somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিনপঞ্জি: ১ বৈশাখ, ১৪২৫

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সারারাত ঘুমাইনি। একটা কোরিয়ান মুভি- Along with the Gods: The Two Worlds, দেখতে দেখতে রাত পার হয়ে ভোর হয়ে এল। ফযরের আযান দিয়ে দিল। মুভি অর্ধেক হতে হতে বাহিরে আলো ফুটে ফর্সা হয়ে এল বলে কম্পিউটার অফ করে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুমের রাজ্যে চলে যাই।

ভোরে ঘুমানোর কারণে সকালে একটু বেলা করে উঠলাম। সারাদিন একেবারেই কোন প্ল্যান ছিলো না। সকালে বাসায় পান্তা-ইলিশও ছিল না। এমনিতে এদিন বাসায় পোলাও-মাংস রান্না হয়। কিন্তু আজকে তা-ও না। প্রতিদিনের মত দু'টো ডিম ও সব্জি দিয়ে দু'টো আটার রুটি খেয়ে নিলাম। ফ্রেশ হয়ে কোরিয়ান মুভির বাকি অংশ দেখে ফেললাম। মুভির কাহিনী অনেকটা এরকম এক ফায়ার ফাইটার এক শিশুকে আগুনের হাত থেকে বাঁচানোর সময় দুর্ঘটনায় মারা যায়। এসময় দু'জন গার্ডিয়ান এঞ্জেল আসে তার কাছে। তাকে মৃত্যুর পরবর্তী ৭ টা ধাপ পাড় করে স্বর্গে যেতে সাহায্য করবে। ফায়ার ফাইটারটি একজন একজন আদর্শ মানব। তাকে পাড় করাতে কোন সমস্যাই হওয়ার কথা না। কিন্তু দেখা যায় ধাপে ধাপে নানান সমস্যায় পড়ে তার স্বর্গে যাওয়া হুমকির সম্মুক্ষীন। তার বোবা মা ও একমাত্র ছোটভাই গল্পের ক্লাইমেক্সে ঢুকে যায়। মুভিটি ভালো ছিল। কিছুটা হালকা মজা দিয়ে শুরু হলেও গল্প যত ভেতরে এগিয়েছে অনেক বেশি ইমোশনাল হয়ে পড়েছে। চোখ ছলছল করা কাহিণী। অদ্ভুৎ চমৎকার এক কাহিনী।



দুপুর গড়িয়ে এল। সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে বের হবার কথা। হাতে অনেক সময়। ভাবলাম আরেকটা মুভি দেখে ফেলি। এবার একটা পুরনো ইংরেজি মুভি- The Man with One Red Shoe (1985)। কমেডি-থ্রিলার মুভি। আমার প্রিয় ঘরানার। সি আই এ-র ডিরেক্টরের সাথে আরেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার দ্বন্দ্ব নিয়ে কাহিনি এগিয়েছ। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ধোঁকা দিয়ে স্বীয় স্বার্থ হাসিল করতে মেতে ওঠে। এদের দ্বন্দে এক নির্দোষ ব্যক্তিকে ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। যে কিনা দৈবচয়নে নির্বাচিত হয়, শুধুমাত্র এক পায়ে একটা লাল জুতো আরেক পায়ে কালো জুতো পড়বার কারণে। ২ দিন তথা ৪৮ ঘন্টা সময় তার উপর গোয়েন্দা নজর রাখে, তাকে স্পাই ভেবে, কিন্তু সে শুধুমাত্র একজন পিয়ানো বাদক।

কাজ-কর্ম নেই। হালকা মন নিয়ে দেখতে বসলাম। কিন্তু বিধি বাম। বৈশাখের প্রথম দিনের ঝড় ঝড় আবহাওয়া। আর বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন যেন সুইচে হাত দিয়েই বসে থাকে। যখনই গাছের পাতা একটু নড়ে, কিংবা আকাশের কোণায় একটু মেঘ দেখা যায়, অমনি বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ করে ঘুম দেয়। সারা বিকাল থেমে থেমে বৃষ্টি। ঝড়ও হলো। মাঝে একটু শিলা বৃষ্টিও হলো। মুষলধারে বৃষ্টিও দেখলাম। এমন ঠান্ডা আবহাওয়ায় কি আর করা। বিদ্যুতের অভাবে আমার ডেস্কটপ চলে না। একটু ঘুমিয়েই নিলাম। ঘুমের মধ্যে আম্মু এসে ডেকে তুললো। এসে এক মগ কফি ধরিয়ে দিয়ে গেল। এমন চমৎকার ঠান্ডা আবহাওয়ায় কফি চমৎকার এক অনুষঙ্গ। কফি খেয়ে মোবাইলে ফেসবুকে লোকজনের বৈশাখী ছবি দেখে বিকালটা কাটাতে লাগলাম।



সদ্য চাকুরি পাওয়া এক বন্ধুর চাকুরির ট্রিট দেবার কথা ছিল আজকে সন্ধ্যায়। কিন্তু এমন বাদলা দিনে অতি গুরুত্বপূর্ন কাজ না থাকলে, কে-ই বা বের হতে চায়? তাই আজকে আর বাসা থেকেই বের হওয়া হলো না। বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোবাইলে ফেসবুকের রঙীন দুনিয়ায় ঘুরতে লাগলাম। আর বছরের প্রথম দিনে লোড শেডিংয়ের তীব্রতা খেয়াল করলাম।

ওদিকে যতক্ষণ জোড়ে হাওয়া বইছে, ততক্ষণ আর বিদ্যুৎ এল না। ২/১ আসে-যায় করে রাত ৯ টার পর বিদ্যুৎ সঞ্চালন স্বাভাবিক হলে আমি মুভির শেষাংশ দেখতে বসলাম। তাকে ফাঁসাবার কাহিনী নিয়ে গল্প এগিয়েছে। গল্পে পরকীয়া ছিল, প্রেম ছিল, ফান ছিল, ষড়যন্ত্র ছিল। নিছক মজার এক গোয়েন্দা থ্রিলার গল্প। এমন গল্পের মুভি আমার বরাবরই ভালো লাগে।

দিনশেষ হয়ে এল। এই রাত গভীরে আরো একটা মুভি দেখতে বসে গেলাম। মুভির নাম- The Last Godfather (2010)। এটাও কোরিয়ান মুভি। মাত্র দেখা শুরু করেছিলাম। তাই কাহিনি সংক্ষেপের ধারেকাছেও যেতে পারছি না। কমেডি মুভি। তারমানে হালকার ওপর দিয়ে আমার মনে আনন্দ দেবে বলে মনে হচ্ছে।



আমি অন্য অনেকের মত উৎসব হলেই ঘর থেকে বের হবার পাব্লিক নই। তবে আমি ঘুরতে ভালোবাসি। কোন জনসমাগম নয়, কিছুটা প্রকৃতির কাছাকাছি, নির্জনতা আমার প্রিয়। আর প্রচুর সিনেমা দেখতে পছন্দ করি। হাতে সময় থাকলেই বসে যাই-ঘন্টার পর ঘন্টা দেখতে থাকি। বাংলা সিনেমার মান ভালো না হওয়ায়, ভিনদেশি সিনেমাই বেশি দেখা হয়।

আর কথা না বাড়াই আর। বৈশাখের প্রথম দিন চলে যাচ্ছে। সারাদিন ঘোরাঘুরি করে আপনারা অনেকেই ক্লান্ত। তার ওপর অমন বৃষ্টির
অনেকেই ঘুমে কাতর। নতুন বছরে সবার জন্য শুভকামনা রইলো। শুভরাত্রি

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ২:০২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×