রেসলিং খেলাটি বরাবরই অ্যামেরিকানদের প্রিয় খেলা। আমাদের দেশেও যে বেশ জনপ্রিয় তা দোকানগুলো আর টিভি শোরুমগুলোর সামনে মানুষের ভীড় দেখলেই বুঝা যায়। অর্থাৎ একজন মানুষ আরেকজনকে নিষ্ঠুরের মতো পিঠাচ্ছে,এটা সবার কাছে খুবই উপভোগ্য।আমি যখন দেখতাম,তখন দেখতাম যে মারছে সে দুর্বল হচ্ছে,আর যে মার খাচ্ছে সে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামড়ে পড়ছে। আশ্চর্যজনক,একপর্যায়ে রেফারি তিনটা থাপ্পড় দিয়ে রককে জিতিয়ে দিত।
অ্যামেরিকার নির্বাচন অনেকটা রেসলিং এর মত। এই কিছুক্ষণ আগের জরিপে দেখা গেছে গাধা এগিয়ে,একটা বিতর্কের পর দেখা গেছে হাতি এগিয়ে। আর নির্বাচনের একবছর আগ থেকে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে।পুরো বিশ্ব রেসলিং এর মতো হা করে তাকিয়ে উপভোগ করে। চলে কোটি কোটি টাকার খেলা,শুনেছি বাজি ধরা হয় বিতর্কের উপর।
তবে বরাবরই পররাষ্ট্রনীতি আলোচনায় থাকলেও ইন্টার্নাল বিষয়গুলো বেশিই বিতর্কের বিষয় থাকত। এবার মনে হয়,ইন্টার্নাল কোন বিষয় থাকছে বলে মনে হয় না।ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্প এর মধ্যে পুরো বিষয়টা বাইরে নিয়ে এসেছেন। কারণ তার প্রতিদ্বন্ধি হিলারী অতীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে তিনি সফলই ছিলেন,অন্তত অ্যামেরিকানদের দৃষ্টিতে সেটি হওয়া উচিত।বাইরের একজন দর্শক সহজেই বলতে পারেন,বেটা একটা ল্যাং মার বা এভাবে খেল। ট্রাম্প সে শ্রেণিরই লোক।কিন্তু যে মাঠে থাকে তাকে ফেয়ার প্লে খেলেই ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নিশ্চিত করতে হয়।
ট্রাম্প একের পর এক তোপ দাগানো শুরু করেছেন বাইরের দিকে। স্বভাবতই তা হিলারীর গায়ে আঁচ লাগিয়ে দিবে।এরই মধ্যে ম্যাক্সিকান এবং চীনাদের ধর্ষনকারী এবং মুসলিমদের সন্ত্রাসী বলে অ্যামেরিকা থেকে বের করে দেওয়ার কথা বলেছেন।অভিবাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।যদি অ্যামেরিকাতে আদিবাসী বলতে কিছুই নেই।শুধু অ্যামেরিকা কেন পৃথিবীর কোথায়ও আদিবাসী বলতে কিছুই নেই। মানুষ তার নিজের প্রয়োজনে অথবা জীবন বাঁচানোর তাগিদে বারবার স্থান পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে স্যাটল হয়েছে। পিউর জাতিসত্ত্বা বলতেও কিছু নেই।কারণ সবকিছুতে চলছে লেনদেন।পুরো বিশ্বে একটি জাতিসত্ত্বা তা হচ্ছে মানুষ। এবং ভিতরের বিমূর্ত ধারণাগুলো এক।তারপরও মানুষ পরিচিতিগত জাতিসত্ত্বা ভাষা,সংস্কৃতি,অঞ্চল,বর্ণগত জাতিসত্ত্বা রয়েছে।সে হিসাবে এবং ঐতিহাসিক বর্ণনামতে অ্যামেরিকার আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ানরা,যারা আজ প্রায় বিলুপ্ত। ইতিহাস যতটুকু যেতে পেরেছে ততটুকুর সন্ধান দিয়েছে। হয়তো এরাও অন্যকোন গোষ্টিকে বিতাড়িত করে সেখানে বসতি স্থাপন করেছে।আজকার অ্যামেরিকার প্রায় সব অধিবাসীই অভিবাসী। এদের মধ্যে বেশিরভাগ জার্মান,চেক,হাংগেরীর এবং অন্যান্য ইউরোপীয়।ট্রাম্প নিজেও একজন জার্মান বংশোদ্ভুত অ্যামেরিকান। তার দাদা জার্মান থেকে অ্যামেরিকায় গিয়ে বসবাস শুরু করে। কিন্তু ইউরোপীয়রা তাদের গা থেকে অভিবাসী মুছে ফেলতে পারলেও এশিয়া,আফ্রিকান,ল্যাটিনরা এখনও বংশোদ্ভুত রয়ে গেছে।
