somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অর্থনৈতিকভাবে কিভাবে আমরা ভারতের কাছে আজ্ঞাবহ হয়ে যাচ্ছি!

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক একটি ঐতিহাসিক সম্পর্ক, মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে , মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীতে বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিকভাবে সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং প্রভাবান্বিত করেছে। আর তাই বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক আলোচনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল বিষয়। এ নিয়ে ধারাবাহিক পর্যালোচনার প্রথম পর্ব প্রকাশ করছি, লেখাটা নিয়েছি সত্য সুন্দর এর এই নোট থেকে
___________________________________________________
ভারত বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখন নাকি ইতিহাসে সর্বাধিক ভাল অবস্থানে আছে। দুই দেশের বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক এখন তুঙ্গে। তো দেখি আমরা এই বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক থেকে আমরা কতটুকু লাভবান হচ্ছি আর ভারত কতটুকু লাভবান হচ্ছে!

ভারত বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্বাধীনতার পর থেকেই। তবে ১৯৯০ এর পর থেকেই ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির সূচক উর্ধমূখী, হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। আমাদের এই দেশ তিন দিক থেকে ভারতের ভূখন্ড দিয়ে ঘেরা। ভারত আমাদের থেকে আয়তনে প্রায় ২৬ গুন এবং জনসংখ্যায় প্রায় ৮ গুন বড়। তাদের জাতীয় উতপাদন আমাদের থেকে অনেকগুন বেশি।

এছাড়াও পার্শবর্তী দেশ হিসেবে ভারত থেকে পণ্য আমদানী করাটা সবচাইতে সুবিধাজনক। আর ভারতীয় পণ্যের ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশি বাজারে চাহিদা আছে এবং এই পণ্যগুলোর বেশিরভাগই নিত্যপ্রয়োজনীয়। তাই চীনের পরেই আমদানীকারক দেশগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান। বাংলাদেশে কনজিউমার পাওয়ার বাড়ছে বিধায় আমদানীকৃত পণ্যের পরিমান বাড়ছে এবং সাথে সাথে ভারত থেকে আমদানীর পরিমানও বাড়ছে। তবে আমদানীর তুলনায় ভারতে রপ্তানিকৃত পণ্যের সূচক ততটা সুসংহত নয়। এতে তৈরী হচ্ছে বাণিজ্যিক অসমতা।

একথা ভারত থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের পণ্য ভারতে তেমন বাজার তৈরী করতে পারছেনা। কিন্তু, ঐতিহ্যগতভাবে যদি ভারতের পণ্য বাংলাদেশে বাজার তৈরী করতে পারে তবে বাংলাদেশের পণ্যেরও ভারতে চাহিদা আছে বা বাজার থাকতে পারে; ভারতের বাজার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার, যেখানে কনজিউমার পাওয়ার নিয়ে কোন প্রশ্ন নাই।

আরও বিস্তারিততে যাবার আগে জেনে যাই বাণিজ্য ঘাটতির তুলনামূলক চিত্র কিরূপ ডেইলী স্টারের একটি প্রতিবেদন থেকেঃ



Trade Gap Histogram



সূত্রঃ Click This Link

অনেকেই বলে থাকেন, বাংলাদেশি পণ্য নাকি ভারতে চাহিদা তৈরী করতে পারেনাই, তাই বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানীতে তেমন জোয়ার আসছেনা। আসলে এই তথ্যটি মোটেও ঠিক নয়। ভারত থেকে যেসব পণ্যের বিনা শুল্কে প্রবেশাধিকার অনুমোদিত রয়েছে সেগুলো পণ্য উতপাদনে বাংলাদেশ খুব একটা ইচ্ছুক নয়। বাংলাদেশ সরকার থেকে অনেকদিনের দাবী ছিল বাংলাদেশ থেকে সকল পণ্যের উন্মুক্ত বাজার ক্ষেত্র ভারতে তৈরী করতে সহায়তা করা। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রি মনমোহন সিং এর শেষ ঢাকা সফরে আশা ছিল এই ব্যাপারে চুক্তি সাক্ষরিত হবে। তবে আশায় গুড়েবালি, দাদারা এসেছিলেন, ইলিশ খেয়েছিলেন আর আমাদের অনুগত সরকার ইলিশ বক্সে ভরে পাঠিয়েও দিয়েছিলেন।

