somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযোদ্ধার চোখে- সংবিধান, সমস্যা, পর্যালোচনা ও সমাধানে কিছু প্রস্তাব -পর্ব ১

১১ ই মে, ২০১১ রাত ২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সবচেয়ে বেশি বিতর্ক চলছে সংবিধান সংশোধন নিয়ে। নানা মুণির নানা মত। কি করা যাবে আর কি করা যাবে না, ১৯৭২ সালে কেন কোন কথাটি রচিত হয়েছিল এবং এখন, এই ২০১১ সনে কি কি পরিবর্তন প্রয়োজন (আদৌ প্রয়োজন কি না), তর্কটা এই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি, এবং আমার মত অনেক মুক্তিযোদ্ধাই বাংলাদেশের নীতিনির্ধারক তথা বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে বলার সুযোগ পাচ্ছেন না- কি বিশ্বাস ও স্বপ্ন নিয়ে আমরা এই সংবিধান রচনা করেছিলাম (বা করতে চেয়েছিলাম)। কেন , কি পাওয়ার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ রক্ত দিয়ে কেড়ে নিয়ে এসেছিলো "স্বাধীনতা"। ঠিক কোন লক্ষ্য অর্জনের স্বপ্ন মানুষকে উদ্দীপনা যুগিয়েছিলো নিজের সবচেয়ে দামী সম্পদ- প্রাণ/জীবন-কে বিলিয়ে দিতে!

এই লেখায় আমি চেষ্টা করবো সেই সব প্রশ্ন ও তর্কের উপরে কিছু আলোকপাত করতে।

প্রথমে আমার পরিচয়। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা - এইটাই আমার বড় পরিচয়। ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরে 'সাব সেক্টর কমান্ডার' হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে পাকিস্তান সেনা বাহিনী ও তাদের বাংলাদেশী দোসর (রাজাকার, আল বদর ইত্যাদি) দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে বহু সহযোদ্ধাসহ নিজের আপন ছোটভাইকে মুক্তিযুদ্ধে হারাই। স্বাধীনতা পরবর্তী জীবনে পেশাগত কাজের পাশাপাশি আমি মূলত বাংলাদেশ, অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে পড়ালেখা করি। ব্যক্তিগত জীবনে আমি কোন রাজনৈতিক দলের আদর্শে বিশ্বাস করি না - তবে আমি নিরপেক্ষ নই। আমি বাংলাদেশ পক্ষের লোক, দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থ হলো আমার নিজের স্বার্থ।

১৯৭২ এর সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন

এই প্রশ্নটা হয়ত অনেকের মনে হয়ে থাকবে যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কথাটার মানে কি? আর আমাদের সংবিধানে এই চেতনার আলোকে কি কথা লেখা হয়েছে যার পরিবর্তন এই চেতনার পরিপন্থী হতে পারে? এর উত্তর পেতে হলে আমাদের আগে বুঝতে হবে- কি কোন কোন অধিকার ও আদর্শ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচালিত করেছিলো স্বাধীনতা অর্জনে। শুধু একটি রাষ্ট্রীয় পরিচয় আর পতাকা- এই কি যুদ্ধের চেতনা? কখনোই নয়। বরং আমাদেরকে এইটা বুঝতে হবে যে- ১৯৭১ এর মার্চে গণহত্যার ফলশ্রুতিতে যে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়েছিলো, তারও আগে, এই বঙ্গের জনপদ কিছু নির্দিষ্ট অধিকার আদায়ের জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন করে এসেছে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সেই সব অধিকার কি ভাবে, কোন নিয়মে আদায় করা হবে, সেই রুপরেখার অধিকার আমাদের নিজেদের হাতে দিয়েছে (মোঘল, বৃটিশ কিংবা পাকিস্তানী প্রভু শাসকদের পরিবর্তে) । আর সেই রুপরেখার লিখিত রুপ হলো আমাদের সংবিধান। সুতরাং, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শুধুমাত্র ১৯৭১ এর চেতনা নয়- বাঙ্গালী জাতি ও স্বাধীন সত্ত্বা হিসেবে আমরা যেদিন থেকে নিজেদের ভাবতে শুরু করেছি- সেই হাজার বছরের আদি ও চিরন্তন মানবিক ও ন্যায়নির্ভর চেতনা। স্বাধীন ভাবে নিজের জীবন যাপন ও সাম্যবাদ (সকল মানুষ সমান সুযোগ ও প্রাপ্যের অধিকারী) এর যে আদর্শ মানুষকে , বাঙ্গালী জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে এসেছে, সেই স্বপ্ন বা বিশ্বাসের আধুনিক লিখিত রুপ হলো "১৯৭২ সালের সংবিধান" । ঠিক এই কারণেই আমাদের সংবিধান এর মূলনীতি যা ছিলো তা আসলে কোন ধর্মেরই মূল শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক নয়, কেউ যদি এই কথা বলে তা হলো "পিওর প্রপাগান্ডা"।আবার এর পাশাপাশি, ১৯৭২ এর সংবিধানে কি কোন সমস্যা নেই বা ছিলো না? অবশ্যই ছিলো। আসুন দেখি , কেন?

