somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

(যা শালা) সাইকেলটা বেচে দে - গ্রামীনফোন

১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মুনতাসির মামুন



সংগত কারনে বিষয়টা প্রয়োজনীয়। আমাদের দেশে পণ্যের বাজার জাত করনে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গুলোর আচার আচারন কতটুকু আক্রমনাত্বক তা ভেবে দেখা কিছুটা হলেও জরুরী।

সবসাময়ীক কালে তরুনদের মধ্যে যে বিষয়গুলো বেশ জোরাল ভাবে লক্ষ করা গেছে তার মধ্যে সাইকেলই মনে হয় সব থেকে বেশি আলোচিত। শুধু আলোচিত বললে খুবই ভুল হবে, বলা উচিত সময়ের প্রয়োজনে অতিগুরুত্ব পূর্ন সিদ্ধাšত। আর সে কারনেই মনে হয় বাংলাদেশের অতি পরিচিত মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীন ফোন - তারুন্যের এই চলমান ক্রেজ কে কাজে লাগিয়েছেন বেশ বুদ্ধিমত্তার সাথে। টিভি কর্মাসিয়াল সহ দেশ জুরে বড় বড় বিলবোর্ড গুলোতে আমাদের অতিপরিচিত বন্ধুদের সাইকেল সমেত ছবি গুলো যথেষ্ঠ আবেগ পূর্ন। সাথে তাদের কথার ঝুলি, অন্য আরেক জন যুবা-বৃদ্ধকে আবার ভাবতে বাধ্য করবে, না সাইকেলটা আর ধরা উচিত।


এটাকে আমরা যথেষ্ঠ পজেটিভ একটা এপ্রেচ ধরতে পারি। কেননা জীবিকার জন্য ঢাকা শহরের লাখ লাখ কর্মজীবি মানুষ যদিও বা রোজ সাইকেল চালান, তবুও অভিযাত শ্রেনীর মানুষদের মধ্যে সাইকেল জনপ্রিয় হওয়া পিছনে চাকচিক্য একটা অত্যšত জরুরী বিষয়। যা আজ আমরা অনেকে যারা সাইকেল চাইল তাদের দেখলেই বোঝা যাবে।

হিসেব যাই হোক, সাইকেলের ভিন্ন এই রুপ কিছুটা হলেও নতুন। যা জিপি দারুন ভাবে কাজে লাগিয়েছে তার বানিজ্যিক বিপননে। তবে ব্যপারটার মধ্যে দেশ জনতার মঙ্গলের থেকে তাদের পন্য বিক্রিই যে মূল তার একটা উদাহরন টানার জন্যই এই লেখা।


কদিন আগে থেকে হঠাৎ করে দেখা গেল দেশের শীর্ষ স্থানীয় নিউজ এজেন্সি ” বিডিনিউজ২৪.কম” তাদরে ইনডেক্স পেজে মাষ্ট হেডের উপরে বেশ বড় একটা এড যোগ করেছে। আমি যত দিন থেকে এই ওয়েব সাইটটা দেখছি, এমন ভাবে এড আর কখনও দেখিনি (আমার ভুল হতে পারে)। এড দেয়া নেয়া নিয়ে সমস্যা নয়। সমস্যা হলো পন্য নিয়ে।

সেল বাজার- একটি অনলাইন বিপনন সাইট। যেখানে যে কেউ যা কিছু বিক্রি করে দিতে পারে। আমাদের দেশের প্রথম দিকের যে কটা অনলাইন স্টোর চালু হয়েছিল, এটি তার মধ্যে একটি। প্রথম দিকের মালিকানা অন্যকারো থাকলেও বর্তমানে এটা জিপি-এর একটি অংগ প্রতিষ্ঠান।

এই প্রতিষ্ঠানটি তার কার্যক্রম হঠাৎ করেই মহা সমারহে শুরু করেদিয়েছে তার কারন হলো অনলাইন স্টোর নিয়ে আরেকটি কোম্পানি ” বিক্রয়.কম” এর অগ্রাসি জনসংযোগ। আর তাই সুচতর জিপি (সেল বাজার) প্রতিবারের মত পাবলিক সেস্টিমেন্ট এ আটকে যায় এমন কিছু করার ই চেষ্টা করেছে ”বিডিনিউজ২৪.কম” এর সাইট এডেও।

এডে লেখা ছিল ”হাঁটতেই বেশি পছন্দ? পড়ে থাকা সাইকেলটা তাহলে বেচে দিন”। অনেকে ভাবতে পারেন সমস্যা কই? খারাপ তো কিছু লেখা নাই। আসলেও এটা খারাপ কিছু না । ঝোকের মাথায় সাইকেলটা আপনি কিনেছিলেন, এখন আর চালান না, তো সেটা বিক্রি করেই দিতে পারেন।

কিন্তু ব্যপারটা এমন করে ভাবা যেতো যদি না জিপি তার চলো বহু দূও - ক্যাম্প্যইনে সাইকেল এর জয়জয়াকার টা না দেখাতেন। একই কোম্পানি তার নিজের সুবিধার্থে সাইকেল কে পরিবর্তনের কিংবা তারুন্যের হাতিয়ার দেখালেন আর অন্য জায়গায় বললেন, এটা বেচে দেন। ব্যপারটা গোলমেলে।

