somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ল্যাম্পপোস্ট- ২য় অংশ

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ল্যাম্পপোস্ট- প্রথম অংশ

দ্রুতই খাওয়া শেষ। পাঁচটা কুকুর আস্তে আস্তে সরে গেল ল্যাম্পপোস্টটির কাছ থেকে। একটু আড়ালে যেয়ে আবার আগের মতই আয়েসে শুয়ে পড়ল। এবার একটু বেশিই আয়েশী মনে হলো, পেট ভরা বলে কথা। নিভে যাওয়া ল্যাম্পপোস্টের নিচে তখনও অন্য কুকুরটি ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। হয়তো ভাবছে খাওয়া শেষ, কোন কথা-বার্তা নেই, যেমন একমনে খেল, তেমন একমনেই চলে গেল অন্য কুকুরগুলি! হয়তো এমন সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই একা কুকুরটি হঠাত হাঁটতে শুরু করল। প্রতিটা পদক্ষেপ ওর মাপা মাপা, ঠিক ছন্দে ছন্দে এগিয়ে চলতে লাগল সে। একটা একটা করে ল্যাম্পপোস্ট পাড় হয়ে সরে যাচ্ছে সে। পেছনে নিভে যাওয়া ল্যাম্পপোস্টা স্থির। অন্ধকার জায়গাটায় কেমন যেন একটা ভৌতিক আবহের সৃষ্টি করেছে।



(২)
শহরে শীত ভালোই পড়েছে। সেলসিয়াস স্কেলে ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি তাপমাত্রা। ভালোই ঠান্ডা। সকাল সকাল মনে হয় যেন তাপমাত্রা শূণ্যের কোঠায় পৌঁছায়। নরম বিছানার গরম ছেড়ে কারোও উঠতে মনে চায় না।

সকাল ৬ টার মত। জানালায় পর্দা নেই। কাঁচের ওপাশে ঘন কুয়াশার আস্তরণ। ছেলেটি চোখ খুলে বাইরে তাকালো। কুয়াশার চাদরে চোখ পড়তেই ছেলেটির মনে হলো, আরেকটু ঘুমিয়ে নেই। এমন শীতের সকালে বিছানার বাইরে শরীর বের করাটা বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। কম্বলে মাথাটা জড়িয়ে আরেকটু ঘুমিয়ে নেয়াই শ্রেয়। তার ওপর আগের রাতে বাসায় ফিরতে দেরি করেছে। বাসা বলতে ছাদের ওপর এক রুমের একটা ঘর। আর কেউ নেই। তাই এর বেশি লাগেও না। ছেলেটির চোখ জড়িয়ে আসতে না আসতেই ঘড়িতে অ্যালার্ম বেজে উঠল। ৭ টা বেযে গিয়েছে। এই মোবাইলের যুগে আজও কেউ অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করে! হ্যা এই ছেলেটি করে।

অনিচ্ছা সত্বেও উঠতে হয়। কাজ আছে, কাজ না করলে টাকা আসবে না, আর টাকা না আসলে খাবে কি? আর ওর বন্ধুগুলোও ওর অপেক্ষায় থাকবে।
৮ টার দিকে ঘরে তালা দিয়ে বের হয় ছেলেটি। ৯ টার মধ্যে ওর কাজ শুরু করতে হবে। শহরের ব্যস্ততম এক শপিং মলের এক পোশাকের শো-রুমে সেলস পার্সন হিসেবে ওর কাজ চলবে রাত সেই প্রায় ৯ টা পর্যন্ত। সারাদিন অনেক লোক দেখে ও। শো-রুমে কেনার লোকের চেয়ে ঘোরাঘুরি করতেই যেন বেশি লোক আসে। মেজাজ খারাপ হয়, তবু হাসিমুখে সবাইকে স্যার-ম্যাডাম সম্বোধন করতে হয়।প্রতিদিন ছেলেটি একই রুটিনে চলে। কাজ শেষে বাসায় যাবে। বাসা বলতে ওর একরুমের সেই বাসা। কি শীত, কি বর্ষা- ওর কাজ একভাবে চলবে। বাসায় যেয়ে ওর কিছু নিজের কাজ করতে হবে। নইলে কিছুতেই হবে না। ওর অপেক্ষায় থাকবে কয়েকজন। তাদের সাথে দেখা করতে যেতে হবে। কিছু না নিয়ে গেলে কারো দেখাই যে পাবে না।

রাত ১০ টা বেজে যায়- বাসায় ফিরতে ফিরতে। এসেই কিছু খাবার প্যাকেট করতে হয়। কিছু খাবার একটা প্যাকেট, এর বেশি যে ছেলেটি পারে না। বেতন অল্প। ঘর ভাড়া, সারাদিনের খাওয়ায় চলে যায় সব। তবু প্রতিরাতে এক প্যাকেট খাবার নিয়ে বের হতে হবে ছেলেটিকে। কি শীত, কি বর্ষা! ছেলেটি বের হবেই।


[চলবে]
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:১৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×