১৯৭২ সালের সংবিধানের প্রস্তাবনায়; প্রথম ভাগের অনুচ্ছেদ ৭ প্রদত্ত জনগণের সার্বভৌমত্ব এবং সর্বোচ্চ আইন হিসেবে সংবিধানের প্রাধান্য ও কর্তৃত্ব ; দ্বিতীয়ভাগে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিসমূহ এবং তৃতীয়ভাগে বিধায়িত মৌলিক অধিকারসমূহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অঙ্গীকার। কিন্তু এসকল চেতনা ও অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের চতুর্থভাগ(নির্বাহী বিভাগ), পঞ্চমভাগ(আইনসভা)এবং ষষ্ঠভাগে(বিচার বিভাগ) রাষ্ট্র ব্যবস্থার যেসব বিধি দেয়া হয়েছে তা উক্ত অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নের উপযোগী নয়। সংবিধান পযালোচনা করলে কারণগুলো পরিষ্কার হয়।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে কি সংস্কার ও পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তা আলোচনা করা যায়।

সুদীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ধারণকৃত জাতীয় আকাঙ্খা সমূহ এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে উক্ত আকাঙ্খা সমূহ বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার দলিল ১৯৭২ সালের সংবিধান যা ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বর বাংলাদেশ গণপরিষদ কতৃক গৃহীত হয়। সংবিধানের প্রস্তাবনায় স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ও সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে বলা হয়েছে “ যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে ( মুক্তিযুদ্ধকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম আখ্যায়িত করা হয়েছে) ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল:--
১।জাতীয়তাবাদ-- যার ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে অনুচ্ছেদ ৯এ “ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্বাবিশিষ্ট যে বাঙালী জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করিয়া জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করিয়াছেন, সেই বাঙালী জাতির ঐক্য ও সংহতি হইবে বাঙালী জাতীয়তাবাদের ভিত্তি”এবং এর বাইরে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের অন্যকোন ব্যাখ্যা গ্রহন হবে অসাংবিধানিক।

বহুল প্রচারিত “বাংলাদেশী” কোন জাতীয়তা নয়; “বাংলাদেশী” হলো নাগরিকত্ব। বহু বাঙ্গালী বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে বিশ্বের বহুদেশে বসবাস করেন; তারা বৃটিশ, আমেরিকান প্রভৃতি নাগরিকত্ব এর পরিচয়ে পরিচিত। ভারত, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য ইত্যাদি দেশে যারা বাস করেন তারাও সেখানকার নাগরিক; কিন্তু তাদের সবার জাতীয়তা বাঙ্গালী।যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল তারা বাঙ্গালী হলেও এই বিধিবর্ণিত জাতীয়তাবাদের মধ্যে পড়ে না এবং বাংলাদেশে তাদের কোন জাতীয় অধিকার থাকতে পারে না।

