somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনের ভেতরের কথা । The beauty inside । ২০১৫ সালের কোরিয়ান মোস্ট রোমান্টিক চলচ্চিত্র :) :) :) :) :)

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




প্রতিটি সকাল সুন্দর স্নিগ্ধ হওয়ার কথা ছিল , কিন্তু মানুষের একেকটি দিন একেকরকমভাবে শুরু হয় । সেটাই স্বাভাবিক । অওজিন’র সকালগুলো একটু বেশিই ভিন্নভাবে শুরু হয় প্রতিদিন । প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ভিন্ন অওজিনকে আবিষ্কার করে সে । আঠারো বছরের পর থেকেই এই ভিন্নতা ধরা পরে তার । প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই সে লক্ষ্য করে তার চেহারার পরিবর্তন । প্রথম যেদিন পরিবর্তন হয় সেদিন খুব কেঁদেছিল । তার মা প্রথমে তাকে চিনতে পারেনি । সেদিন থেকেই লেখাপড়াকে সে বিদায় জানায় । কারণ প্রতিদিন ভিন্ন চেহারার একজন মানুষকে কি আর আগেরদিনের মানুষ চিনবে । কিভাবে প্রমাণ দিবে সে ! সে যে অওজুন ।

অওজিন’র মা আর শৈশবের এক প্রিয় বন্ধু ছাড়া কেউই তাকে চিনতে পারেনা । প্রতিদিন ভিন্নরুপ , ভিন্নরকম দেখতে মানুষ হয়ে উঠে সে । প্রতিদিন তার পরিবর্তন হতে থাকে । কিন্তু একটা জিনিস পরিবর্তন হয়না তার , সেটা শরীরের ভেতরের মন । তার সুন্দর মন আছে , সুন্দর সুন্দর উদ্ভাবনী চিন্তা আছে তার মনে । সেই চিন্তাগুলোই সে বাস্তব জীবনে রুপ দেয়ার চেষ্টা করে । প্রতিদিন নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে তার চিন্তার পৃথিবী ঘুরপাক খায় । আর প্রিয় বন্ধুর সাথে সেটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলতে থাকে । এই উদ্ভাবনী চিন্তা মনমানসিকতাই তাকে বাঁচিয়ে রাখে পৃথিবীর মাঝে , উদ্ভুতভাবে প্রতিটি দিন শুরু হওয়ার পরেও তার মাঝে নতুন ধ্যানধারণা নিয়ে কাজ করা থেমে থাকেনা ।

যেদিন প্রথম সকালবেলা জীবনে নিজের এই পরিবর্তন খেয়াল করেছিল সেদিন সে এবং তার মা দুজন খুব কেঁদেছিল । একজন মানুষের জীবনের প্রতিদিন নতুন বিড়ম্বনা খুবই বিরক্তিকর। বাসায় অসংখ্য জুতা , জামাকাপড় । কারণ একেকদিন একেক সাইজের জামাকাপড় তার পরতে হয় । তবুও বেঁচে থাকায় এক অদ্ভুত আনন্দ আছে । সেইজন্যে এই ভিন্নতা নিয়েও বেঁচে থাকতে উদগ্রীব থাকে সে ।গতকাল যার সাথে খুব হেসে হেসে কথা হয়েছিল আগামীকালই সে মানুষটা তাকে চিনবেনা । কি অদ্ভুত ব্যাপার ! বিশেষ করে নিজের কর্মক্ষেত্রে এই বিড়ম্বনা আরও ব্যাপকভাবে দেখা দেয় ।

