somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেনীমাধব আর মাধবীলতা উপাখ্যান

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেনীমাধব ২১ শে ডিসেম্বর ট্রেনের দরজায় দাঁড়ানো মাধবীলতাকে ফোন নং সহ চিরকুট দিয়ে বলেছিলো , আমি তোমাকে চাই ।
মাধবীলতা মৃদু হেসে কেউ না দেখে এইভাবে আলোগোছে চিরকুট নিলে ।
মাধবীলতা বেনীমাধবকে ঠিকই দু'দিন পরেই জিজ্ঞাসা করেছিলো , কেনো সে তাকে চায় ?
বেনীমাধব বলেছিল , সেটা খুঁজতেই আমাদের দু'জনকেই দুজনের চাইতে হবে ।
এরপর আকাশে অনেক রঙ্গিন রংধনু ডানা মেলে ধরলো , শরতের আকাশে খালি সাদা আর সাদা মেঘের ভেলা ,বাতাসে চৈতালী শিষের মাঝে , বানীমাধব একদিন মাধবীলতার হয়ে গেলো ।
মাধবীলতা অকারণেই মাঝে মাঝে মনের রঙের কৌটা খুলে বেনীমাধবকে মাখিয়ে দিতো, মনে মনে বলতো বেনীমাধব সেই বাগানের মালী, যেখানে ১২ মাস ই ফুটে রক্ত জবা আর বাগানের পুকুরে ফোটে বড় বড় জলপদ্ম। বেনীমাধবও মুখে কিছু বলতো না , কিন্ত দিস্তা দিস্তা রুলটানা খাতা কিনে অজস্র পত্রের মাধ্যমে লিখে যেতো , সে কেন মাধবীলতাকে চায় ।কিন্ত,
সব চিঠি ডাকপিয়নের কাছে যায় না , আর যা যায় , তার সব কিছুই ঠিক ঠিকানায় বিলি হয় না ।আর ঠিক ঠিকানায় বিলি হলেও, সঠিক মানুষের চিঠিটা পৌছে না । আর সঠিক মানুষ চিঠিটি পেলেও , চিঠির অক্ষরে লেখা ভালোবাসার বিনুনি গুলোর ভাজ, মাধবীলতা বুঝে উঠতে পারতোনা ।
আবার , মাধবীলতা ঠিকই জানতো বেনীমাধবের গড়াপেটার রসায়ন । মাধবীলতা জানতো বেনীমাধবের সরল অঙ্কায়ন । বেনীমাধব তাই পর্বতের নৈবদ্যে হাটু গেড়ে উদযাপন করতো দিন শেষের দীপাবলীর উতসব ।
বেনীমাধব আর মাধবীলতার কাহিনী টা এভাবে শেষ হতে পারতো , কিন্ত হয়নি ।
তারা নিয়ম করে এক সময় হয়ে গেলো পুস্তকের আর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ।
জগতে নিয়ম করে সমুদ্রের ঢেউ হয় , বর্ষাকালে মৌসুমী বায়ু বয় , মাঘের শেষে গাঁ কাঁপানো হীম আসে , কিন্তু তারা দু'জন দু'জনকে চাইতে চাইতে, বিপরীত দিকে হেটে এতো দূর চলে গেল , এতো দূরে সরে গেলো ----- তারা দু'জন আর দু'জনের হলো না , তাতে অবশ্য এই পৃথিবীর কিছুই বয়ে গেলো না ।
সেই ট্রেন আজো থামে কমলাপুরের প্ল্যাটফর্মে , সে ২১ শে ডিসেম্বর ঘুরে ঘুরে বছরের সবচেয়ে ছোট দিন হিসাবে আসে , আর এসে এসে বেনীমাধব আর মাধবীলতার চাওয়া পাওয়াকে আরো ছোট করে দিয়ে চলে যায় ।
এ বিশাল পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ রেলপথে , বেনীমাধব আর মাধবীলতার ট্রেন সমান্তরাল ভাবে বিপরীত দিকে বয়ে যায় ।

The fountains mingle with the river,
And the rivers with the ocean;
The winds of heaven mix forever
With a sweet emotion;
Nothing in the world is single;
All things by a law divine
In another’s being mingle–
Why not I with thine?

See, the mountains kiss high heaven,
And the waves clasp one another;
No sister flower could be forgiven
If it disdained its brother;
And the sunlight clasps the earth,
And the moonbeams kiss the sea;–
What are all these kissings worth,
If thou kiss not me? ----Love’s Philosophy (Percy Bysshe Shelley)

অনুবাদ :

নিঝর মিশেছে তটিনীর সাথে
তটিনী মিশেছে সাগর-’পরে ,
পবনের সাথে মিশিছে পবন
চির-সুমধুর প্রণয়-ভরে!
জগতে কেহই নাইকো একেলা ,
সকলি বিধির নিয়ম-গুণে ,
একের সহিত মিশিছে অপরে
আমি বা কেন না তোমার সনে ?
দেখো , গিরি ওই চুমিছে আকাশে ,
ঢেউ- ‘ পরে ঢেউ পড়িছে ঢলি ,
সে কুলবালারে কে বা না দোষিবে ,
ভাইটিরে যদি যায় সে ভুলি!
রবি-কর দেখো চুমিছে ধরণী ,
শশি-কর চুমে সাগর জল ,
তুমি যদি মোরে না চুম ‘, ললনা ,
এ-সব চুম্বনে কী তবে ফল ?--- প্রেমতত্ত্ব (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
২১টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×