২।সমাজতন্ত্র—(সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি) যার ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে অনুচ্ছেদ ১০, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ৩৪, ৪০, ৪২এ। সুতরাং উক্ত অনুচ্ছেদ সমূহে দেয়া বিধির বাইরে বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র সম্পর্কে কোন নিজস্ব মনগড়া ব্যাখ্যা গ্রহনের অবকাশ নেই। অনুচ্ছেদ ১০ “মানুষের উপর মানুষের শোষণ হইতে মুক্ত ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজলাভ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে”। অনুচ্ছেদ ১৩ (মালিকানার নীতি) “উৎপাদনযন্ত্র, উৎপাদনব্যবস্থা ও বন্টনপ্রণালী সমূহের মালিক বা নিয়ন্ত্রক হইবেন জনগণ এবং এই উদ্দেশ্যে মালিকানা ব্যবস্থা নিম্নরূপ হইবে :
(ক) রাষ্ট্রীয় মালিকানা, অর্থাৎ অর্থনৈতিক জীবনের প্রধান প্রধান ক্ষেত্র লইয়া সুষ্ঠু ও গতিশীল রাষ্ট্রায়ত্ব সরকারী খাতসৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের পক্ষে রাষ্ট্রীয় মালিকানা ;
(খ) সমবায়ী মালিকানা, অর্থাৎ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সীমার মধ্যে সমবায় সমূহের সদস্যদের পক্ষে সমবায় সমূহের মালিকানা এবং
(গ) ব্যক্তিগত মালিকানা অর্থাৎ আইনের দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে ব্যক্তির মালিকানা”।
অতএব বাংলাদেশে ব্যক্তি মালিকানাবিহীন ও সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মালিকানার সমাজতন্ত্র বা কমুনিজম নীতি যেমন অগ্রহনযোগ্য; তেমনি অবাধ ব্যক্তিগত মালিকানাও গ্রহনীয় নয়। আবার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণমুক্ত মুক্তবাজার অর্থনীতি অনুসরণীয় হতে পারে না। অনুচ্ছেদ ১৪ (কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তি) “রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে মেহনতি মানুষকে—কৃষক ও শ্রমিককে-- এবং জনগণের অনগ্রসর অংশসমূহকে সকল প্রকার শোষণ হইতে মুক্তি দান করা”। অনুচ্ছেদ ১৫ (মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা) “রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক বিকাশের মাধ্যেমে উৎপাদনশক্তির ক্রমবৃদ্ধি সাধন এবং জনগণের জীবনযাত্রার বস্তুগত ও সংস্কৃতিগত মানের দৃঢ় উন্নতিসাধন, যাহাতে নাগরিকদের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ অর্জন নিশ্চিত করা যায়: (ক) অন্ন,বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা;
(খ) কর্মের অধিকার অর্থাৎ কর্মের গুণ ও পরিমাণ বিবেচনা করিয়া যুক্তিসংগত মজুরির বিনিময়ে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার অধিকার;
(গ) যুক্তিসংগত বিশ্রাম, বিনোদন ও অবকাশের অধিকার এবং
(ঘ) সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিম্বা বৈধব্য, মাতৃপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতি জনিত আয়ত্বাতীত কারণে অভাবগ্রস্থতার ক্ষেত্রে সরকারী সাহায্যলাভের অধিকার”।
অনুচ্ছেদ ১৬ (গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব) “নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দেশ্যে কৃষি বিপ্লবের বিকাশ , গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতিকরণের ব্যবস্থা, কুটীরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা , যোগযোগ ব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করিবে”।
অনুচ্ছেদ ১৭ (অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা) “রাষ্ট্র---
(ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল বালক বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য,
(খ) সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সংগতিপূর্ণ করিবার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে যথাযত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছাপ্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য,
(গ) আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করিবার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করিবে”। সুতরাং এই বিধি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী এবং বেকার সৃষ্টির শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন করে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পেশাভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা আবশ্যক।এবং এই শিক্ষার স্তর হতে হবে অন্যূন উচ্চ মাধ্যমিক বা দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত যাতে এই শিক্ষা শেষে ছেলেমেয়েরা যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহন করতে পারবে না; তারা যে কোন একটা পেশায় কর্মসংস্থান করতে পারে।
অনুচ্ছেদ ১৮(জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা) “(১) জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলিয়া গণ্য করিবে এবং আরোগ্যের প্রয়োজন কিংবা আইনের দ্বারা নির্দিষ্ট অন্যবিধ প্রয়োজন ব্যতীত মদ্য ও অন্যান্য মাদক পানীয় এবং স্বাস্থ্যহানিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করিবে।(২) গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করিবে”।
অনুচ্ছেদ ১৯ “(১) সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবে। (২) মানুষে মানুষে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসাম্য বিলোপ করিবার উদ্দেশ্যে নাগরিকদের মধ্যে সম্পদের সুষম বন্টন নিশ্চিত করিবার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমান স্তর অর্জনের উদ্দেশ্যে সুষম সুযোগ সুবিধাদান নিশ্চিত করিবার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করিবে”।
স্থানীয় অর্থব্যবস্থার প্রবর্তন ব্যতীত সম্পদের সুষমবন্টন সম্ভব নয়।

