somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগার্স পিকনিক : অতঃপর কিঞ্চিত ফান পোষ্ট

২১ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পিকনিক শেষ হল বেশ কিছুদিন আগে, আর আমি পোষ্ট দিচ্ছি এখন!! সবাই ভাববে এতদিন পরে কেন?? আসলে আমারো অনেক আগেই পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছে ছিলো,ভাবলাম সবকিছু গুছিয়ে সুন্দর করে একটা পোষ্ট দিবো,কিন্তু আমার আগেই সবাই এত ভালো ভালো পোষ্ট দিলো, বিশেষ করে ব্লগার শাহেদ খান এর পোষ্ট টা এতই ভালো ছিলো যে আমি আর লেখার কিছু খুজে পেলাম না।কিন্তু সেদিন জিসান ভাইয়া ফোন দিয়ে বললো, ‘নীলা সবাই পোষ্ট দিলো তুমি কিছু লিখলে না পিকনিক নিয়ে? যা আসে মনে লিখে ফেলো একটা’। তাই যা আসে মনে তাই লিখতে বসলাম।
প্রথমে তো পিকনিক এ যাওয়ার ইচ্ছাই ছিলো না, তার উপর অফিসের একটা কাজ ও ছিলো। হঠাৎ করে কাজটা পিছিয়ে যাওয়ায় পিকনিকে যাওয়ার প্ল্যান করলাম। সক্কাল বেলায় ই গুরুজী কে ফোন দিলাম, আমি যেতে চাই। গুরুজী বললো, নো টেনশন তুমি খালি শুক্রবারে শাহবাগে চলে আসবা।ব্যস আর কি!চলে গেলাম শাহবাগ, গিয়ে তো কাউকেই চিনতে পারছিলাম না, যারা পিকনিকের আয়োজক তারা তখনো এসে পৌছান নি।কি যন্ত্রনা!! ঠিক তখনি হানী কে দেখে কলিজায় পানি আসলো, হানী কে আগে থেকেই চিনতাম,বই মেলায় আরো একবার দেখা হয়েছিলো আমাদের।সবাই মিলে খুব মজা করছিলো, আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম এক কোনায়।মাঝে মাঝে একটা পিচ্চিকে দেখলাম এদিক সেদিক দৌড়াচ্ছে আর সবার ছবি তুলছে।আমি ভাবলাম কোন ব্লগারের ছেলে হবে হয়তো। কিন্তু না!! সে ও নাকি ব্লগার, তাও আবার জনপ্রিয় ব্লগার, আশকারি! সবচেয়ে কনিষ্ঠ ব্লগার!
কিছুক্ষনের মধ্যেই শিপু ভাই আসলো সাথে সবার জন্য হাওয়াই মিঠাই, শিপু ভাবী আগে থেকেই বাসে ছিলো, বোরকা পড়া, চোখ দেখেই বুঝা যাচ্ছিলো সুন্দরী হবে,তবে এতটা হবে আমি ভাবতেও পারিনি, বোরকা খোলার পর আমি পুরাই টাস্কিত, শিপু ভাইয়ের বউ ভাগ্য ভালো।
বাসে একা একা বসে ছিলাম, হঠাত সকাল বেলার কাক এসে বললো, নীল_পরী কে? রুমকী(অপরিনীতা)আমাকে দেখিয়ে দিলো।কাক এসে বললো, আমি কিন্তু আপনার সাথে লুলামী করার অনুমতি আগে থেকেই নিয়ে নিয়েছি। আমি হাসলাম, হা হা হা হা হা, ব্লগে এসে কত নতুন শব্দ শিখলাম, লুল, ঝাঝা, ছাগু, গদাম, আরো কত কি। হা হা হা। কাক সারা রাস্তা আমার সাথে লুলামী করার চেষ্টা করলো, আর আমার ভাগ্নে মনসুর আমাকে লুলের হাত থেকে বাচানোর চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলো! কাক বসে বসে আমার জন্য তিনটা গানও লিখে ফেলেছিলো, কিন্তু হায় আমাকে গান শুনানোর আগেই আমাকে বিরহের আগুনে জ্বালিয়ে সে অন্য একজনের প্রেমে পড়ে গেলো!!আমার সাথে কাকের লুলামী এখানেই সমাপ্ত!
কিছুদূর যেতে না যেতেই বাস কন্ট্রাক্টর(ছোট মির্জা, আর আশকারি) আসলেন ভাড়া নিতে।কন্ট্রাক্টরের সাথে ভাড়া নিয়ে আমার সে কি তর্ক বিতর্ক, পরীদের আবার ভাড়া কি??!! তর্ক বিতর্ক শেষে কিছুটা বাধ্য হয়েই স্টুডেন্ট টিকিট কাটলাম!এদিকে সবাই হাওয়াই মিঠাই খাওয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। আমি লজ্জায় খেতে পারলাম না! ও হ্যাঁ ছোট মির্জা সবার কাছ থেকে ভাড়া নিলেও নিশাত এর কাছ থেকে ভাড়া আদায় করতে পারলো না, বেচারী ছোট খাটো একটা রাজনৈতিক ভাষন দিয়ে ফেললো, আর পানকৌড়ি ভাই তো নিজেকে স্টাফ বলে চালিয়ে দিলো। তবে একটা ব্যাপারে আমার এখনো খটকা,মির্জা ভাই হানীর কাছ স্টুডেন্ট টিকিটের দাম ২ টাকা নিলো, আমার কাছ থেকে ১০ টাকা ক্যান?? কঠোর ষড়যন্ত্র!!