”হাঁটতেই বেশি পছন্দ? পড়ে থাকা সাইকেলটা তাহলে বেচে দিন”। এডের এই কথাটার বিশ্লেষনে আসা জাক। ”হাঁটতেই বেশি পছন্দ? - এই অংশ দিয়ে বোঝান হচ্ছে যারা সাইকেল কিনেছেন হাটার বিকল্প হিসেবে, আর যদি মনে করেন হাটতেই ভাল লাগছে তো সাইকেল টা ছেড়ে দিন। কিšতু চলো বহুদূর এডে সাইকেল কে দেখানো হয়েছে রা¯তার বিজয়ী বীর হিসেবে। জানজট এর ভীর ঠেলে, বাস ট্রাকের কোনা চিপা দিয়ে সাইকেল নিয়ে অতি অল্প সময়ে চলে যাওয়া যায় গšতব্য। তার মানে দারায়, সাইকেল একটা উপযোগী যানবাহন। নিছন হাটার বিকল্প না। সে হিসেবেও ”হাঁটতেই বেশি পছন্দ? কথাটা বেশ ভুল। কেননা এখানে একটা তুলনা চলে আসে সাইকেলের সাথে। যেহেতু হাটা এখানে প্রায়রিটি পাচ্ছে তাই এভাবে ধরে নেয়া যেতে পারে সাইকেল দিয়ে শুধু হাটার বিকল্প কাজ করা যায়। আর ভালভাবে বললে, আশে পাশে যাওয়া জন্য হাটাতেই ভাল লাগতে পারে সাইকেলের থেকে যদি না দূরত্ব কম হয়। বেশি দূরত্বের জন্য আমরা কয় জন হাটি বা হাটবো সেটা নিয়ে আমাদের কোন সংসয় নাই। এটা হতেই পারে, কিন্তু সাইকেলকে ডেইলি যানবাহনের কাতারে আনা হয়েছে চলো বহুদূও এডে, সে হিসেবে সাইকেল স্বল্প দূরত্ব (যা হেটে কাভার করা যায়) জন্য সাময়িক কোন বাহনই শুধু না, এটা দিয়ে দৈনিক প্রয়োজনে অন্য যানবাহনের বিকল্পও বটে।

এবার আসা যাক ”পড়ে থাকা সাইকেলটা তাহলে বেচে দিন” - এই লাইনে। ”বেচে দিন” কথাটার মধ্যে যথেষ্ট তাচ্ছিলল আছে। আমরা সাধারন ভাবে - বেচে দে টাইপ কথা তখনই বলি যখন ফেডআপ হয়ে যাই। এটা কিছুটা উসকানি মূলকও বটে। তাই যখন এডে বলা হচ্ছে ”হাঁটতেই বেশি পছন্দ? পড়ে থাকা সাইকেলটা তাহলে বেচে দিন” - তখন দর্শকে কিছুটা হলেও উস্কে দেয়া হচ্ছে, ফেলে রেখে কি আর বলে, বিক্রি করেদেন। কিছু টাকাও চলে আসবে।

এখন কথা হলো, জিপি এর মাথায় সব বাদ দিয়ে সাইকেল বেচার চিšতাই বা আসলো কই থেকে? তার মানে কি সাইকেলের জনপ্রিয়তা কমছে? এটা বলার চেষ্টা করা হয়েছে? এমনই কি যে, কিনেই যখন ফেলেছেন ফেলে রেখে কি হবে, বেচে দিয়ে বেচে যান? ব্যপারটা আসলেও সাইকেলের জন্য খুবই অসম্মান জনক। কেননা সাইকেলের জন্যপ্রিয়তাতো বারছেই। যদি তাই হয়ে থাকে বেচার কথা আসে কই থেকে? প্রসঙ্গত সাইকেলের অতিজনপ্রিয়তার কারনে চলো বহুদূর এড গুলো বানানো হয়েছে একই সময়ে।

এখন ধরা হোক টার্গেট অডিয়েন্স। বিডিনিউজ এটি অতি জনপ্রিয় সাইট যেখানে সারা দুনিয়া থেকে বাঙ্গালীরা ভিজিট করে। সে হিসেবে টার্গেট অডিয়েন্স এর সবাই পড়ালেখা জানে। আর তারাই কিন্তু এখন সাইকেলের দিকে ঝুকছে। যদি তাই হয়ে থাকে তো জিপি তার এই এড বানানোর আগে নিশ্চয়ই এটা শিয়র হয়েছে - এই শ্রেনীর মানুষরা সাইকেল কিনলেও এখন আর চালায় না বা হাটা টাই প্রাধান্য দিতে পারে? তাহলে চলো বহুদূর এড টা দিয়ে জিপি কি বুঝাতে চাচ্ছে?

এভাবে আর অনেক কিছু বলা যাবে যে, একটা প্রতিষ্ঠান আসলে সামাজিক দ্বায়িত্ব পালনের নামে তাদের প্রয়োজন মাফিক একই পন্যকে যেমন ইচ্ছা তেমন করে বিপনন করতে পারে। পথের মানুষের ইমোশনকে ইগনাইট করার জন্য সাইকেল ওয়ালা বিলবোর্ড যেমন টাঙ্গানো পসিবল আর ঠিক সেই সাইকেল কে (যা শালা)বেচে দে - টাইপ কথাও তারা বলতে পারে। এখানে তাদের পণ্যে প্রসারই সব, সাইকেল কতটুকু সেটা আপনিই খুজে নেন।

আমি জানি না আমার বন্ধুরা যারা চলো বহুদূর - এডে ছিলেন তার বিষয়টাকে কিভাবে নিবেন? এটা নিছক কাকতালিয় কিছু হবার কথা নয়। কারন গ্রামীনফোনের মত প্রতিষ্ঠান কাদি কাদি টাকা খরচ করবে এমনিতেই, এটা বলাটা আসলেই বেমানান। আরেকবার ভেবে দেখুন।

Billboad photo taken from Tanzin Chy facebook shared photo.
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৩
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×