ট্রাম্প নিজেকে একজন জাতীয়তাবাদী অ্যামেরিকান হিসাবে তুলে ধরার সাথে সাথে অ্যামেরিকানদের মধ্যে জাগিয়ে তুলছেন চরম জাতীয়তাবাদ, বলা যায় অ্যামেরিকাতে নাৎসীবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে যাচ্ছেন।কে জানে তার টার্গেট হয়তো মুসলিমরাই হবে।দল থেকে ঐভাবে সাড়া না ফেলেও জনগনের মধ্যে একটা সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছেন।তবে চিকন বুদ্ধির ক্লিনটন এভারো মনে হয় তার শিষ্যকে জয়ী করতে পারবেনা।কারন ট্রাম্পের হাতে এখনও অনেক ট্রাম্প কার্ড আছে।এর মধ্যে অন্যতম পানামা পেপারস কেলেঙ্কারী। যার মধ্যে এখনও কোন অ্যামেরিকান এর নাম আসে নি। বেচারী হিলারী!
এর আগেও আলোচনায় এসছে, তবে ট্রাম্পের এই যুদ্ধংদেহী মনোভাব আবারো আলোচনায় নিয়ে এসেছে তৎকালীন অটোম্যান সাম্রাজ্যের অন্তর্গত মেসোডোনিয়ায় ১৯১১ সালে জন্ম নেওয়া এক অপরিপক্ক ও প্রতিবন্ধী নারীর ভবিষ্যৎবাণী। খ্রিষ্টান অর্থোডক্স পরিবারে জন্ম নেওয়া এই নারী আলাদা কোন ধর্মমত প্রচার না করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভবিষ্যৎবাণী করতেন এবং প্রায় চারহাজারতম বছর পর্যন্ত দিন তারিখ সহকারে অনেক ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন।এবং তিনি এবং তার ভক্তদের দাবী অনুসারে এসব ভবিষ্যৎবাণী তিনি স্রষ্টা থেকে পেয়েছেন।এর মধ্যে অন্যতম ছিল ২০০৮ সালে একজন আফ্রিকান আমেরিকান অ্যামেরিকার ৪৪ তম প্রেসিডেন্ট হবে এবং তিনি হবেন অ্যামেরিকার শেষ প্রেসিডেন্ট।একজন আফ্রিকান অ্যামেরিকান অ্যামিরিকার ৪৪ তম প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। এখন তিনি কি অ্যামেরিকার শেষ প্রেসিডেন্ট হবেন? এমন কোন বড় আলামত দেখা না গেলে অপেক্ষা করার সুযোগ আছে।অ্যামেরিকানরা কি প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি ভেঙ্গে দিবে,নাকি অ্যামেরিকা তার সাম্রাজ্য বৃদ্ধি করে নতুন নাম নিবে, নাকি অ্যামেরিকা যুক্তরাষ্টীয় কাঠামো ভেঙ্গে অনেকগুলো রাজ্যে জন্ম নেবে।অ্যামেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন মহাদেশের জনসংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ট,আর ট্রাম্প যেভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে তাতে ঐরকম কিছু ঘটলে অবাক হবো না।
বাবা ভাঙ্গা প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে আসলেও অন্ধ হয়ে যান এবং তারপর থেকে ভবিষ্যৎবাণী করা শুরু করেন এবং ১৯৯৬ সালে
ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
