somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘের দেশে পাহাড়ের দেশে (দার্জিলিং) - যেতে চান?

১১ ই এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব - ৬
Click This Link

দেশের বাইরে দেশ দেখার শখ অনেকেরই। কেউ অন্য দেশ বলে ইতস্তত করেন আবার কেউ খরচের ভয় পান। কেউবা ইনফোর অভাবে যেতে পারেন না। তাদের জন্য এখানে কিছু তথ্য দেয়ার চেষ্টা করছি। আগে বলুন আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ আরও ৬ মাস আছে তো?

প্রথমে ভিসার কথা বলে নেই। ভারতীয় ভিসা পাওয়াটা সহজ হলেও নেয়াটা একটু ঝামেলার। আগে আগেরদিন সকাল ১০টা থেকেই লাইন শুরু হয়ে যেত। এখন ই-টোকেন নেয়া লাগে। সাধারনত ই-টোকেনের জন্য এপ্লাই করলে ৮/১০ দিন পর সিরিয়াল পাওয়া যায়। আর যেদিন আপনি এপ্লাই করবেন (Click This Link) সেদিন থেকে ১ মাসের জন্য ভিসা পাবেন। তাই এমন সময় এপ্লাই করবেন যেন কিছুতেই ভারত যেতে ১ মাস ক্রস না করে। আপনার সাথে যদি আপনার স্পাউস থাকে তবে ই-টোকেনের নির্ধারিত দিনে ভিসাপ্রতি ৩০০ টাকা সার্ভিস চার্জসহ সকালবেলাই তাকে ফিমেলদের লাইনে দাড় করিয়ে দিন। কারন ফিমেলদের লাইনটা একটু ছোট থাকে আর সিরিয়াল শুরুও হয় আগে। আবেদনপত্র নিজেই পুরন করুন। আর সকল প্রকার আইডি কার্ডের কপি (না চাইলেও) জমা দিন। অফিস থেকে অবশ্যই NOC নিয়ে জমা দিবেন। আর ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ইউটিলিটির কপি, টিকেটের কপি সবই জমা দিয়ে দিন। ভারতীয় ২জন ব্যাক্তির রেফারেন্স দরকার হয়। সেখানে হোটেলের নাম লিখে দিতে পারেন।

ঢাকা থেকে দার্জিলিং যেতে হলে বুড়িমারী বর্ডার দিয়েই সবচেয়ে কাছে হয়। ঢাকা থেকে অনেক বাসই বুড়িমারী বর্ডার পর্যন্ত যায়। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র শ্যামলী বাস শিলিগুড়ি পর্যন্ত যায়। তাই বাসের টিকেট যত আগে সম্ভব করে নিন। শ্যামলী বাস মতিঝিল থেকে ছেড়ে কল্যানপুর হয়ে যায়। ফোন নং ৮৩৬০২৪১, ০১৭১৬-৯৪২১৫৪, ০৪৪-৭৪৭০০১১৯। ভাড়া শিলিগুড়ি পর্যন্ত ১০০০/- টাকা। বর্ডারের ট্রাভেল ট্যাক্স ৩১০/- টাকা। বর্ডারের সব ফরমালিটি বাসের লোকজন ফ্রি করে দিবে। এমনকি আপনার লাগেজ ওপারের কানেক্টিং বাসে তারাই তুলে দিবে। এছাড়া রেস্ট নেয়ার জন্য আছে বাস কাউন্টারের খুবই ভাল ব্যবস্থা। বুড়িমারী বর্ডারে বিডিআরের জওয়ানদের কড়া চেকিং এ ঘাবড়ে যাবেন না। আবার নিজেকে স্মাগলারের সাথে তুলনা করে মনও খারাপ করবেন না। আপনার সাথের মোবাইল আর ক্যামেরা এখানে এনডোর্স করে নিন। তবে বিএসএফের ব্যবহারে আশা করি আপনি ভাল ফিল করবেন। ভিসা নেওয়ার সময় ভারতে অবস্থানের যে এড্রেস দিবেন তা মনে রাখবেন। ট্যুরিষ্টদের জন্য 'এনি হোটেল' লিখে দিতে পারেন। বর্ডারের ঐপারেও টাকা রুপি করতে পারবেন। ভারতের ভিতরের চেয়ে একটু বেশী রেটে। তবে বড় বড় নোটে সিল মেরে নিন। এতে টাকা জাল হলে ঐ দোকানদার আবার ফেরত নিবে।

শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ী পথে দার্জিলিং যেতে জীপ (টাটা সুমো ) লাগবে। জনপ্রতি প্রায় ১০০/- টাকা ভাড়া। এক্ষেত্রে আপনার গ্রুপ থাকলে বা বাসের সহযাত্রীদের সাথে গ্রুপ করলে খরচও কমবে আবার জার্নীও কমফোর্ট হবে। গ্রুপ করতে হেজিটেট করবেন না। কারন বাসে আপনার সহযাত্রীরা আপনার জন্যই অপেক্ষা করছেন। সর্বোচ্চ ৮ জনের গ্রুপ করতে পারেন। জীপ গাড়ী শিলিগুড়ি কাউন্টারেই পেয়ে যাবেন। শিলিগুড়ি নেমে বাস থেকে লাগেজ নেয়ার আগে রিটার্ন টিকেট কনফার্ম করে নিন। আবারও বলছি গ্রুপ ছাড়া দার্জিলিং ঘুরে আনন্দ পাবেন না।

শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে টুম পেরিয়ে কুরসেং-এ যাত্রা বিরতি করে নিন। মোমো আর পাহাড়ের পানি খেয়ে ফ্রেশ হতে পারেন। পানি ঠান্ডাটা খাওয়াই ভাল। দার্জিলিং পৌছে কোন হোটেলে থাকবেন তা দেশ থেকে ঠিক করার দরকার নেই। তবে দেশ থেকে হোটেলের কিছু নাম জেনে নিতে পারেন। গুগলে সার্চ দিয়েই আপনি অসংখ্য হোটেলের নাম পাবেন। তবে বুকিং দেয়ার দরকার নেই। কারন ইন্টারনেটে হোটেলের ছবির সাথে বাস্তবের মিল নাও থাকতে পারে। হোটেলে খুব একটা রাশ থাকে না। গান্ধী রোডেই আপনার পছন্দের হোটেল পেয়ে যাবেন। ভাড়া ৫০০-৭০০ রুপি। তবে একবার চৌরাস্তা পেরিয়ে বিবি স্মরনীর 'সেইলাঙ্গ হোটেল' দেখে নিতে পারেন। ফোন নং ৯৮৩২০৪১১৩০, ইমেইল: [email protected].

খাবার বা খাবার খরচ নিয়েও খুব একটা টেনশন করবেন না। ৪০-৭০ রুপি দিয়ে সবজী, মুরগী বা খাসী দিয়ে সেরে নিতে পারবেন। প্রথম দিনই টাইগার হিল না গেলেই ভাল। ভাল একজন টাটা সুমো জীপের ড্রাইভার ঠিক করে নিন যে গাইডের মত সব জায়গা ঘুরিয়ে দেখাবে।

শপিং যা করবেন মহাকাল মার্কেটের কলাকেন্দ্র (শাল) আর বিগ বাজার থেকেই করুন। দার্জিলিং বা শিলিগুড়ি দুই জায়গাতেই বিগ বাজার আছে। ফেরার পথে বিএসএফ চেকিং এ কিছুটা ঝামেলা করতে পারে। তাই আপনার শপিং প‌্যাকেট খুলে ব্যাগের নিচের দিকে রাখুন। দার্জিলিং ২/৩ দিন থেকে একটু কষ্ট করে কলিমপং চলে যান। নয়ত ট্যুর অর্ধেক বাকিই থেকে যাবে। আর তা সম্ভব না হলে মিরিক হয়ে শিলিগুড়ি ফিরুন।

২ জন দার্জিলিং, কলিমপং/মিরিক ঘুরে আসতে প্রায় ১৫,০০০/- টাকা লাগে। আপনি এর চেয়ে কমেও করতে পারেন। তো সাহস করে তৈরী হয়ে নিন প্রায় ২৪ ঘন্টার এক আনন্দময় জার্নীর জন্য। জানুয়ারী-মার্চ খুব শীত থাকে। আপনি মার্চের শেষে বা পরে যেতে পারেন। যখনই যাবেন শীতের কাপড় নিয়ে নিবেন। সাথে কানটুপি, মাফলার এবং হাত মোজা নিয়ে নিবেন। যাওয়ার আগে আরও কিছু জানতে ক্লিক করুন [email protected]। আপনার জন্য অগ্রিম শুভকামনা।

*নিয়মিত আপডেট করা হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১০ সকাল ১০:২৯
২৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×