somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় (৪র্থ পর্ব)

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হসপিটালের ওয়েটিং রুমে একটা ছেলের হাত ধরে বসে আছে নিপা। ছেলেটা আমার বয়সী হলেও দেখতে আমার থেকে হাজার গুণ সুন্দর ও স্মার্ট। গায়ের রং ফর্সা, উন্নত জেল দিয়ে চুল স্পাইক করা, আর কাছে ঘেষতেই নাকে ভেসে এলো সেক্সি পারফিউমের ঘ্রাণ। স্কিন টাইট গেঞ্জি হওয়ায় ছেলেটার পেটের ৬ টা প্যাক স্পষ্ট গোনা যাচ্ছে! তবে আশ্চর্যের ব্যাপার এটাই যে এই ছেলে নামাজ পরে! কপালের কালো দাগ তার স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে। সাধারণত জিম করা সিক্স প্যাক ওয়ালা ছেলেরা এত কষ্ট করে শরীর তৈরি করে কেবলমাত্র একটি মেয়ের জন্য নয়!! কিন্তু এই ছেলে যেভাবে নিপার শরীর থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে তাতে করে তাকে মোটেও দুশচরিত্র বলা সমীচীন হবেনা।
-"নাঈম ভাই, ওর নাম এ্যাপেল, আমার বন্ধু, এক সাথেই পড়াশোনা করি আমরা"
ছেলেটার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিল নিপা, আমি এ্যাপেলের দিকে হাত বাড়িয়ে বললাম -
-"হাই আপেল, আই এম নাঈম, নাঈম ফয়সাল"
-"হাই ব্রো ... নাইচ টু মিট ইউ" বলল আপেল নামের ছেলেটা।
ব্রো শব্দটা শুনলেই গা জ্বলে যায় আমার!! এটা কোন সভ্য জাতির ভাষা হলো? ব্রাদার শব্দটাকে কেন ব্রো বলতে হবে? ব্রাজিল কে কেন ব্রা বলতে হবে? সিস্টার কে কেন সিস বলতে হবে!! আর তাছাড়া ব্রো, সিস বলা মানুষ গুলো আমার পছন্দও না। আমি আহ্লাদে গদগদ হয়ে বললাম -
-"মি অলসো, মি অলসো"
নিপা আমার দিকে কেমন একটা সরু দৃষ্টিপাত নিক্ষেপ করে বলল -
-"এ্যাপেল কে তোমার কেমন লাগলো নাঈম ভাই?"
আমি বললাম -
-"আমাকে কিছু টাকা ধার দিতে পারবি? আজ ১লা অক্টোবর বিশ্ব প্রবীণ দিবস, ভাবছি সারাদিন কোন এক বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে কাটাব, কিন্তু পকেটে একদম টাকা নেই!!"
নিপা যেন খুব হতাশ হল!! আপেল আমার দিকে তাকিয়ে আছে হা করে!! যেন কোন মেয়ের কাছে টাকা ধার চেয়ে আমি ভিষণ অন্যায় করে ফেলেছি। নিপা সুকৌশলে ব্যপারটা এড়িয়ে গিয়ে বলল -
-"কত লাগবে?"
**************************
নিপার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে মামা, মামী ও বকুলের সাথে দেখা করে রাস্তায় বের হলাম। বের হবার সময় অবশ্য আপেল সাহেব কে দেখলাম না কোথাও। নিপা হয়তো বিদায় করে দিয়েছে তাকে !! যেজন্য তাকে আনা হয়েছিল সে স্বার্থসিদ্ধি হয়নি বোধহয়!!
৬০-৭০ বছরের এক রিকশাচালকে দাড় করিয়ে বললাম
-"চাচা ভালো আছেন?"
-"হ, ভালা! কই যাইবেন?"
