি নিত্ত নৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে পাবলিক পরীক্ষার মতো পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এতে দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয় আসবে। যার ফল ভোগ করবে আগামী প্রজন্ম তথা পুরো দেশ।
এবার আসি, কেন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়?
উত্তর খুবই সহজ। বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে কিন্তু প্রশ্নপত্র ছাপানো থেকে শুরু করে বণ্টন ব্যবস্থার কোনো আধুনিকায়ন হয়নি। প্রশ্নপত্র টাইপিং, ছাপানো, প্যাকেটিং, বণ্টনে যত মানুষ নিয়োজিত তাদের মধ্যে দুএকজন অসৎ কর্মকর্তা থাকবে না এটা অস্বাভাবিক। প্রশ্নপত্র কমবেশি সব সময় ফাঁস হয়েছে কিন্তু আগে তথ্য প্রযুক্তি বা তথ্য আদান প্রদান অনেক কঠিন ছিল, তাই প্রশ্নপত্র ফাঁস হলেও তা সীমিত কিছু মানুষের মধ্য সীমাবদ্ধ থাকতো। কিন্তু এখন ইন্টারনেটের প্রসারের ফলে বিভিন্ন সামাজিক সাইট বা ইমেইলের মাধ্যমেই দ্রুত ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো দেশে। ফলশ্র“তিতে মেধার অবমূল্যায়ন হচ্ছে।

এবার আসি সমাধানে,
১। প্রথম পদক্ষেপ: প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার জন্য ৭টি সেট প্রশ্ন তৈরি করতে হবে। ৭ সেট প্রশ্ন সংরক্ষণ করবেন শিক্ষামন্ত্রী নিজেই। এবার, চূড়ান্ত প্রশ্ন যেটি পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত হবে এই কাজটি সম্পন্ন হবে পরীক্ষার দিন সকাল সাড়ে ৭টায়। বলা বাহুল্য এত সকালে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমস্যা থাকলেও দেশ ও দশের কল্যাণে এতটুকু কষ্ট তাদের করতেই হবে। এই প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অত্যন্ত গোপনীয়তায় এবং শিক্ষামন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে। দৈব চয়নে লটারির মাধ্যমে এক সেট প্রশ্ন পছন্দ করা হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট সময় লাগবে।

২। দ্বিতীয় পদক্ষেপ: এবার শিক্ষামন্ত্রীর নিজস্ব একটি গোপন ইমেইল থেকে যেটার পাসওয়ার্ড শুধু শিক্ষামন্ত্রী একাই জানবেন। এই ইমেইল থেকে সব কয়টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিজস্ব গোপন ইমেইলে নির্ধারিত প্রশ্নের পিডিএফ ফরম্যাট পাঠানো হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। কারণ মেইল পাঠাতে এর থেকে বেশি সময় লাগবে না।

৩। তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রত্যেক পরীক্ষা কেন্দ্রে স্থায়ীভাবে একটি ল্যাপটপ, মডেম, ৩টি অফসেট প্রিন্টার, ফটোকপি মেশিন প্রদান করতে হবে। এবার পরীক্ষার দিন একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে উক্ত কেন্দ্রের প্রধান, সংশ্লিষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে মেইল গ্রহণ করবেন। এ ক্ষেত্রে বোর্ডের চেয়ারম্যান শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মেইল পাওয়া মাত্র কেন্দ্রের প্রধানের কাছে পাঠানো শুরু করবেন। আগে থেকেই সব কেন্দ্রের প্রধানের তালিকা তৈরি করে তাদের মেইলে দ্রুত ফরোয়ার্ড করবেন। বাংলাদেশে এখন সব উপজেলায় মোবাইল টাওয়ার আছে তার মানে ইন্টারনেটও আছে। আর যে কেন্দ্রে ইন্টারনেট সংযোগ নেই সেই কেন্দ্রকে বাতিল করে অন্য কেন্দ্রে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৪। চতুর্থ পদক্ষেপ: সময় ৮টা ১০ মিনিট। কেন্দ্রের অফসেট প্রিন্টারে পুলিশি পাহারায় ছাপানো শুরু হবে। একটি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ৩ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়। সে ক্ষেত্রে ৩০০০ প্রশ্ন ছাপাতে ৩টি অফসেট প্রিন্টারের সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট। আর প্যাকেটিং এ ৩০ মিনিট। সময় ৯টা। প্রশ্নপত্র প্রস্তুত। বাকি ৩০ মিনিট সময় অতিরিক্ত রাখা হলো।

এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট লোকের সংখ্যা অনেক কমে যাচ্ছে কারণ প্রশ্নের সেট সংরক্ষণ হবে স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রীর কাছে। আর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা। আর দুর্ঘটনাবসত যদি ফাঁস হয় (যদিও সম্ভাবনা মাত্র ১০%) তাহলেও এক ঘণ্টায় খুব একটা প্রস্তুতি নিতে পারবে না কোনো শিক্ষার্থী। এ পদ্ধতিতে সব মিলে খরচ হবে সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা। যা বর্তমানের খরচের তুলনায় নগন্য। আশা করি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে সুনজর দেবেন।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×