তারপর ট্রেনিং নিয়ে ফেরার পর তাদের ছয় বন্ধুর উপড় দায়িত্ব পরে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের কাটাখালি নদীর উপড় যে ব্রিজটা আছে (বর্তমানে গাইবান্ধা জেলার অর্ন্তগত) সেটি উড়িয়ে দেবার। হাইকমান্ড থেকে নির্দেশ পাবার পর প্রয়োজনীয় বিস্ফরক তারা ভাল করে প্যাক করে নিয়ে গভীর রাতে তারা নদীতে নেমেপরে। তারপর মাথার উপড় কচুরিপানা দিয়ে ধীরে ধীরে ব্রিজের দিকে এগুতে থাকে। ব্রিজের উপড় তখন পাকি আর্মি আর রাজাকারদের নিয়মি টহল। নদীর পাশে তখন পাট ধোয়ার পর অনেকগুলো পাটখড়ির স্তুপ করা ছিল। পাকি আর্মি আর রাজাকারদের চোঁখকে ফাকি দিয়ে তারা ছয়জন তিন ভাগ হয়ে এক একটি পাটখড়ির স্তুপের মধ্যে দুই জন করে ঢুকে পড়ে। অপেক্ষা করতে থাকে সুযোগের। কিন্তু ভাগ্য সহায় না থাকায় সুযোগ বুঝে বের হবার সময় দেখে ফেলে পাকি আর্মি। এর পর শুরু হয় বৃষ্টির মত গুলি বর্ষন। আব্বুর পাশের বন্ধু তখনি গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে। সেদিন সে তার আহত বন্ধুকে কাধে করে দুই কিলোমিটার রাস্তা বয়ে নিয়ে আসে। যদিও আব্বুর কাঁধেই মারা যায় সে। সেদিন সে তার খুব কাছের দুই বন্ধুকে হারায়। এই বাংলা মায়ের জন্য সেদিন তার দুই সন্তান বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে শহীদ হয়ে যায়।
আব্বুর কাছে এই গল্প শোনার পর তার মত কঠিন মানুষের চোখে যে পানি দেখেছিলাম তারপর কোনদিন আর তার কাছে ৭১ সম্পর্কে জানতে চাইনি। কোন এক অজানা কারনে উনি কোনদিন মুক্তি যোদ্ধার সার্টিফিকেটও আনতে যাননি।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০০৭ ভোর ৫:৪৯