হ, জানিতো। একটু পরে ১২ টা বাজবো। ২১ তারিখ শুরু হইবো। শহীদ মিনারে যাইবা। দুইডা ফুল দিয়া আইবা। সকাল বেলায় গান গাইবা। এই তো নাকি? তার পরে নাক ডাইকা ঘুমাইবা, ঘুম থেইক্যা উইডা প্রেমিকারে লইয়্যা ঘুরতে যাইবা। আর কিছু কইবা??
না আর কওনের কিছু নাই। এই কামইতো করবা। আমি যদি জিগাই তোমারে কও দেখি বাছা, কয়জন ভাষা সৈনিক এর নাম হাতে গইনা। উত্তরে কইবা, সালাম, জব্বার, বরকত, রফিক আর গাফফার।
কেন আর কাউরে চিন না? বাবা বই খাতাতো পড়িনা। আর নাম জানি না। এগোরে তো দেহি নাই। ছবি দেখলে চিনতেও পারমু না।
বাহ! বাহ! বাহ! বাঙালী।
তোরা করলি আমায় কাঙ্গালী।
কি আর কইমু তোগো, দুই লাইন গান গাবি, নতুন পাঞ্জাবি পইরা মিনারে যাবি। মুখোবই এ বালিকাদের সাথে ফটু দিবি । লগে চেক ইন হইবো শহীদ মিনার। লাইকে লাইকে লালায়িত হইবে তোমার ফটুর নিচের বাটন খানি। এই আমাগো তাদের সম্মান দেহানোর সীমা খানি।
কেনরে বাঙালী,
আসে না কেন তোর চোখে জল একটু খানি?
তারা কি তোর ভাই ছিল না!
তবু কেন আজ ৬৫ বছর পরেও
তাদের চিনস না?
তোরা গান গা, তোরা ফুল দে,
আমি ঘুমাবো, আমায় জালাতন করিসনে
আমায় একটু খানি কাঁদতে দে!
আমায় নাম গুলো মনে করতে দে..
ওরা জানি কজন ছিল?..
১)আতাউর রহমান খান।
২)আব্দুস সালাম।
৩)আবুল কালাম শামসুদ্দিন।
৪)তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া।
৫)ওসমান আলী।
৬)শওকত ওসমান।
৭)সিকান্দার আবু জাফর।
৮)মোহাম্মদ আবুল হাই।
৯)শামসুল হক।
১০)সৈয়দ আতিকুল্লাহ্।
১১)হালিমা খাতুন।
১২)আবু জাফর ওরায়দুল্লাহ্।
১৩)জহীর রায়হান।
১৪)গোলাম মর্তূজা।
১৫)সাঈদ শামসুল হক।
১৬)মোহাম্মদ মোকাম্মেল।
১৭)আনিসুজ্জামান।
১৮)কে জি মুস্তাফা।
১৯)জিল্লুর রহমান।
২০)আব্দুল গফুর।
২১)আহমেদ রফিক।
২২)মোহাম্মদ আবুল কাশেম।
২৩)গোলাম মাওলা।
২৪)আব্দুস ছামাদ আযাদ।
২৫)কালিম সারাফি।
২৬)মোহাম্মদ তোহায়া/তোহা।
২৭)কামরুদ্দিন হোসাইন ছহুদ।
২৮)ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্।
২৯)মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী।
৩০)দীরেন্দ্র নাথ দত্ত।
৩১)শহীদুল্লাহ্ কায়সার।
৩২)মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী।
৩৩)মোহাম্মদ সুলতান।
৩৪)অলী আহাদ।
৩৫)শামসুর রাহমান।
৩৬)উষা বেপারী।
৩৭)আব্দুল্লাহ আল মুতি।
৩৮)জুলমত আলী খান।
৩৯)মুহাম্মদ আলী আসগর।
৪০)এস এ বারী এ টি
৪১)আব্দুল লতিফ।
৪২)ইশতিয়াক আহমেদ।
৪৩)এম আর আখতার মুকুল।
৪৪)আনোয়ারুল হক খান।
৪৫)বাহাউদ্দিন চৌধুরী।
৪৬)ডাঃ কাজী মোতাহের হোসেন।
৪৭)বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।
৪৮)মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ।
৪৯)আবুল হাশেম।
৫০)মুনীর চৌধুরী।
৫১)তাজুদ্দিন আহমেদ।
৫২)সর্দার ফজলুল করিম।
৫৩)মুস্তাফা নুরুল ইসলাম।
৫৪)কাজী গোলাম মাহবুব।
৫৫)রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া।
৫৬)আব্দুল আলম।
৫৭)মোশাররফ হোসাইন চৌধুরী।
৫৮)মীর হোসাইন আহমেদ।
৫৯)মাহবুব আলম চৌধুরী।
৬০)আতাউর রাহমান।
৬১)আব্দুল মোমিন।
৬২)আব্দুল মতিন।
৬৩)ফকির শাহাবুদ্দীন।
৬৪)ফজলে লোহানী।
৬৫)গাজীউল হক।
৬৬)গোলাম আযম।
৬৭)এম এ আজমল হাসাইন বুলবুল।
৬৮)আলতাফ মাহমুদ।
৬৯)সুফিয়া করিম।
৭০)মমতাজ বেগম।
৭১)হাসান হাফিজুর রহমান।
৭২)শফিয়া খাতুন।
৭৩)নিজামুল হক।
৭৪)আমিনুল ইসলাম।
৭৫)সাদেক খান।
৭৬)আব্দুল গফ্ফার চৌধুরী।
৭৭)মুর্তাজা বশির।
৭৮)এস এম নুরুল ইসলাম।
৭৯)সুফিয়া আহমেদ।
আরো আছে নাম না জানা অনেক ভাষা সৈনিক।
এই দিনের ১৯৫২ সালে বাংলার প্রতিটি মানুষের রক্তের মাঝে জেগে উঠেছিল প্রতিবাদের আগুন। মা কে মা বলার অধিকার আদায়ের শপথ। আমার কষ্ট হচ্ছে, সত্যি কষ্ট হচ্ছে। যখন দেখি আমাদের এই সৈনিকদের আজো আমরা পাপ্য মর্যাদা দিতে পারছি না। আমদের স্কুল , কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী গুলো দু চার জনের নাম ছাড়া, কিছু গান গাওয়া, ফুল দেওয়া ছাড়া আর কিছুই জানে না।একুশ আমাদের প্রেরণা, একুশ আমাদের অহংকার। একুশ আমাদের জীবন্ত ইতিহাস। প্রতিটি ভাষা সৈনিক এর জন্য মনের গহীন থেকে জানাই শ্রদ্ধা আর ভালবাসা। তাদের এই ত্যাগ এর মূল্য দেবার মত ক্ষমতা আমাদের নেই।
ভালবাসি তোমাদের। সত্যি ভালবাসি।
আমি কুঞ্চিত, লজ্জিত, মর্মাহত, আষ্টেপৃষ্ঠে জর্জরিত। আমি কথা কমু না। তোরা গান গেয়ে যা।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৬