অনুচ্ছেদ ২০ (অধিকার ও কর্তব্যরূপে কর্ম) “(১) কর্ম হইতেছে কর্মক্ষম প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে অধিকার, কর্তব্য ও সম্মানের বিষয়; এবং প্রত্যেকের নিকট হইতে যোগ্যতানুসারে ও প্রত্যেককে কর্মানুযায়ী—এই নীতির ভিত্তিতে প্রত্যেকে স্বীয় কর্মের জন্য পারশ্রিমিক লাভ করিবে। (২) রাষ্ট্র এমন অবস্থার সৃষ্টি করিবে, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোন ব্যক্তি অনুর্পাজিত আয় ভোগ করিতে সমর্থ হইবে না এবং যেখানে বুদ্ধিবৃত্তিমূলক ও কায়িক- সকল প্রকার শ্রম সৃষ্টিধর্মী প্রয়াসের ও মানবিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণতর অভিব্যক্তিতে পরিণত হইবে”। স্থানীয় অর্থব্যবস্থা ব্যতীত সকলের কর্মসংস্থান করা যাবে না।

অনুচ্ছেদ ৩৪ (জবরদস্তি শ্রম নিষিদ্ধকরণ) “(১) সকল প্রকার জবরদস্তিশ্রম নিষিদ্ধ; এবং এই বিধান কোনভাবে লঙ্ঘিত হইলে তাহা আইনত: দন্ডনীয় অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে”। অনুচ্ছেদ ৪০—(পেশা ও বৃত্তির স্বাধীনতা) “আইনের দ্বারা আরোপিত বাধানিষেধ সাপেক্ষে কোন পেশা বা বৃত্তি গ্রহনের বা কারবার বা ব্যবসায় পরিচালনার জন্য আইনের দ্বারা কোন যোগ্যতা নির্ধারিত হইয়া থাকিলে ঐরূপ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন আইন সংগত পেশা বা বৃত্তি গ্রহনের এবং যে কোন কারবার বা ব্যবসায় পরিচালনার অধিকার থাকিবে”।

অনুচ্ছেদ ৪২ – (সম্পত্তির অধিকার) “(১) আইনের দ্বারা আরোপিত বাধানিষেধ সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন,ধারণ, হস্তান্তর বা অন্যভাবে বিলিব্যবস্থা করিবার অধিকার থাকিবে এবং আইনের কতৃত্ব ব্যতীত কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহন, রাষ্ট্রায়ত্ব বা দখল করা যাইবে না”। এখানে মূল উদ্দেশ্য হলো কোন ব্যক্তিকে জীবিকাহারা করে; অথবা উন্নততর জীবিকার ব্যবস্থা না করে সম্পত্তি রাষ্ট্রায়ত্ব করা হবে বেআইনী।কিন্ত বর্তমানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে মানুষকে বিশেষ করে চাষীদেরকে ভূমিহীন করা হয় এবং বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা না করে কিছু নগদ অর্থ দিয়ে বিদায় করা হয়; যে অর্থ তাকে বা তার পরিবারকে পুনর্বাসনে ব্যর্থ হয়।অথচ তার সম্পত্তি দখল করে যে সম্পদ সৃষ্টি করা হয় তাতে তার কোন অধিকার থাকে না। এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং সংবিধান বিরোধী।

