somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এপ্রিল ফুল - একটি অসাধু ঐতিহ্য

৩১ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১লা এপ্রিল- এমন একটি দিন যেদিন অনেক মানুষই বিনোদনের নামে মিথ্যা বলে, হাসি-ঠাট্টা করে আর অপরের সঙ্গে ব্যঙ্গ-তামাশা করে। জানা যায় যে, মিথ্যা বলার এ কুৎসিত অনুকরণটি, যাকে অনেকেই শুধুমাত্র সামান্য রসিকতা বলে বিবেচনা করেন, একদা প্রচুর মানুষের জীবনের বিশাল ক্ষতি সাধন করেছিলো। তবুও এই অসাধু ঐতিহ্য শুধুমাত্র যে কিছুসংখ্যক লোকজন দ্বারা পালিত হয় তা নয়, বরং আজকাল ১লা এপ্রিলে কিছু পত্রিকা ও ম্যাগাজিন মিথ্যা সংবাদ ও অসত্য গল্প প্রকাশ করার মাধ্যমে এতে অংশ নিয়ে থাকে।

অনেকেই এর উদ্ভব সম্পর্কে অনেক তথ্য বলেন, আমরা সেসবে যাচ্ছিনা, আমাদের মুসলিমদের জন্যে যে বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো এই ঐতিহ্যটি ইসলামিক শিক্ষা ও নৈতিকতার সরাসরি বিরুদ্ধাচারণ।

কেননা মিথ্যাচার কপটতার (মুনাফেকী) একটি খাস বৈশিষ্ট্য এবং আল্লাহর রসূল (স.) যে কোন কারণেই হোক মিথ্যা বলাকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি (স.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং শেষ দিবসের ওপর বিশ্বাস রাখে সে যেন হয় ভালো কথা বলে নচেৎ চুপ থাকে।" {সহীহ বুখারী}

অধিকন্তু, তিনি (স.) বিশেষ করে তাদের লানত করেছেন যারা নিছক লোক হাসাবার জন্যে মিথ্যাচার করে। তিনি (স.) বলেছেন, "দুর্ভাগ্য তাদের ওপর যারা অপরকে হাসাবার জন্যে মিথ্যা কথা বলে, দূর্ভাগ্য তাদের ওপর।" {আবূ দাঊদ}

উপরের হাদীসটি আমাদের এপ্রিল ফুল নামক মিথ্যা প্রথায় অংশগ্রহণের গভীর পরিণতি সম্পর্কে জানিয়ে দিচ্ছে, যাকে পশ্চিমা সংস্কৃতি একাধারে মূল্যায়ণ ও উৎসাহিত করে এই দাবীতে যে, এটা আনন্দ ও মজা এনে দেয়। কিন্তু মুসলিম মাত্রই মনে রাখতে হবে যে, মিথ্যা বলা এবং প্রতারিত করাকে নবী (স.) নিষিদ্ধ করেছেন যদিও তা এ নিয়তে হয় যে তা মানুষকে মজা দেবে।

আব্‌দ আল-রহমান ইবনে আবি লায়েলা বলেন,
রসূল (স.)এর সাহাবীগণ আমাদের বলেছেন যে, তারা রসূল (স.)-এর সঙ্গে ভ্রমনে ছিলেন। তাদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি ঘুমিয়ে পড়েন আর তাদের কয়েকজন গিয়ে ঐ (ঘুমন্ত ব্যক্তির) তীরগুলো নিয়ে নেন। যখন সে জেগে উঠল, সে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে গেলো (তার তীরগুলো হারিয়ে যাবার কারণে) এবং মানুষেরা হাসতে লাগলো। নবী (স.) বললেন, "তোমরা কি নিয়ে হাসছো?" তারা বললেন, "তেমন কিছু না, আমরা কেবল তার তীরগুলো নিয়েছিলাম আর সে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে গেছে।" রসূল (স.) বললেন, "একজন মুসলিমের জন্য অপর মুসলিমকে ভয় দেখানো নিষিদ্ধ" {আবূ দাঊদ (৫০০৪) ও মুসনাদ আহমদ} [শেখ আলবানি তার সহীহ আল-জামীতে (৭৬৫৮) একে সহীহ বলেছেন]

রসূল (স.) মিথ্যাবাদীর জন্য কঠোর শাস্তির বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, "আমি দেখলাম (স্বপ্নে) যে, দুজন মানুষ আমার কাছে এলো।" এরপর নবী (স.) তার স্বপ্নের বর্ণনা দিলেন। "তারা বললো, 'সে লোকটি, যার গাল চিড়ে ফেলা হচ্ছে দেখলেন (তার মুখ থেকে কান পর্যন্ত), সে একজন মিথ্যাবাদী ছিলো, সে মিথ্যা কথা বলতো আর মানুষ তার সূত্রে সে মিথ্যাকে দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতো। সুতরাং সে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত এভাবেই শাস্তি পেতে থাকবে।'" {সহীহ আল-বুখারী, ভলিউম ৮, হা/১১৮}

আল্লাহ তায়ালা আমাদের এসব অসদাচরণকে প্রশ্রয় দেয়া থেকে রক্ষা করুন ও তাদের এসব অনুকরণ থেকে বেঁচে থাকবার তৌফিক দান করুন যারা আমাদের মুসলিম সমাজকে এর দ্বারা দূষিত করতে চায়।

হে আমার ভাই/বোনেরা, প্রবঞ্চনামূলক এ ঐতিহ্য এড়িয়ে চলুন, নিজেদের গুনাহে লিপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করুন।

আমীন!!

* ভাই আদিল ইবনে মঞ্জুর খান (ভারত থেকে)-এর পাঠানো ইমেইল থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী।
** এ লেখাটি যে কেউ কোনো পূর্বানুমতি ছাড়াই তাদের ব্যক্তিগত বা গ্রুপ সাইটে বা ইন্টারনেটের যে কোনো জায়গায় প্রচার করতে পারবেন এবং যে কোন অলাভজনক প্রকাশনায় প্রকাশ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে লেখকের নাম/লিংক প্রকাশ করা কোনো শর্ত নয়। মহান আল্লাহ তায়ালা জানেন আমরা কে কি করছি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:১৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×