-"বৃদ্ধাশ্রম"
-"ভাড়া ৪০ টাকা"
-"ঠিক আছে, কিন্তু চাচা আমার মাজায় খুব বাতের ব্যথা!! ডাক্তার বলছে মাঝে মাঝে রিকশা চালালে নাকি ঠিক হবে!! আপনি পিছনে বসেন, আমি চালাই"
রিকশাচালক অবাক হয়ে বলল -
-"কি কন? আপনি পারবেননি চালাইতে?"
-"আপনি এই বয়সে যদি পারেন আমি পারবো না? অবশ্যই পারব, আপনি পেছনে বসেন।"
বলে রিকশাওয়ালা চাচা কে পিছনে বসিয়ে আমি চালানো শুরু করলাম। বেশিনা মাত্র ১৫ থেকে ২০ প্যাডেল মারার পর শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কোনায় কোনায় যা অনুভব করলাম তাতে নিজের প্রতি একটু হলেও ঘৃণা জন্মালো এই ভেবে যে, ষাটোর্দ্ধ প্রবীণ বৃদ্ধ রিকশাচালকদের দিয়ে কি সুখেই না আমরা রিকশাভ্রমন করি!! একটু পরেই শরীরের ঘাম গুলো টপটপ করে পরছে আর আমাকে একটু একটু করে পাপ মুক্ত করছে। অন্তত একদিনের জন্য হলেও তাদের একজন হতে পেরে শান্তি শান্তি লাগল, কেননা আমিও তো একদিন বৃদ্ধ হব, চোখের সামনেই যেন নিজের প্রবীণ রূপটা দেখতে পেলাম। কি অসহায় ... কি মর্মান্তিক ...!!! দেখে বুকের মধ্যে কেমন হুহু করে উঠলো।
একটা রেস্টুরেন্ট থেকে এক প্যাকেট বিরানী আর একটা কাপড়ের দোকান থেকে একটা নতুন লুঙ্গি আর পানজাবী কিনে দিলাম রিকশাওয়ালা চাচার হাতে । কে জানে, আমি যেদিন প্রবীণ হব সেদিন হয়তো একটা গামছা কিনে দেয়ার মত লোকও আমি পাবোনা। আর তার সাথে দিলাম ৪০ টাকা রিকশা ভাড়া, এবং প্রবেশ করলাম বৃদ্ধাশ্রমে।
প্রায় ২৭ একর জমির উপর নির্মিত এই বিশাল বৃদ্ধাশ্রমটি এক অপরূপ মনোরম পরিবেশের নিদর্শন বটে। ভিতরে ছোট ছোট ফুলবাগান, হরেকরকমের গাছ আর হাজার পাখির কলতানে মুখরিত সব সময়। ভিতরে ঘুরে ঘুরে অবাক হয়ে দেখছি বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের কার্যকলাপ। দেখলাম বিশ্ব প্রবীণ দিবস উপলক্ষে সেখানেও ছোটখাটো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক। একটু দুরেই দেখলাম ৪ জন বৃদ্ধ এক জায়গায় বসে গল্প করছে। সেখানে গিয়ে আমিও বসলাম তাদের সাথে, তাদের থেকে খানিকটা দূরে। লক্ষ্য করলাম তাদের ভিতরে একজন বার বার ঘড়ির টাইম জানতে চাচ্ছে। ফলে বিরক্ত হয়ে আরেকজন উত্তর দিল -
-"বার বার সময় দেখে কি হবে ভাই? গত ৪ বছরে তোমার ছেলে এসেছে কখোনো তোমাকে দেখতে? তবে আর কেন মিছে মিছে পথ চেয়ে আছো শুনি? আর এখন তো তুমি একেবারেই চোখে দেখনা, ছেলেকে তো চিনতেও পারবেনা!!"
বুঝলাম লোকটা চোখে দেখেনা। সম্ভবত বয়স আশির কোঠায় পরায় চোখে ছানি পরেছে। শুনলাম লোকটা তার প্রতিউত্তরে বলল -
-"কে বলেছে চিনতে পারবো না? আমার খোকার গায়ের ঘ্রাণ আমি চিনবোনা? ঠিক চিনবো"
-"বলি খোকা আসলে তবেই তো তাকে চিনবে নাকি ?"
