somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাইভ টেলিকাস্ট

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(উন্নত রুচির পাঠকেরা এড়িয়ে যেতে পারেন)

“হেগে পানি নেননি ব্যর্থমন্ত্রী ভুরুল মিয়া”

দুপুরের ভাত খেতে খেতে এ ধরনের সংবাদ শিরোনাম শুনে বমি করতে করতে থেমে গেলাম। খাওয়া থামিয়ে টিভি পর্দায় চোখ রাখলাম। বড় বড় অক্ষরে লেখা শিরোনামের দিকে চোখ বুলিয়ে নিশ্চিত হলাম কানে ভুল শুনিনি। একে একে বাদবাকি শিরোনাম শেষ হলে বিস্তারিত সংবাদ মনোযোগ দিয়ে শোনার জন্য নড়েচড়ে বসলাম। যে কারণে আমি খাওয়া ফেলে টিভির দিকে তাকিয়ে আছি, ঠিক একই কারণে আমার মা, আর ছোটবোনও হা করে তাকিয়ে থাকল টিভির দিকে।
সংবাদ উপস্থাপিকা সেন্টার মনিটরে দৃষ্টি রেখে শুরু করলেন সংবাদ পাঠঃ-

“একের পর এক প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় টালমাটাল ব্যর্থ মন্ত্রী জনাব ভুরুল মিয়া সাংবাদিকদের তোপের মুখে প্যান্ট ভরে পায়খানা করে দিলেন।

আজ সকাল বারোটা বেজে বারো মিনিটে শিক্ষা ব্যবস্থার বারোটা বাজার ঘটনা সচক্ষে পরিদর্শন করতে গিয়ে ঘটে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।

এই মূহুর্থে ঘটনা স্থলে আছেন আমাদের সিনিয়র সাংঘাতিক জনাব ধামাচাপা সরদার। আমরা এখন সরাসরি চলে যাব তার কাছে।
“ধামাচাপা, আপনি কি আমাকে শুনতে পাচ্ছেন?”
“জী, শুনতে পাচ্ছি”
“আচ্ছা, আপনি আমাকে ঘটনার বিস্তারিত বলুন”
“জী, ঘটনার বিস্তারিত শোনার আগে একটু আমার বিস্তারিত অবস্থা শুনুন। আপনি দেখতে পাচ্ছেন আমাকে নাকে রুমাল চেপে কথা বলতে হচ্ছে। আসলে ব্যর্থ মন্ত্রীর গুয়ের গন্ধে এই এলাকা বর্তমানে জনশূন্য অবস্থা বিরাজ করছে। এগুলো গুয়ের গন্ধ নাকি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ঘুনে ধরা পঁচা শরীরের গন্ধ সে প্রশ্ন কিন্তু রয়েই যায়। ক্যামেরা ঘোরালে দেখতে পারবেন এখানে সেখানে যত্রতত্র ছড়িয়ে আছে মানুষের বমি। মন্ত্রী মহোদয় কত দিন হাগেননি সে বিষয়েও আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
যাইহোক, আজ সকালে মন্ত্রী সাহেব অমুক স্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করতে এসে এক পরীক্ষার্থীর সেল ফোনে উক্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র উদ্ধার করেন এবং ওই পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করতে গেলেই ঘটে যত বিপত্তি। অভিযুক্ত ছাত্র রাগান্নিত হয়ে বলে ওঠে ‘আমাকে বহিষ্কার করতে হলে সবাইকে বহিষ্কার করতে হবে! পুরো দেশের সব শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করতে হবে। কারণ এদের সবার কাছেই আগাম প্রশ্ন আছে’।
তখন মন্ত্রী সাহেব ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে আসে। জানা যায় রাস্তার পাশের ডাব বিক্রেতাও ডাব বেচা বাদ দিয়ে প্রশ্নপত্র বিক্রি করছে। আপনি দেখতে পাচ্ছেন আমি নিজেও ওই ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে এক সেট প্রশ্ন কিনেছি, এবং এ ব্যপারে তাকে প্রশ্ন করলে কোন সদুত্তর মেলেনি। আর সেই সদুত্তরের আশায় আমরা সাংঘাতিক ভায়েরা মন্ত্রী সাহেব কে ঘিরে ধরলে এই অবাঞ্চিত ঘটনার সৃষ্টি হয়। যাইহোক, এই ছিল আমার কাছে সর্বশেষ সংবাদ।”
“আচ্ছা ধামাচাপা সাহেব, ভুরুল মিয়া যে টয়লেট করে ফেললেন, আপনি তাকে শৌচকর্ম সম্পাদন করতে দেখেছেন?”
“জী না। আমি জানতে পেরেছি এগুলো তাদের কাছে কোন বিষয় না। মন্ত্রিত্ব টিকিয়ে রাখতে তারা নাকি গু খেতেও প্রস্তুত।”
“জী ধন্যবাদ আপনাকে ধামাচাপা সাহেব। দর্শক এতক্ষণ আপনারা সরাসরি শুনছিলেন আমাদের সিনিয়র সাংঘাতিক ধামাচাপা সাহেবের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত। এবার চলে যাচ্ছি অন্যান্য প্রসঙ্গে …”

আমার ছোট বোনটা ক্লাস টেনএ পড়ে। আমি খাওয়া বাদ দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা মাথায় বললাম -

“আমার এ প্লাস চাইনা। তোর নিজের যোগ্যতায় ফেল করলেও আমি খুশি”


বিঃদ্রঃ দেশের চলমান প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার এই ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। এই ক্রোধ কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে নয়।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×