৩।গণতন্ত্র- যার ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে অনুচ্ছেদ ১১, ২৭, ২৯, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯এ এবং এই সংবিধান সম্মত নয় এমন কোন গণতন্ত্রের চর্চা বাংলাদেশে গ্রহনীয় হবে না। অনুচ্ছেদ ১১(গণতন্ত্র ও মানবাধিকার) “প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকিবে, মানব সত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হইবে এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে”। এইমর্মে স্থানীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রবর্তন না করা সংবিধানের লংঘন।

অনুচ্ছেদ ২৭ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা) “সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে এবং আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকারী”। অনুচ্ছেদ ২৯(সরকারী নিয়োগলাভে সুযোগের সমতা) “(১) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে। (২) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের অযোগ্য হইবে না কিংবা সেক্ষেত্রে তাহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না”।

অনুচ্ছেদ ৩১—(আইনের আশ্রয়লাভের অধিকার) “আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহার যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার, এবং বিশেষত: আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা,দেহ,সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে”।

অনুচ্ছেদ ৩২(জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার রক্ষণ) “আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা হইতে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না”। অনুচ্ছেদ ৩৩(গ্রেপ্তার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ) “(১) কোন গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করিয়া প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাহার মনোনীত আইনজীবির সহিত পরামর্শের ও তাহার দ্বারা আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না। (২) গ্রেপ্তাকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে—তাহাকে আদালতে আনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতীত—আদালতে হাজির করা হইবে এবং আদালতের আদেশ ব্যতীত তাহাকে তদতিরিক্ত কাল আটক রাখা যাইবে না”। উক্ত বিধিগুলো মান্য করলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা এবং বিনা বিচারে আটক রাখা উচিৎ নয়।

অনুচ্ছেদ ৩৬ (চলাফেরার স্বাধীনতা) “জনস্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে বাংলাদেশের সর্বত্র অবাধ চলাফেরা, ইহার যে কোন স্থানে বসবাস ও বসতি স্থাপন এবং বাংলাদেশ ত্যাগ ও বাংলাদেশে পুন:প্রবেশ করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে”। পার্বত্যচট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের যে কোন স্থানে জমি ক্রয় ও বসবাসের অধিকার বাংলাদেশের সকল নাগরিকের অছে।

অনুচ্ছেদ ৩৭ (সমাবেশর স্বাধীনতা) “জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে”। অনুচ্ছেদ ৩৮ (সংগঠনের স্বাধীনতা) “জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে সমিতি বা সংগঠন করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে। তবে শর্ত থাকে যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পন্ন বা লক্ষ্যানুসারী কোন সাম্প্রদায়িক সমিতি সঙ্ঘ কিম্বা অনুরূপ উদ্দেশ্য সম্পন্ন বা লক্ষ্যানুসারী ধর্মীয় নামযুক্ত বা ধর্মভিত্তিক অন্যকোন সমিতি বা সঙ্ঘ গঠন করিবার বা তাহার সদস্য হইবার বা অন্যকোন প্রকারে তাহার তৎপরতায় অংশগ্রহন করিবার কোন অধিকার কোন ব্যক্তির থাকিবে না”। ধর্ম ও সম্প্রদায়ের নামে বাংলাদেশে যে সকল সংগঠন আছে সেগুলো রাজনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হলে তা হবে অবৈধ।

অনুচ্ছেদ ৩৯ (চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাকস্বাধীনতা) “(১) চিন্তা ও বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল। (২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে—(ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের এবং (খ) সংবাদ ক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হইল”। বাংলাদেশে বিনা বিচারে আটক, হত্যা, রিমান্ড ইত্যাদি দ্বারা উক্ত গণতান্ত্রিক অধিকার সমূহ লঙ্ঘিত হচ্ছে; অন্যদিকে ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল এবং সাম্প্রদায়িক সংগঠন সমূহ কতৃক অনুচ্ছেদ ৩৮এর শর্ত ভঙ্গ করা হচ্ছে।
৪। ধর্মনিরপেক্ষতা --- যার ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে অনুচ্ছেদ ১২, ২৮, ৪১এ এবং এর বাইরে তথা সংবিধান বহির্ভূত ধর্মনিরপেক্ষতার অন্যকোন ব্যাখ্যা নিষিদ্ধ ও অগ্রহনীয়।জামায়াতের নেতারা ধর্মনিরপেক্ষতার যে সব ব্যাখ্যা দেন তাতে সংবিধানের লঙ্ঘন করা হয়।