অবশেষে আমরা আমাদের লক্ষ্যে এসে পৌছলাম, নিমচাঁদ ভাইয়া আগে থেকেই স্পট দেখে আসলো, আমরা সবাই তার পছন্দের স্পটে গেলাম।একে একে সবার সাথে পরিচয় শেষে যে যার মত ঘুরে বেড়াতে লাগলো। কেউ ছবি তুলছে, কেউ খেলছে, কেউবা আড্ডা দিচ্ছে। ব্লগার শাহেদ খান বসে পড়লেন গীটার নিয়ে আর সাথে ছিলো নষ্ট কবির মাউথ অর্গান।দুজনেই জাস্ট অসাম! অসাধারন!গান বরাবরই আমার পছন্দ। শাহেদ ভাই ভালো গান করবেন তে দেখেই বুঝা যাচ্ছিলো, তবে নিমচাঁদ ভাইয়াও কম না। হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া গানের সাথে তার কন্ঠ মিলানো ভালোই লাগছিলো, আমার খুব ইচ্ছে করছিলো শাহেদ ভাইকে বলি ‘মিস্টিরিয়াস গার্ল’ গানটা গাইতে, শেষ পর্যন্ত লজ্জায় আর বলা হলনা!
সবকিছুর মধ্যে ছবি তোলার জন্য ব্লগার স্বর্নমৃগের কাউবয় হ্যাটটা দারুন জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো।প্রায় সবাই এটা মাথায় দিয়ে ছবি তুললো।
আমি একা একাই এদিক সেদিক ঘুরছিলাম, নিমচাঁদ ভাই এর ছেলেকে দেখলাম লেকের পাড়ে এক কোনায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে, দেখলে বোঝাই যায়না হি ইজ আ অটিস্টিক বয়।কি নিষ্পাপ চেহারা! সত্যিই হি ইস আ গিফট ফ্রম দা গড।
দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে গেলো, খেলাধুলা ও প্রায় শেষ, বাচ্চাদের বিস্কিট খেলা কখন হল টেরই পেলাম না। দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো।খাওয়ার সময় আমি আগে আগে সবাইকে প্লেট দিয়ে দিলাম, কিন্তু খাবার আসতে দেরী হচ্ছিলো, তাই আমার ব্যান প্রার্থনা করে সবাই একচোট আন্দোলন করলো, পরে সবাইকে কফি বানিয়ে(শুধু পানিটা গরম করেছি) খাওয়ানোর পর আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হল। আর কফি বানানোর পুরস্কার হিসেবে একটা কালিমাখা পাতিল ও পুরস্কার পেয়েছি।
পুরো পিকনিক জুড়ে ব্লগার জাহিদ ভাইয়ের পরিবার আর ব্লগার আবিদা আইরিন আপুর পরিবারের ভাগ্য একেবারে তুঙ্গে ছিলো, লটারীর প্রায় সবকটা পেলেন আবিদা আপুর পরিবার, বিস্কিট খেলা আর পিলো পাসিং এ জাহিদ ভাইয়ের পরিবার! এই না হলে ভাগ্য!
আরেকটা ব্যাপার কেউ লক্ষ্য করেছে কিনা জানিনা, পুরো পিকনিক জুড়ে ব্লগার অন্তরা মিতু কিন্তু ফোনে কথা বলা নিয়েই ব্যস্ত ছিলো!(ডাল মে কুছ তো কালা হ্যায়!)
আর কি বলবো, সবকিছু মিলিয়ে পুরো পিকনিক টাই বেশ আনন্দদায়ক ছিলো।খাবার ও বেশ ভালো ছিলো, এমনিতে আমি কাচ্চি খুব একটা খাইনা, কিন্তু সেদিনের টা সত্যিই অসাধারন ছিলো। আরেকজনের কথা না বললেই নয়, তিনি হলেন আশকারির বাবা।এত সহজে আমাদের সবার সাথে মিশে গেলেন! সত্যিই অবাক করা। জিসান শা ইকরাম আর শিপু ভাই এর কথা নাই বললাম।
ফেরার পথে আবারো শাহেদ ভাই এর গান আমাদের ক্লান্তি মিটিয়ে দিলো। রাস্তায় এত্ত জ্যাম! সেদিন জ্যাম ও ভালো লাগছিলো, কিভাবে কিভাবে যে সময় শেষ হয়ে গেলো!! সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা বনভোজনের জন্য। ও ফেরার পথে পানকৌড়ি ভাইয়ের ‘আঠারোটা বিয়া কইরা জেলায় জেলায় ঘুরি’ গানটায় দারুন মজা পেয়েছি।
** পিকনিক শেষে ব্লগার নোমান পড়েছে বিশাল বিপদে, কি একটা ছবিতে তার চোখের দৃষ্টি(!!) নিয়ে সবাই মিলে বেচারার তেরোটা বাজিয়ে দিলো। আহারে!! এক ছবিতেই ১৫০ এর উপরে কমেন্ট, জটিল হিট!
** এটা নিছক ফান পোষ্ট । কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দুঃখিত। দয়া করে কেউ কোন কথার নেগেটিভ অর্থ খুঁজতে যাবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৫৮
৫৭টি মন্তব্য ৫৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×