-"আসবে, আসবে ... আমার মন বলছে আসবে"
বলে লোকটা কেমন যেন একটু খানি হাসলো। আমি আস্তে করে লোকটার পাশে গিয়ে বসলাম, এবং বাকি তিনজন কে ঈশারা করলাম চুপ থাকার জন্য। তারপর অবাক হলাম, যখন দেখলাম লোকটা হঠাৎ বলে উঠলো -
-"খোকা এসেছিস? খোকা এসেছিস?"
বলে হাতরে হাতরে আমার গায়ে মুখে হাত বোলালো। আমি চমকিয়ে উঠে কেমন যেন এক অদ্ভুত শিহরণ অনুভব করলাম। কোনরকমে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম -
-"হ্যাঁ বাবা, আমি এসেছি!!"
সাথে সাথে লোকটা আমায় তার বুকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলো, আমার সারা গায়ে হাত বুলিয়ে চোখে মুখে চুমু খেতে লাগলো ...!! আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলছে - এই লোকটার সন্তান দুনিয়ার যে প্রান্তেই থাকুক, যে সুখের জন্য সে তার জন্মদাতা বাবাকে এখানে ফেলে গেছে, সেই সুখ সে পাবে ....! পেট ভরে পাবে ...!!!
সামনে বসে থাকা বাকি তিনজন তাদের চোখের পানি মুছতে থাকলো।
গল্পটা একজনের নয়!! গল্পটা এখানে আশ্রিত প্রত্যেক বৃদ্ধ বৃদ্ধার। একই গল্প পৃথিবীর সমস্ত প্রবীণদের!! আজ আমরা যারা জোয়ান তারা কেউ একবারও ভাবিনা আমাদেরকেও একদিন এই স্টেজটা পার করতে হবে। অতি অসহায় ও নিস্বঙ্গ একটা স্টেজ। খুব কষ্ট আর বিভীষিকাময় একটা জীবন। অথচ আমরা সন্তানেরা ইচ্ছা করলেই তাদের এই বৃদ্ধ জীবন টাকে করে তুলতে পারি আনন্দময়। আমার খুব ইচ্ছা করছে পৃথিবীর সমস্ত অসহায় প্রবীণদের বুকে ঝাপিয়ে পরতে, আর চিৎকার করে বলতে -
"আমি এসেছি বাবা, আমি এসেছি, আমি তোমার কুলাঙ্গার সন্তান বাবা ... আমি এসেছি গো মা ... তোমার গর্ভের সবচেয়ে নিকৃষ্ট সন্তান আমি এসেছি ... আমায় পাপের প্রায়শ্চিত্ত্ব করার সুযোগ দাওগো মা ... ক্ষমা করো আমায়"

*****************************************

কিছু কিছু স্বপ্ন থাকে চরম বেয়াদব! স্বপ্নের মধ্যেই আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি স্বপ্ন দেখছেন, অথচ সব বুঝেও আপনার কিছু করার থাকবেনা। যেমন ধরুন আপনি স্বপ্নে দেখছেন যে, বিশাল বড় কোন পাহাড় অথবা অট্টালিকার উপর থেকে আপনি পরে যাচ্ছেন, শরীর ও মনের মধ্যে চরম উৎকন্ঠা ও ভয় অনুভব করছেন, যদিও আপনি জানেন যে এটা স্বপ্ন, এবং পরে গেলেও আপনার কিচ্ছু হবেনা! তবুও বুজতে পারা স্বত্বেও চেয়ে চেয়ে স্বপ্নটার শেষ না দেখা পর্যন্ত আপনার কিছুই করার থাকেনা। তারপর হঠাৎ বুক ধরফরানি নিয়ে ঘুম থেকে উঠি বসা এবং ঢকঢক করে পানি খাওয়া।