অনুচ্ছেদ ১২(ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা) “ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নের জন্য—(ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা, (খ) রাষ্ট্র কতৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান, (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার, (ঘ) কোন বিশেষ দর্শন পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন বিলোপ করা হইবে”।এই নৈতিকতার অবস্থান থেকে “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” আসলে বিধি লঙ্ঘন করে।

অনুচ্ছেদ ২৮(ধর্ম প্রভৃতি কারণে বৈষম্য) “(১) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে। (২) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী,বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের অযোগ্য হইবে না কিংবা সেইক্ষেত্রে তাহার প্রতি বৈষম্য করা যাইবে না”। অনুচ্ছেদ ৪১(ধর্মীয় স্বাধীনতা) “(১) আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা সাপেক্ষে-(ক) প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে; (খ) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপসম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রহিয়াছে। (২) কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী কোন ব্যক্তির নিজস্ব ধর্ম সংক্রান্ত না হইলে তাহাকে কোন ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহন কিম্বা কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উপসনায় অংশগ্রহন বা যোগদান করিতে হইবে না”।

গণতান্ত্রিক( বিপ্লব নয়)পদ্ধতিতে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় বলা হয়েছে যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন,মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য,স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত থাকবে। প্রস্তাবনায় সংবিধানের মুলনীতি ব্যখ্যার পর প্রথম অধ্যায়ে অনুচ্ছেদ ৭ এ বলা হয়েছে—“(১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কতৃত্বে কার্যকর হইবে। (২) জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন; এবং অন্যকোন আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসামঞ্জস্য হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে”।

প্রস্তাবনায় বর্ণিত অঙ্গীকার এবং সংবিধানের মূলনীতি; প্রথম ভাগের ধারা ৭এ প্রদত্ত জনগণের সার্বভৌমত্ব তথা সোসিও-পলিটিকাল এবং সোসিও-ইকোনমিক ক্ষমতার মালিকানা; জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে সংবিধান সর্বোচ্চ আইন ও তার প্রাধান্য; দ্বিতীয় ভাগে প্রদত্ত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সমূহ এবং তৃতীয় ভাগে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার সমূহ সার্বিক অর্থে মহান আদর্শ সমূহ যা অর্জনের জন্য আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদের প্রাণোৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল এবং এই আদর্শ ও আকাঙ্খা সমূহ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যা সুদীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে বহু বলিদানের মাধ্যমে জাতীয় অভিপ্রায় ও আকাঙ্খারূপে সংবিধানে বিধিবদ্ধকরা হয়েছে। অতএব মুক্তিযুদ্ধের রক্তে অর্জিত এই চেতনা বাস্তবায়ন করা জাতীয় অঙ্গীককার ও সকল নাগরিকের দায়িত্বকর্তব্য। প্রতিটা রাজনৈতিক দলের জন্যও তা প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব।

কিন্তু, সংবিধানে অনেক অধিকার ও সুন্দর সুন্দর আদর্শের কথা শুধু লেখাই আছে, প্রয়োগ নেই। বরং সরাসরি সংবিধান বিরোধী নানান উদ্ভট ও ক্ষতিকারক নিয়ম কানুন এর প্রয়োগ হচ্ছে। কেন প্রয়োগ হয় না করতে দেওয়া হয় না- তা থাকছে দ্বিতীয় পর্বে। আমাদের সংবিধানের প্রায়োগিক পর্বের নীতিমালাতেই প্রচুর গলদ রয়েছে। আর যাতে গলদ নেই, সেই নিয়মের ও প্রয়োগ নেই

(চলবে)

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১১ বিকাল ৫:৩৬
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×