তেমন ভাল কোন রাঁধুনী না আমি, তবে অনেকেই দেখি বলেন রেসিপি পোষ্ট নাই কেন? বা রেসিপি পোষ্ট দিতে বলেন। সবার এত কথায় গুনে দেখলাম বিগত ছয়টা পোষ্ট রান্নাবান্না ছাড়া। তাই একটা পোষ্ট আসলেই দেয়া দরকার। যাগগে আজকে সিরিয়াসলি কিছু নিয়ে না। ভাল লাগলে আমার স্বার্থকতা আর না লাগলে আপনাদের ব্যার্থতা।
শুরু করে দিই বিসমিল্লাহ্ বলে রান্নাবাটি, কি বলেন ?
আধাপট চাল নিন(ড্যানিস দুধের পট)। কারো আধা পট চালের ভাত লাগে কারো আবার কম বেশী লাগতে পারে, যার যার প্রয়োজন মত নিবেন। হাড়িপাতিলের র্যাকে দেখুন সব চেয়ে ছোট পাতিল কোনটা। চায়ের পাতিলটাই সবচেয়ে ছোট? হা তাহলে ওটাই নিন। এবার চালটা ধুয়ে পাতিল মোটামুটি ভর্তি করে পানি দিন। এবার আলুর ঝুড়ি থেকে মাইক্রোমিনি সাইজের দুটি আলু নিন(সব চেয়ে ছোট আরকি) আলু দুটো ছিলে পাতলা করে কেটে ধুয়ে চালের মধ্যে দিয়ে দিন। এবার পাতিল চুলায় দিয়ে চুলা জালিয়ে দিন। মাঝে মাঝে চাল নেড়ে দিন। চালের পানি ফুটে গেলে আঁচ কমিয়ে দিন। মাঝে মাঝে চামচে চাল তুলে দেখুন হয়ে কিনা। যদি দেখেন চালের এ মাথা থেকে ও মাথা লম্বালম্বি ফেটে গিয়েছে তবে বুঝবেন চাল ডাইভার্ট হয়ে ভাতে পৌছেছে। কিছুক্ষন চুয়াল রেখে চাল আংগুল দইয়ে চাপ দিলে যদি একদম মিশে ভেতবে কোন দানা না থাকে তবে ভাতের মাড় ফেলে নিন। হয়ে গেলো বয়েল্ড রাইস। এরপর একটা প্লেটে ভাতটা ঢেলে নিন। এই হলো আমারটা
এবার ভাত থেকে আলুগুলো বেছে আলাদা একটা প্লেটে নিন। একটা ছোট সাইজের পেঁয়াজ, কয়েকটা কাঁচামরিচ কেটে একটু লবন আর দুচামচ পরিমান সরিষার তেল দিয়ে চটকে ওতে আলু দিয়ে ভাল করে মেখে নিন। হয়ে গেল ম্যাস্ড পটেটো।
এই হলো আামরটা
ও কি কারো কারো মুখ কালো কেনো! বাসায় সরষের তেল নেই এজন্যে? নো টেনশন আচারের তেল আছেনা।....ও তাও নেই । আচ্ছা তাহলেও টেনশন নেই। একটু সয়াবিন তেলে পেঁয়াজ-মরিচ ভেজে ওতে আলু চটকে নিন। খুব একটা মজা না হলেও চলবে। তবে চুপি চুপি বলছি ঘি থাকলে আর তেল-টেলের ধারে কাছেও যাবেন না।
এবার মজা না হলেও মজা করে খান বয়েল্ড রাইস উইথ ম্যাস্ড পটেটো। সাথে যদি থাকে পাতলা ডাল....উলসসস...সেইরাম রে ভাই....
বউয়ের সাথে শালী, টিভির সাথে রিমোট ফ্রী, এটার সাথে সেটা ফ্রী...ফ্রী আর ফ্রী। এত ফ্রী র ভীড়ে আমিও একটা রেসিপির সাথে আরেকটা ফ্রি দেই কি বলেন।
আসুন তাহলে শুরু করি।
বাসী খাবার নতুন করে
সাধারনত দেখা যায় খিচুরী রান্না করলে খাওয়ার পর কিছুটা থেকেই যায়। ওটা হয় পরের বেলা খাওয়া নয়, নয়ত বেশীর ভাগ সময় ফ্রীজে তোলা হয় পরে কোন সময় খাওয়ার জন্যে। ত সেরকম একটু খিচুরী-ই যদি থাকে ফ্রীজে তবে লেগে যান কাজে। এবারও লাগবে চায়ের পাতিলটা ।
এক কাপ পরিমান খিচুরী এবং তিন কাপ পরিমান পানি দিয়ে চুলায় বসিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। এবারও মাইক্রোমিনি সাইজের একটা আলু পাতলা করে কেটে দিতে পারেন। একচিমটি হলুদ দিন। পানি ফুটে উঠলে জ্বাল কমিয়ে মাঝে মাঝে নেড়ে দিন। ১০-১৫ মিনিট জ্বাল হলে ডাল ঘুটনী দিয়ে একটু ঘুটে দিন। মিশ্রনটা হালিমের মতন ঘন হয়ে এলে সব ঠিক ঠাক আছে কিনা একটু বাটিতে নিয়ে চেখে দেখুন। হ্যা দেখেছেন....কি ঠিক আছে? ঠিক থাকবে কি করে লবনই ত দেইনি। হ্যা এবার লবন দিয়ে আবার চেখে দেখুন। হ্যা সব ঠিক ঠাক? তাহলে একটা বাটিতে ঢেলে একটু লেবু চিপে মজা করে খেতে থাকুন।
চাইলে একটু সর্ষের তেলে রসুন-কালোজিরা দিয়ে ফোড়ন দিতে পারেন। খারাপ লাগবে না আশা করি।
দেখলেন ত কিভাবে হয়ে গেলো পুরনো খাবার থেকে হয়ে গেলো নতুন একটি খাবার!
এবার বোনাস রেসিপি
একটা ডিম একটু লবন, ছোট্ট দুটি পেঁয়াজকুচি, কয়েকটা মরিচ কুচি, লবন ও একটু বেকিং পাউডার দিয়ে ফেটে নিন। এবার চায়ের কাপের এক কাপ সুজি আস্তে আস্তে ডিমের মিশ্রনে মিশিয়ে নিন। ভাল করে মেশানো হয়ে গেলে গোল গোল করে নিয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিন লাল করে। এবার সস দিয়ে বা যার যেভাবে মন চায় খেয়ে নিন।
চাইলে গোলাটার সাথে পুদিনা পাতা বা ধনে পাতা মেশাতে পারেন।
বিকেলে অলস বসে আছেন, মুখটা ছুচামুচা করছে.....কি করি আজ ভেবে না পাই...এইরকম মুডে আছেন? হ্যা তাহলে আপনার জন্যেই এই রেসিপিটা।
আজকের জন্যে বহুত হয়েছে। এবার ক্ষান্ত দেই। ভাল থাকবেন সবাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১১:২৫