বাসায় ফেরার আগে শান্তিনগর বাজারে ঢুকলাম প্রয়োজনীয় কিছু কেনা কাটার জন্য। ফলের দোকানে দাঁড়ালাম কলা কিনতে। যথারীতি প্রয়োজনীয় দরদাম করে কিনলামও। হঠাৎ বেল চোখে পড়ায় একটা হাতে নিয়ে দাম জিজ্ঞেস করলাম। বিক্রেতা ছেলেটি চোখে চোখ রেখে দাম বলল। ভুল শুনেছি মনে করে থমকে গিয়ে আবার সুধালাম। সে এবারও বলল ৩৫০। তার মানে আেগে ভুল শুনিনি। নিজেকে কিঞ্চিত সামলে নিয়ে বললাম, আমিতো সবগুলি নিবোনা। একটা কত? সে আবারও বলল ৩৫০ টাকা, এক পিচই। হাতের তালুর সাইজের বেলটি তাকে ফেরত দিয়ে বললাম, ঠিক আছে, রাখ।
মাথায় রোখ চেপে গেছে, যদিও কোন প্রয়োজন নেই, তারপরও বেল কিনতেই হবে। ঘুরে ঘুরে অন্য দোকানে দাঁড়ালাম। বেলের কথা জিজ্ঞেস করতেই বেলের মত গোলাকার সবুজাকৃতির একটা হাতে ধরিয়ে দিলো। ধরে দেখি নরম, তুলতুলে। সুধালাম - এটা কি ? বিক্রেতা বলল বেল। কিছুক্ষন পাকা আমের মত নরম তুলতুলে বেল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ফেরত দিলাম বিক্রেতাকে। সে সুধালো, স্যার নিবেন না ? বললাম এটা আবার কেমন বেল? এটা খায় কিভাবে ? বিক্রেতা বলল এটা গরম পানিতে সিদ্ধ করে তারপর খায়। আমি বললাম, গরম পানিতে সিদ্ধ করে আলু খায়, ডিম খায়, আরও আরও অনেক কিছু খায় জানি, কিন্তু তুলতুলে বেল খায় তা আজ প্রথম জানলাম। থাক আমার বেল খাওয়া লাগবে না। তুমি রাখ। এটা বাসায় নিয়ে গেলে সবার হাসির পাত্র হবো এটা নিশ্চিত। তা ভাইজান বলেনতো এটা এরকম কেন ? সে বলল এটা কাঁচা বেল। আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম, ও তাহলে এই কান্ড ! দাম বেশী দেখে গাছ থেকে পেড়ে যা পাওয়া গেছে তাই নিয়ে এসেছে। তাই বলে টেনিস বল সাইজের একটা বেল ৩৫০ টাকা এটা কোন ভাবেই মানতে পারছিলাম না।
পরের দোকানে গিয়ে আবার বেল চাইলাম। বিক্রেতা নেই বলাতে তাকেই জিজ্ঞেস করলাম, একটা হাতের তালুর সাইজের বেলের দাম বেশী হলে কত হতে পারে ? সে হাসি দিয়ে বলল, আপনার কাছে; কত চাইসে ? বললাম, আপনিই বলেন কত হতে পারে ? সে হাসি দিয়ে বলল, ৪০০ টাকা ? আমি বললাম না ৫০ টাকা কম।
বাসায় এসে আব্বুকে বললাম বিষয়টা, উনি বললেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের দুর্গাপুজোর আবশ্যিক উপকরণ এই বেল্। আমরাতো জাতি হিসেবে খুব বেশী ধর্মভীরু, তাই রমজানের সময়কার খদ্যদ্রব্যের মতই এখনও একই কাজ করেছি.............