ফার্নিচার ডিজাইনার হিসেবেই নিজেকে গড়ে তুলতে শুরু করে, যেদিন থেকে বুঝতে পারে অওজিন নিজের এই প্রতিদিনের পরিবর্তন । একজনকে খুব ভালো লেগে যায় একসময় অওজিন’র । সেই মেয়েকে ভালোবেসে ফেলে সে এবং বিড়ম্বনাটা তখন প্রকট আকারে তার কাছে ধরা পরে । সেই মেয়ে ইয়েসো এর কথা , তাকানো , হাসি গভীরভাবে তার মনে স্পর্শ করে কিন্তু নিজের প্রতিদিনের এই অস্বাভাবিক পরিবর্তনের কথা মনে করে তার খারাপ লাগতে শুরু করে । সে যে পরেরদিনেই পরিবর্তন হয়ে যাবে আর তখন তার ভালোবাসার মানুষটিকে সে নিজেকে চেনাতে পারবে । সিদ্ধান্ত নেয় একসময় এই মেয়েকেই সে খুব ভালোবাসবে আর তাকে ভালোবাসার কথা বলবে । ভালোবাসার এক ঘোর পেয়ে বসে । গল্পের ভিন্নতা শুরু এখানেই ! পুরো প্রায় একটি দিন নিজেরা একসাথে ঘুরল এবং যখন বিদায় নিলো অওজিন তখন একটা বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে তার মনে , আগামীদিন কি হবে !

গল্পটা যে ভালোবাসার গল্প , ভালোবাসার মানুষের সাথে থাকা মুহূর্তগুলো খুব চমৎকার মনে হয় । সময়গুলো যেন খুব দ্রুত ছোটে । ‘দ্য বিউটি ইনসাইড’ চলচ্চিত্র নির্মাতা বেই জং ইয়ল ভালোবাসার কথা পর্দায় উপস্থাপনের এক নান্দনিক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন অনায়াসে । চমৎকার গল্প , চমৎকার ক্যামেরা এবং দৃশ্যায়নের কাজ তবুও কিছু জায়গায় মনে হয়েছে অসামাঞ্জস্যতা । প্রতিদিন যে মানুষটির চেহারা পরিবর্তন হয় সেই মানুষটা কিভাবে বিদেশে যখন গিয়েছিল ভিসা তখন কিভাবে পেয়েছিল ! তার মুখের অবয়ব সবইতো নিত্যদিন পরিবর্তনশীল । সেটা ঠিক বোধগম্য হয়নি । এই জায়গায় দুর্বল মনে হয়েছিল এই গল্প । তবে চলচ্চিত্রটির এই বিষয়টি বাদে বাকি বিষয়গুলো ছিল মনকাড়ার মতন । গল্প যেমন চমৎকার , অভিনয় তেমনি । প্রতিদিন যে নতুন নতুন চেহারার মানুষ অওজুন’কে পর্দায় দেখানো হয়েছে তাদের সবার অভিনয় ছিল সাবলীল ও মনে রাখার মতন । আর কোরিয়ান চলচ্চিত্রগুলোর সংগীতায়োজন ছিল চমৎকার , ‘ট্রু রোমান্স’ গানটি চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনকে যথেষ্ট আন্দোলিত করবে নিঃসন্দেহে ।

চলচ্চিত্রটি ছিল রিমেক । ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য বিউটি ইনসাইড’ এই দক্ষিণ কোরিয়ান চলচ্চিত্রটি পরিচালক বেই জং ইয়ল ২০১২ সালের ছয় পর্বে নির্মিত আমেরিকান সোশ্যাল ফিল্ম ‘দ্য বিউটি ইনসাইড’ এর গল্প অবলম্বনে নির্মাণ করেছেন । তখনকার সেই সিরিজটি ‘ ডেটাইম এমিঅ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পায় চমৎকার গল্প ও উপস্থাপনের মাধ্যমে । সেটা পরিচালনা করেছিল দ্রেক দরিমাস এবং গল্পটি দ্রেক দরিমাস এর লেখা । কোরিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা বেই জং ইয়ল এর ‘দ্য বিউটি ইনসাইড’ চলচ্চিত্র দিয়েই চলচ্চিত্র নির্মাতা জীবনের অভিষেক ।


সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৮
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×