জানেন- ইতো রান্নার চেয়ে হাঙ্গামাটা একটু বেশী-ই করি আমি। বরাবরের মতন এবারো তাই করবো। তাইতো নিয়ে এসেছি এক্কেবারে সিম্পল কিন্তু একটু ঝামেলার রেসিপি দ্যাT Menস কাঁচা আমের জেলী নিয়ে। । ইয়েএএএএ তালিয়া থুক্কু হাড়ি-খুন্তুির বাজনা হবেএএএএ ।
যাগগে হৈহৈ বাদ দিয়ে রান্নায় বসে যাই
উপকরণ : কাঁচা আম সিদ্ধ করে বাটা ১/২ কেজি, চিনি ১/২ কেজি, সিরকা ১ কাপ, তেজপাতা ১টা।
প্রস্তুত প্রণালি : তেজপাতা ছাড়া সব উপকরণ এক সঙ্গে সিদ্ধ করে চেলে নিতে হবে। থকথকা পিউরি তৈরি হলে তেজপাতা দিয়ে আবার জাল দিতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না জেলির মতো তৈরি হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে নিচে লেগে না যায়। সব শেষে ঠাণ্ডা করে বয়ামে ভরে নিতে হবে। ফ্রিজে রেখে অনেক দিন খাওয়া যায় মজাদার কাঁচা আমের জেলি।
ফেসবুকে রান্না-বান্না নামক একটা পেজ আছে সেখানে দেয়া আছে এই রেসিপি। যারা আনাড়ী, রান্নার "র" ও জানেনা তারা এক্কেবারে A-Z রেসিপি পাই পাই করে অনুসরন করেন, এবং এটাই উচিত। আমি ভাব ধরি খুব রান্না পারি কিন্তু আসলে যে কী তাতো জানি আমি আর বাসার লোকেরা । এক্কেবারে নতুন রেসিপিও পাই পাই করে অনুসরন করতে একেবারেই ভাল লাগেনা। উপকরণের বহর দেখলে মাথা আঊলায় যায় তাই কয়েকবার বিড়বিড় করে পড়ে সেটা ফেলে রেখে নেমে যাই নিজের মত করে মাতব্বরী করতে।
রান্নার ক্ষেত্রে আমার সবচেয়ে বড় দোষ হল পূর্ণ মনযোগের অভাব ফলে কোন একটা উপকরণ দিতে ভুলে যাই। এমনও দেখা গেছে সিজলিং চিকেনে পেঁয়াজ দিতে ভুলে গেছি (পেঁয়াজ বড়সড় একটা উপকরণ সিজলিং চিকেনে) । ।
আমার কোন দোষ নাই সব বয়সের দোষ। )
তো আজকে যা করেছি জেলী বানাতে গিয়ে, একেবারে আমার মত করে-ই বলি (আসলটাতো উপরে দিয়েছি-ই)
মোটামুটি বড় দেখে ৩টা কাঁচা আম ছিলে-ধুয়ে ডুবো পানিতে সেদ্ধ করলাম। কিছু পানি ফেলে দিয়ে অল্প পানিতে কাঠের খুন্তি দিয়ে সেই আম ভর্তা করলাম (একেবারে মিহি করিনি)। একেবারে মিহি করতে হলে ঠান্ডা করে হাতে চটকানো/ ব্লেন্ডারে দেয়ার দরকার ছিলো কিন্তু সেই দেরী সইছিলনা তাই খুন্তি দিয়েই। আমের পাল্প একটা ননস্টিকের প্যানে দিয়ে একটু লবন দিয়ে মাঝারি আঁচে রাখুন।
এবার চিনির বয়ামটা বাম কাঁখে নিয়ে ডান হাতে সুপের চামচ (সুপের চামচের কাহিনী এর আগে বলেছি) দিয়ে লালা...লা...লা....লাালালা....করতে করতে ৫/৬ চামচ চিনি ঘপাৎ ঘপাৎ করে আমার মধ্যে চিনি দিন। দেখুন চিনি গলে আম একদম পানি পানি হয়ে গেছে। ভয়ের কিচ্ছুটি নেই। একটু চেখে নিন। চিনি লাগলে নিজের পছন্দ মত দিতেই থাকুন দিতেই থাকুন দিতেই.....ওহে, হ্যালোওওও শুনুন বেশী চিনি দিলে জেলী যদি একটু শুকনো করে ফেলেন তবে সেই জেলী ঠান্ডা হয়ে আর জেলী থাকবেনা, আব্বা থুক্কু মোরব্বা হয়ে যাবে কিন্তু।
একটা কথা মন দিয়ে শুনুন আমের চুলার আঁচ কমিয়ে খুব ঘন ঘন নাড়তে হবে। নাড়া বন্ধ করে তাং-ফাং করলে কিন্তু আম ছিটে হাতে-মুখে এসে পুড়বে বলে দিচ্ছি।
যাগগে পানি মোটামুটি শুকিয়ে ঘন হয়ে এলে একটা কাপে পানি নিয়ে তাতে এক ফোটা ছাড়ুন। মিশে গেলে বুঝবেন জেলী হয়নি আরো জ্বাল লাগবে আর নিচে জমাট বেধে পরলে বুঝবেন জেলী রেডী। এবার আমের মিশ্রন দুই ভাগ করুন। এক ভাগ তুলে রাখুন আর এক ভাগে সবুজ ফুড কালার মিশিয়ে আরো কিছুক্ষন জ্বাল দিন।
যেটুকু তুলে রেখেছিলেন সেটুকুতে একটা পাত্রে সামান্য পানি দিয়ে জর্দা রং গুলে সেই পানি এবার বাকী মিশ্রন মিশিয়ে অল্প জ্বাল দিয়ে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা হওয়ার দেরী না সইলে আমার মতন গরম গরম-ই লেয়ারে লেয়ারে বয়াম-বাক্স-সুটকেস ভরে ফেলুন। এরপর পাউরুটি দিয়ে অথবা খালি খালি-ই খেয়ে ফেলুন হোম মেড জেলী ।
ভাল ছবি তুলতে পারিনা, ছবি দেখে হাসবেন্না কইলাম
আবারো হাসে ! দেন আমার রেসিপি ফেরত দেন। হাসলে ছবি দেহামুনা কইলাম
** বেশী চিনি বা বেশী জ্বাল দিয়ে জেলী ঠান্ডা হলে পরে চিনি জমে শক্ত হয়ে যেতে পারে। সুতরাং চিনি দেওয়ার সময় সেই আন্দাজে দিবেন।
সবার রান্না হোক আনন্দময়, সুন্দর। শুভকামনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:২২