তিনি ১৯৫০ সালেই বলেছিলেন, বিশ্ব উষ্ণ হতে শুরু করবে এবং ২০০৪ সালে এক বৃহৎ উপকূলজুড়ে সুনামি হবে। উষ্ণায়ন অবশ্য ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আর তার উল্লিখিত সময়ে সুনামিও হয়েছে। ১৯৮৯ সালে তিনি বলেছিলেন, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে আমেরিকার টুইন টাওয়ারে ইস্পাত পাখির আক্রমণের ঘটনা ঘটবে। আর নেকড়েরা ঝোপের (bush) মধ্যে আর্তনাদ করবে এবং নির্দোষ মানুষের রক্ত ঝরবে। টুইন টাওয়ারে সেই ঘটনা ঘটেছে। ১৯৮০ সালে ভাঙ্গা বলেছিলেন, ২০০০ সালে কুরস্ক রাশিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন পানিতে নিমজ্জিত হবে। নতুন শতাব্দীর প্রাক্কালে ১৯৯৯ বা ২০০০ সালের আগস্টে পারমাণবিক ডুবোজাহাজ কুরস্ক পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।১৯৮৯ সালে ভবিষ্যৎবাণী করেন ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ২ যমজ ভাইয়ের উপর ইস্পাত পাখির আক্রমন হবে আর ঝোপের() মধ্যে নেকড়েরা চেঁচামেচি করবে আর লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষ মারা পড়বে। তখন এর অর্থ বুঝা না গেলেও ঘটনা ঘটার পর সবাই বুঝতে পারে।
ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণীতে ২০১৬ সাল হলো আলোচিত বছর। চলমান এই বছরটির ব্যাপারে বাবার চাঞ্চল্যকর সব কথা রয়েছে। তিনি বলেছিলেন, মুসলিমরা ইউরোপে অভিযান চালাবে এ বছর। পুরো ইউরোপ এক প্রকার জনশূন্য হয়ে যাবে। কিন্তু এই জনশূন্য হওয়ার কারণ কি আবহাওয়া পরিবর্তন নাকি মুসলিম আক্রমণ- এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। ২০১৫ সালে ইউরোপে মুসলিম শরণার্থীর স্রোত ছিল এক আলোচিত ঘটনা। অন্য দিকে ফ্রান্সে আইএসের নামে বোমা হামলার পর পুরো ইউরোপের অবস্থা পাল্টে যায়।এই উত্তেজনার মধ্যে অনানুষ্ঠানিক গণমাধ্যমে বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী মুসলিম আক্রমণ ও ইসলামভীতি পুরো ইউরোপে ছড়িয়ে দেয়। আতঙ্ক এবং হিংসা দুটোই ছড়ায় মুসলিমদের ব্যাপারে। আবার এটিও ঠিক যে, আবহাওয়া পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ইউরোপ হতে পারে এর অন্যতম প্রধান শিকার। এর বিস্তীর্ণ অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি উচ্চতায় রয়েছ।ইসলামপোবিয়া নিয়ে ইউরোপের দেশে দেশে উগ্র জাতীয়তাবাদী দলগুলো শক্তিমান হয়ে উঠতেছে।শরণার্থী নিয়ে উত্তেজনায় পুরো অভিবাসনপ্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে যায়।
বাবা ভাঙ্গার অনেক ভবিষ্যদ্বাণী বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আবার কোনো কোনোটি তিনি আদৌ বলেছেন কি না, তা নিয়েও ঘনিষ্ঠ সহচরদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন।
কিন্তু ২০২৫ সালের ব্যাপারে ভাঙ্গা যা বলেছেন, তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বেশ আলোচনার মতো। এ সময়ে পুরো ইউরোপের জনসংখ্যা একপ্রকার শূন্যে এসে দাঁড়াবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ২০১৬ সালের সাথে মিলিয়ে দেখা হলে এর সাথে সম্পর্ক থাকার কথা মনে হবে মুসলিম এবং ইসলামের। ২০২৫ সালে ইউরোপে এখন যা আছে তাই যদি থাকে, তাহলে এই অন্ধ মহিলার ভবিষ্যৎ বক্তব্যের হয়তো কোনো