কিন্তু এই মূহুর্থে যে স্বপ্নটা আমি দেখছি সেটা শুধু বেয়াদবই না বরং চরম ছ্যাঁছরা ও ত্যাদোর টাইপের। ঢের বুজতে পারছি চোখের সামনে যা কিছু ঘটে চলেছে তা সবই নিছক স্বপ্ন মাত্র, তবুও চেষ্টা করেও ছাড় মিলছে না!! স্বপ্নের পুরো অংশ টুকু আমাকে দেখতেই হবে। কয়েকবার যে ঘুমের মধ্যেই মুচরামুচরি করে স্বপ্ন ভঙ্গের চেষ্টা করিনি তা কিন্তু নয়, বরং যতই চেষ্টা করেছি ঘুম ভেঙে উঠে পরার, ততই যেন কেউ একজন আমার ঘার ধরে বলছে -
"কোথায় যাচ্ছিস চাঁদু? এত কষ্ট করে এমন একটা এপিসোড তৈরী করলাম, পুরোটা দেখে যা চাঁদু!! বলাতো যায়না, ভোরের স্বপ্ন বলে কথা!! ভবিষ্যতে তোর সাথে এমনটা ঘটতেও পারে!!!"
অগত্যা শরীর, মন কে ছেড়ে দিলাম। যা হয় হবে, এর শেষ দেখে তবেই দম নেব এবং প্রাণ ভরে পানি খাবো। বড্ড পানি তেষ্টাও পেয়েছে বটে। আশ্চর্য!! পানির কথা মনে হতেই মনে পরল মাথার কাছেই এক বতল পানি আছে!! কিন্তু তার পরেও স্বপ্নটা ভাংলো না, বা এতটুকু ঝাপসাও হলনা!! তাও আবার যে সে স্বপ্ন নয়, রীতিমতো বিতর্কিত ও বিব্রতকর স্বপ্ন!! এধরনের স্বপ্ন দেখার কোন প্রশ্নই ওঠেনা!! কেননা আমার জানামতে আমাদের সাবকনসাস মাইন্ড বা অবচেতন মনের কল্পনা থেকেই স্বপ্নের সূত্রপাত। অথচ এই ধরনের কল্পনা আমার চেতন বা অবচেতন মন কক্ষনোই করেনি। এ তো রীতিমতো আমাকে ফাঁসানোর জন্য এক গভীর ষড়যন্ত্র!!! বলতেও লজ্জা লাগছে আমার।
দেখলাম - কয়েকজন ধর্ষকের সাথে একটা বাড়িতে ঢুকেছি কয়েকটা মেয়েকে ধর্ষণ করতে!! ধর্ষক গুলোকে আমি চিনিনা বা কোনদিন দেখিওনি, অথচ তাদেরই একজন হয়ে গভীর রাতে অপরিচিত এক বাড়ির প্রাচীর টপকাচ্ছি!! তারপর ধীরে ধীরে ঘরের দরজা কেটে ভিতরে ঢুকে দেখলাম তিনটা মেয়ে ঘুমিয়ে আছে। তারপর আমার সাথের ধর্ষকবৃন্দ মেয়ে তিনটার উপর ঝাপিয়ে পরল!! আমি কি করবো বা করা উচিৎ ভেবে পেলাম না। এর ঠিক সাথে সাথেই কোথা থেকে ২ গাড়ি পুলিশ এসে পুরো বাড়ি টাকে ঘিরে ফেলল। প্রচন্ড ভয় আর আতঙ্কে আমি কুঁকড়ে গেলাম। মানুষ কেবলমাত্র স্বপ্নেই নিজেকে দেখতে পায়। আমিও দেখলাম খাটের তলায় গুটিসুটি মেরে লুকোচ্ছি আমি। তার কিছুক্ষণ বাদে আমি ও আমার সহকর্মীরা যথারীতি ধরা পরলাম পুলিশের হাতে। এবং আমাদের মাজায় দড়ি বেধে একে একে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে আসা হল। তারপর থানার একটা বিশেষ সেলে এনে আমাদের পায়ে দড়ি বেধে উল্টো করে ঝুলানো হল। ঝুলন্ত অবস্থায় আমি আমার পাশে ঝুলে থাকা অন্য ধর্ষক কে বললাম -
-"ভাই, আমরা তো স্বপ্ন দেখছি তাইনা?"
