somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুনিয়াজুড়ে অস্ত্র ব্যবসা

০৩ রা অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুনিয়াজুড়ে অস্ত্র ব্যবসার
দুই-তৃতীয়াংশই মার্কিন দখলে

গোটা বিশ্বের অস্ত্র ব্যবসার দুই-তৃতীয়াংশই এখনও মার্কিনীদের দখলে। ২০০৮সালে ৫হাজার ৫২০কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রি হয়েছিলো বিশ্বজুড়ে। এর মধ্যে আমেরিকা ৩হাজার ৭৮০কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্রসামগ্রী অন্যান্য দেশকে বিক্রি করেছে। সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও অস্ত্র ব্যবসায় আমেরিকা তার নিজস্ব বাজারকে ধরে রাখতে পারেছে। এমনকি গতবছরের তুলনায় বেশ কিছুটা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। এই সময়কালে বেশ কিছু দেশ আমেরিকার কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে যারা এতদিন ধরে রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনতো। সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে একথা লেখা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, গত বছর আরব আমিরশাহী সাড়ে ৬০০কোটি ডলার মূল্যের আকাশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিনেছে আমেরিকার কাছ থেকে। মরক্কো কিনেছে ২১০কোটি ডলারের জেট ফাইটার। যুদ্ধের জন্য ব্যবহৃত হেলিকপ্টার কিনবার জন্য তাইওয়ান অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তি করেছে আমেরিকার সঙ্গে। এছাড়াও ঐ সময়কালে আমেরিকার কাছ থেকে বিশাল পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র এবং যুদ্ধের সাজসরঞ্জাম কেনার জন্য চুক্তি করেছে ভারত, ইরাক, সৌদি আরব, মিশর, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ব্রাজিল।
এদিকে, আমেরিকার পর গোটা বিশ্বে ইতালি ২০০৮সালে সবচয়ে বেশি অস্ত্র ব্যবসা করেছে। তাদের অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ ৩০০কোটি ৭০লক্ষ ডলার। এরপরেই রয়েছে রাশিয়া। এই সময়কালে অস্ত্র ব্যবসায় বেশকিছুটা পিছিয়ে পড়েছে রাশিয়া। আর্থিক মন্দার কারণে ঐ সময়কালে গোটা বিশ্বে অস্ত্র ব্যবসা বেশ কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায়। এই পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, ২০০৭সালের তুলনায় অস্ত্র ব্যবসা ৭.৬শতাংশ কমেছে ঐবছরে। মন্দার জন্য বেসামাল আর্থিক পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে বিভিন্ন দেশ অস্ত্র কেনার জন্য অনেক কম অর্থ বরাদ্দ করায় ধাক্কা খেয়েছে অস্ত্র ব্যবসা।
তবে, উল্লেখযোগ্যভাবে অস্ত্র কেনার হার বেড়েছে উন্নয়নশীল দুনিয়ার দেশগুলিতে। ২০০৮সালে এই দেশগুলি প্রায় ৪হাজার ২২০কোটি ডলারের অস্ত্রশস্ত্র এবং যুদ্ধসামগ্রী কিনেছে। যার বেশির ভাগটাই কিনেছে আমেরিকার কাছ থেকে। প্রায় ৭০.১শতাংশ অস্ত্র কিনেছে এই সমস্ত দেশগুলি। প্রসঙ্গত, ২০০৭সালে এই সমস্ত দেশগুলি কিনেছিলো ৪হাজার ১১০কোটি ডলারের অস্ত্রসামগ্রী। এই সময়কালে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে আরব আমীরশাহী সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কিনেছে। তারা প্রায় ৯০৭কোটি টাকার অস্ত্র কেনার জন্য ঐবছর চুক্তি করেছে আমেরিকার সঙ্গে। এরপরেই রয়েছে সৌদি আরব, তারাও প্রায় ৮৭০কোটি টাকার অস্ত্রশস্ত্র কিনেছে। পাশাপাশি মরক্কো কিনেছে ৫৪০কোটি ডলারের যুদ্ধসামগ্রী।
প্রসঙ্গত, সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপর্যয়ের পর থেকেই বিশ্বের অস্ত্র বাজারে মার্কিন প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়। ১৯৯৪থেকে ১৯৯৬সাল পর্যন্ত আমেরিকা প্রায় ৬৭০০কোটি ডলারের অস্ত্র রপ্তানি করে। গোটা বিশ্বের অস্ত্র ব্যবসার মোট ৫৫শতাংশ আমেরিকা দখল করে নেয়। পরবর্তীকালে ৯/১১-র ঘটনা আমেরিকাকে অস্ত্র বিক্রির বৃদ্ধির সুযোগ করে দেয়। সন্ত্রাসবাদ দমনের অজুহাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে আরও বেশি পরিমাণে অস্ত্র কিনতে প্রলুব্ধ করে মার্কিন অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা বৃদ্ধি উন্নয়নশীল দেশগুলিকে আরো অস্ত্র কিনতে বাধ্য করে। ফলশ্রুতিতে ২০০২ ও ২০০৩সালে গোটা বিশ্বের সামরিক ব্যয় প্রায় ১৮শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ৯/১১-র সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছরই অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ বাড়িয়েছে। ২০০৬সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২১০০কোটি ডলারে। ঐবছর মার্কিন কংগ্রেসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০৬সালে আমেরিকা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ১০৩০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে। যা গোটা বিশ্বের একবছরে অস্ত্র লেনদেনের ৩৫শতাংশ।
সম্প্রতি স্টকহোমের বিশ্ব শান্তি গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তথাকথিত ঠান্ডা যুদ্ধের পর বিশ্বে সামরিক ব্যয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৬সালে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ কোটি ৪০ লক্ষ ডলারে। এই সময়কালে গোটা বিশ্বে সামরিক ব্যয়ের পরিমাণ ৩৭শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঐবছরে যে পরিমাণ অর্থ সামরিক খাতে গোটা দুনিয়ায় ব্যয় হয়েছিল, তার প্রায় অর্ধেকই অর্থাৎ ৫২হাজার ৮০০কোটি ডলার খরচ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারপরই রয়েছে যথাক্রমে ব্রিটেন এবং ফ্রান্স।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×