মূল্যই থাকবে না। কিন্তু এই ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে ইসলামোফোবিয়া চাঙ্গা হয়ে আছে এবং এটাকে কেন্দ্র করে যে নানা ঘটনা ঘটছে, সেটিকে ফিরিয়ে আনা যাবে না। একসময় ইরাকে গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্রের কথা বলে পুরো ইরাককে আমেরিকার সামরিক অভিযানে বিরান করে দেয়া হয়েছে। এখনো শত শত লোকের রক্ত ঝরছে সেখানে। কিন্তু তদানীন্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ নিজেই স্বীকার করেছেন- গণবিধ্বংসী অস্ত্র সাদ্দামের হাতে থাকার গোয়েন্দা রিপোর্ট সঠিক ছিল না। আজকের মধ্যপ্রাচ্যের বিভীষিকাময় পরিস্থিতির অন্যতম প্রধান কারণ ইরাকে সেদিনের মার্কিন হামলা।
প্রকৃতিগত কিছু ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন বাবা ভাঙ্গা। তিনি বলেছেন, ২০২৮ সালে পৃথিবীর মানুষ জ্বালানির সন্ধানে শুক্র গ্রহে উড়ে যাবে। আর মাত্র এক যুগ পরের কথা এটি। জ্বালানির সন্ধানে মানুষ অনেক অসাধ্য সাধনের চেষ্টা করছে। কিন্তু শুক্র গ্রহে যাওয়ার বিষয়টি এখনো অলৌকিকই মনে হচ্ছে। ২০৩৩ সালের কথাটি অবশ্য বাস্তবসম্মত। এ সময়ে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠ উঁচু হতে থাকবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এর পরের কথাটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেছেন, ২০৪৩ সালে পুরো ইউরোপে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে। রোম হবে এর রাজধানী। বিশ্ব অর্থনীতি চলে যাবে মুসলিম নিয়ন্ত্রণে। বিশ্বব্যাপী ইসলামের ব্যাপারে আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়ার মতো ভবিষ্যৎ বক্তব্য এটি। এর মধ্যে ইরাক-সিরিয়ায় আইএসের কথিত খেলাফত রাষ্ট্র নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ইউরোপ-আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে রাজনৈতিক ইসলামের নামে ইসলামি দলগুলোকে শক্তিহীন করার যে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তার পেছনে এ ধরনের একটি উদ্বেগ থাকতে পারে। ইসলামিস্টদের ব্যাপারে যেকোনো দমন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক তৎপরতা চালানোর যুক্তি হিসেবে এ ধরনের একটি আতঙ্ক বেশ কার্যকর। আতঙ্কের পাশাপাশি ইউরোপের জন্য ‘আশাবাদী’ কথাও শুনিয়েছেন বাবা। তিনি বলেছেন, ২০৬৬ সালে আমেরিকা আবহাওয়া বদলে দেয়ার অস্ত্র বানাবে। আর যুক্তরাষ্ট্র্র রোম দখল করে সেটিকে আবার খ্রিষ্টবাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবে। ২০৭৬ সালে ইউরোপ এবং পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে কমিউনিজম ফিরে আসবে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। এতে বামপন্থীরা আশ্বস্ত হতে পারেন।
বাবার বক্তব্য মতে, ২০৮৪ সালে প্রকৃতির নবজন্ম হবে। এ নবজন্ম কেমন হবে, সেটি তিনি বিস্তারিত বলেননি। তবে পরের কথায় এর কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। তিনি বলেছেন, ২১০০ সালে মানুষের তৈরি কৃত্রিম সূর্য এই গ্রহের অন্ধকার অংশকে আলোকোজ্জ্বল করবে। আর ২১৩০ সালে বাইরের শক্তির সাহায্যে পানির নিচে মানুষের বসবাস সম্ভব হবে।