লোকটা চোখমুখ পাকিয়ে বলল -
-"ফাইজলামি করেন মিয়া?"
-"না ভাই, ফাজলামি করবো কেন? এটা তো ফাজলামি করার জায়গা না। প্লিজ ভাই বলুননা আমরা স্বপ্ন দেখছি কিনা? আমি খুব টেনশনে আছি!!"
-"প্রথম প্রথম স্বপ্নই মনে হয় মিয়া, একটুপর যখন প্যাদানি খাবেন তখন বুইঝেন স্বপ্ন না সত্যি"
আমি ঢোক গিললাম! মাথাটা ঝিমঝিম করে উঠলো! তবে কি স্বপ্ন নয়? সব সত্যি?
আমি আবারো বললাম -
-"আচ্ছা ভাই, আমি তো আপনাদেরকে চিনিনা, তাহলে আপনাদের সাথে আমি কেন গেলাম ধর্ষণ করতে?"
-"কারণ আপনিও আমাদের মত একজন তাই"
-"না, আমি মোটেও আপনাদের মত ধর্ষক নই!!"
লোকটা তার কালো বিচ্ছিরি দাত গুলো বের করে হো হো করে হেসে বলল -
-"সুন্দরী মাইয়া দেখলে ভাল্লাগে?"
-"জ্বী লাগে"
-"নিজের বউ বাদে অন্য মহিলাদের বেশি সুন্দর লাগে?"
-"জ্বী লাগে তো!!" (যদিও আমার বিয়ে হয়নি এবং স্বপ্নের ভিতরে সেসব মনেও নেই)
-"রাস্তাঘাটে, বাজারে বন্দরে, বাসে লঞ্চে চলাচলের সময় অন্য মহিলার স্পর্শে অন্যরকম অনুভুত হয়না?"
-"হ্যাঁ হয়তো!!"
-"পতিতালয় বা নিশিদ্ধ পল্লীতে যাওয়ার বাসনা ভুলেও কখোনো মনের কোনায় উকি দিয়েছে কি?"
-"ইয়ে ... মানে ... হ্যাঁ দিয়েছে তো, কিন্তু কেন?"
-"গোপনে পর্নো ভিডিও দেখেননি কোনদিন?"
-"হু দেখেছি"
এবার লোকটা চোখ দুটো ডাগাডাগা করে বলল -
-"এর পরেও নিজেকে ধর্ষক মনে হয়না??? আপনিও ধর্ষক!! একজন ধর্ষকের সমস্ত গুনাবলী আপনার ভিতরেও বিদ্যমান!! আপনার আর আমাদের ভিতরে খুব বেশি তফাৎ নেই। যতদিন নিজের মন কে পাপমুক্ত করতে না পারবেন ততদিন নিজেকে সাধু বলবেন না খবরদার!! আপনারা হলেন মুখোশধারী ধর্ষক!!"
