সরকার দলীয় প্রভাবশালী মহলের ইচ্ছায় (কাকতালীয় ভাবে) একই বিশেষ ধর্মের ৬ জন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয় ভিকারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখায়; এরা হলেন পরিমল জয়ধর, বরুণচন্দ্র বর্মণ, বাবুল কর্মকার, প্রণব ঘোষ, বিশ্বজিত্ ও বিষ্ণু চন্দ্র।নিয়োগ পরীক্ষায় যারা ভালো করেছিল এবং যারা মেধা তালিকায় প্রথমদিকে ছিলেন, তাদের বাদ দিয়ে এ নিয়োগ সম্পন্ন হয়।জানা যায়, ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল।কিন্তু তা ছিল লোক দেখানো। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির সভাপতি ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি’র সুপারিশে এবং অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমের সরাসরি আশীর্বাদে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল।
দলীয় প্রভাবে নিয়োগ পাওয়ার পর এসব শিক্ষক কাউকেই তোয়াক্কা করতো না। তাদের প্রভাবে প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা টুঁ শব্দও করতে পারতেন না। ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে থাকতেন ক্যাম্পাসের সব শিক্ষক-শিক্ষিকা।
শিক্ষক-শিক্ষিকারা অভিযোগ করেছেন, সরকারদলীয় প্রভাবের কারণে এসব লম্পট শিক্ষক বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।তারা শিক্ষিকাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করতো; ছাত্রীদের ইভটিজিং করতো।শেষেতো ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করতেও তারা ভয় পেত না। তারা বলেন, লম্পট পরিমল ও তার সহযোগীরা কতজনের যে সর্বনাশ করেছে কে জানে। অনেকে হয়তো মানসম্মানের ভয়ে মুখ খোলেননি।পরিমলকে এর আগে অন্য এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর উত্তরা মডেল স্কুল থেকেও বহিষ্কার করা হয়। তিনি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়ার লাটেংগা গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার নাম ক্ষিতিশ জয়ধর।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, ভিকারুননিসা স্কুলের কোনো শাখায়ই ২ জনের বেশি পুরুষ শিক্ষক থাকে না।অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম দায়িত্ব নেয়ার পর ৬ জন পুরুষ শিক্ষক বিশেষ দলীয় পরিচয়ে ভিকারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখায় নিয়োগ দেন। এদের মধ্যে শিক্ষক বিশ্বজিত্ ছাড়া বাকিদের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরেই ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে অনৈতিক আচরণ ও সম্পর্কের অভিযোগ ওঠতে থাকে।
বসুন্ধরা শাখার শিক্ষিকারা গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল হোসনে আরা বেগমের কাছে এসব শিক্ষকের আচরণ নিয়ে অভিযোগ করেন। এতে প্রিন্সিপাল শিক্ষিকাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। তাদের তিনি শাসিয়ে বলেন, আপনারা এতো কনজারভেটিভ কেন? পরে বাংলা বিষয়ের শিক্ষক পরিমল জয়ধর ও বরুণ চন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে ক্রমান্বয়ে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে অনৈতিক আচরণ ও সম্পর্কের অভিযোগ বাড়তে থাকে। কিন্তু প্রিন্সিপাল তাদের সতর্ক না করে উল্টো তাদের মদত দিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে পরিমল জয়ধর দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে একাধিকবার জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করলে ওই ছাত্রী শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে সম্প্রতি অভিভাবকের মাধ্যমে কলেজ প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ জানায়। অভিযোগে শারীরিক সম্পর্কের সেই দৃশ্য ইন্টারনেটে প্রচার করার হুমকি প্রদানের লিখিত অভিযোগও আনা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, যৌন নিপীড়নের শিকার ছাত্রী লিখিত অভিযোগ করলেও এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল বলেন, ‘মেয়েটি ভালো নয়, পরিমল ভালো।
শিক্ষিকারা জানান, প্রিন্সিপালই ভালো নয়।নির্মম পরিস্থিতির শিকার একটি মেয়েকে তিনি কিভাবে খারাপ বলেন? শিক্ষিকারা এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিংবডির কাছে পুরুষ শিক্ষক পরিমলসহ অন্যান্য লম্পট শিক্ষকের বিচার ও একই সঙ্গে তারা হোসনে আরার অপসারণও দাবি করেন।এরপরে ঘটনাটি কিভাবে চলছে তা সবার জানা।
ভিকারুননিসায় পরিমলের মতো ঘটনা দেশের সর্বত্রই ঘটছে।স্কুলের বাচ্চাদের রেইপ করার জন্য শিক্ষক/ধর্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে কিন্তু এখানকার সাহসী শিক্ষার্থীরা এবং তাদের অভিভাবকরা সেই পুরনো সংস্কৃতি ভেঙে সংগ্রামের নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।
এদের শিঘ্রই টিএফআই সেলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হউক।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১১ রাত ৯:৩১