বাবার বক্তব্য মতে, ২১৭০ সালে বিশ্বব্যাপী বড় রকমের খরা হবে। আর ২১৮৭ সালে দু’টি বৃহৎ অগ্ন্যুৎপাত সফলভাবে বন্ধ করা যাবে। তবে ২২০১ সালে সূর্যের তাপ বিকিরণ প্রক্রিয়া শ্লথ হয়ে তাপমাত্রা কমে যাবে। এসব পরিবর্তনের প্রভাব মানবসভ্যতায় কী হবে, এ ব্যাপারে কিছু বলেননি তিনি। এর অর্ধশতক পরের কথাও বলেছেন তিনি। বাবার মতে, ২২৬২ সালে গ্রহ ধীরে ধীরে কক্ষপথ পরিবর্তন করবে। একটি ধূমকেতুর আঘাতে হুমকির মুখে পড়বে মঙ্গল। এর প্রায় এক শতাব্দী পর ২৩৫৪ সালে কৃত্রিম সূর্যের দুর্ঘটনায় পৃথিবীতে খরা আরো বিস্তৃত হবে। ২৪৮০ সালে দুই কৃত্রিম সূর্যে সংঘর্ষ হবে আর পৃথিবী অন্ধকারে ছেয়ে যাবে।
চতুর্থ সহস্রাব্দ পর্যন্ত সময়ের কথা বলেছেন বাবা ভাঙ্গা। তার মতে, ৩০০৫ সালে মঙ্গলের একটি যুদ্ধ গ্রহ নক্ষত্রের নির্দিষ্ট আবর্তন পথ পরিবর্তন করে দেবে। ৩০১০ সালে একটি ধূমকেতু চাঁদকে আঘাত করবে। পৃথিবী শিলা ও ছাই দ্বারা বেষ্টিত হয়ে পড়বে। বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণীতে মনে হতে পারে, এটিই হয়তোবা কেয়ামতের ধ্বংসলীলা। তিনি এরপর বলেছেন, ৩৭৯৭ সালের মধ্যে পৃথিবীর সব কিছু মরে যাবে। তবে মানবসভ্যতা এমন একপর্যায়ে যাবে যাতে তারা নতুন একটি তারকা জগতে নিজেদের সরিয়ে নিতে পারবে। বাবা বলেননি, এটিই চিরন্তন পরবর্তী জগৎ হবে কি না। তবে অনেকের কল্পনায় চলে আসতে পারে এটি।
বাবা ভাঙ্গাকে নিয়ে কেন এত দিন পর বিশেষভাবে আলোচনা হচ্ছে, সেটি এক রহস্যের ব্যাপার। ইসলামে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালাই কেবল ভবিষ্যৎদ্রষ্টা- এমনটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা হয়। আল্লাহ নবীদের অতীত ও ভবিষ্যতের অনেক ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন। এভাবে তারা ভবিষ্যৎ নানা ঘটনা সম্পর্কে উল্লেখ করেছিলেন। তবে প্রবণতা বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা প্রকাশ করাকে দোষের মনে করা হয় না। বাবা ভাঙ্গা দাবি করেন, তাকে সৃষ্টিকর্তা এসব জানিয়েছেন। স্রষ্টার জানানো কোনো কিছু মিথ্যা হয় না। ওবামা যদি সত্যিই আমেরিকার শেষ প্রেসিডেন্ট হয়ে পড়েন, তাহলে বাবার খ্যাতি বাড়বে। মুসলমানদের ইউরোপ জয়কেও অনেকে সম্ভাবনা হিসেবে ভাববেন। তা না হলে এসব ভবিষ্যদ্বাণীর পেছনে বিশ্বনিয়ন্ত্রক কোনো শক্তির উদ্দেশ্যমূলক সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেই ধারণা করা হবে। এর সবচেয়ে বড় শিকার মুসলিমরাই হয়তো হবেন। এটি হতে পারে অজ্ঞাত এক নারীর ভবিতব্যবিষয়ক কথাবার্তাকে এভাবে ছড়িয়ে দেয়ার মাহাত্ম্য।
ছবিসূত্রঃ-নেট।
তথ্যসূত্রঃ-নেট।
বিশ্লেষণে কৃতজ্ঞতা স্বীকার আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মাসুম খলিলী।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৪২