যুক্তিসঙ্গত কথা, তাই আর তর্কে না জড়িয়ে চুপ করে থাকলাম। এরপর দেখলাম গুলশানের সেই ওসি সাহেব একটা বড় গরুর ইনজেকশন নিয়ে ঘরে ঢুকলো!! সুই টা চকচক করছে, সাথে সাথে ঝিলিক মারছে ওসি সাহেবের ৩২ পাটী দাতও। আমার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে আর বলছে -
-"সেদিন তরে সায়েস্তা করতে পারি নাই!!! আইজ পাইছি!! এই সুই তোর পিছ দিয়া ঢুকামু"
ভয়ে আমার গায়ের লোম গুলো দাড়িয়ে গেল। কি জঘন্য হাসি ওসি সাহেবের!! তিনি সত্যি সত্যি ধীরে ধীরে আমার কাছে এসে সপাং করে সুইটা গেথে দিলেন আমার পশ্চাদদেশে!! কিন্তু আশ্চর্য!! সুই ঢোকানো ব্যাথাটা পেলাম ঠিকই কিন্তু সেটা পশ্চাদদেশে নয়, আমার ডান কানের লতিতে। ব্যস ... অবশেষে স্বপ্ন ভাংলো এবং উঠে বসে পানির বোতলটা হাতে নিয়ে ঢকঢক করে খাওয়া শুরু করলাম, এবং কানে হাত দিয়ে দেখি একটা লাল পিপরে কামড়ে ফুলিয়ে দিয়েছে!!!
আস্তে আস্তে মনে পরল সব। মনে পরল গতকাল বৃদ্ধাশ্রমে বুড়ো বুড়িদের সাথে অনেক আনন্দ ফুর্তি করে তাদের সাথেই ঘুমিয়ে পরেছিলাম। আর স্বপ্নটার কথা মনে পরতেই বিব্রত হলাম!! কেননা স্বপ্নের ভিতরেই নিজের গুপ্ত দোষ গুলো স্বীকার করে ফেলেছি!! যাক আর কেউ তো জানেনা, ভেবে হাই তুলতে তুলতে ওয়াশরুমের দিকে এগোতেই ফোনটা বেজে উঠলো!! সাথে সাথে আবারো মনে পরে গেল যে আমার একটা ফোন আছে!!
-"হ্যালো আসলামু আলাইকুম"
-"ওয়ালাইকুম আসসালাম"
-"কে বলছেন?"
-"জ্বী, আমি হাফিজ ভাই বলছি"
-"কোন হাফিজ?"
-"আপনি গতকাল সকালে যে অফিসে জয়েন করলেন, আমি সেই অফিসের জিএম হাফিজুর রহমান"
-"ওহ সরি স্যার, চিনতে পারিনি! ভালো আছেন?"
-"আপনাকে বলেছি আমাকে স্যার বলবেন না!! আর আমি ভালো নেই!! একদম ভালো নেই!! একটা প্রশ্ন আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছে!! যে প্রশ্নের উত্তর একমাত্র আপনার কাছে!! প্লিজ আমাকে উদ্ধার করুন!!"
-"জ্বী প্রশ্নটা বলুন?"
-"আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় তো অনেক প্রখর!! আপনিই অনুমান করে বলুন"
আমি একটু চুপ থেকে বললাম -
-"উমমমম, আপনার স্ত্রী কেন আপনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন সেটা জানতে চান, তাইতো?"
-"ঠিক তাই, আসলেই আপনি সুপার সৃষ্টি!! বলুন কোথায় আছেন? আমি গাড়ী পাঠিয়ে দিচ্ছি।"
-"ধন্যবাদ, তার প্রয়োজন হবেনা। এক ঘন্টার ভিতরে আসছি আপনার বাসায়। আপনার ছোট বউকে বলেন খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজি করতে। আর হ্যাঁ - অবশ্যই সে যেন বাড়িতেই থাকে। আমার যা বলার সেটা তার সামনেই বলতে চাই"
আকাশ হালকা গুড়গুড় করে উঠলো। বৃষ্টি হবে নাকি? হলে মন্দ হয়না। ইলিশ ভাজি আর খিচুড়ি ভাত জমবে ভালো। তবে কোন খুনির হাতের রান্না খিচুড়ি আর ইলিশে বদহজম হবে কিনা জানিনা। যদিও একজন নিষ্পাপের হাতের রান্নার স্বাদ আর একজন খুনির হাতের রান্নার স্বাদ একই রকম

চলব...
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:৪৯
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×