তবে আসলেই কি বাংলাদেশি পণ্যের মান এতটাই খারাপ যেখানে ভারতীয় পণ্যের জয়জয়কার এই বাংলাদেশে? কোথায় সেই মানের পার্থক্য? কোথায় সেই মূল্যের পার্থক্য? উল্টো ভারতীয় পণ্য আমরা খুব একটা কম দাম দিয়ে বাজারে পাইনা।

ভারতের পণ্য কিভাবে বাংলাদেশে স্থান করে নিচ্ছে, তার একটি বাস্তব চিত্র দেখা যাক। ভারতীয় চ্যানেল গুলো বাংলাদেশে সম্প্রচার বাধাহীন। সেখানে ভারতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন থাকে। সেগুলো এই দেশের মানুষ দেখে থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশের কোন চ্যানেল ভারতে বিনা বাধায় সম্প্রচারিত হয়না। ফলে বাংলাদেশি পণ্যের দৃশ্যত জোড়ালো কোন প্রচারনা নাই ভারতে। পশ্চিম বঙ্গে এক কালে ঢালিউডি চলচিত্রের বেশ কদর ছিল। বাংলাদেশি চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত নাটক গুলোও ভারতীয়রা পছন্দ করে, কারন শাশুড়ি বৌ এর যুদ্ধ ছাড়াও দৈনন্দিন জীবনমুখী নাটক হতে পারে, তা ভারতীয়রা হয়ত জানে না। কিন্তু ভারতীয় চ্যানেলগুলোর জনপ্রিয়তা ধরে রাখার স্বার্থে বাংলাদেশের মিডিয়াকে সেখানে অনেকটা ব্ল্যাকআউট করে রাখা হয়। অনেক অনুরোধ সত্বেও ভারতীয় সরকার বাংলাদেশি চ্যানেলগুলোকে ভারতে সম্প্রচারের অনুমতি দেয়নাই। তার কারন সুদূরপ্রসারী এবং খুব স্পশ্ট। বাংলাদেশি পণ্যের ব্ল্যাকআউট ও বাংলাদেশি মিডিয়ার ব্যাপ্তি রুখে দেয়া।

চিন্তা করে দেখুন, ভারতীয়দের থেকে ক্রিকেটে আমরাও কম আগ্রহী নই। এরকম মার্কেট ডিমান্ড থাকা সত্বেও বাংলাদেশে কেন স্টার নেটওয়ার্কের একটিও ক্রিকেট বা সকল খেলা সমৃদ্ধ চ্যানেল নেই। তবে একসময় তা হবে, এখন যেমন হিন্দীতে স্টার নেটওয়ার্কের চ্যানেল আছে।


আসলে মূল বিষয়টি হল, বাংলাদেশি বাজার ভারতে প্রতিশ্ঠিত হোক, তা ভারতীয় সরকার চায়না। যারপরনাই, বাংলাদেশি পণ্যের বাজার ভারতে খুব একটা গুরুত্বও রাখতে পারেনা। এখানে ভেবে দেখার দরকার আছে।

আজকে বাংলাদেশ যদি বলে, কাল থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে দেয়া হবে, তাইলে ভারতের কিছু যায় আসবেনা। কারন বাংলাদেশি বাজার নিয়ে তাদের মাথাব্যাথা নাই, তেমন কোন ইনভেস্টমেন্ট ও নাই।

কিন্তু ভারত যদি বলে কাল থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধ, তাহলে কিন্তু সমস্যা। কারন আমরা তাদের বাজার সংগঠিত করতে দিয়েছি।

এতই বেশি দিয়েছি যে আমরা দেশীয় পণ্যকে বাদ দিয়ে ভারতীয় পণ্যকেই গ্রহনযোগ্য মনে করি অনেকেই। এমনও না যে ভারতীয় পণ্য গুনে-মানে সর্বসেরা এবং দেশী পণ্যের মান সেখানে নগন্য। পার্থক্য আসলে মার্কেটিং এ। ভারতীয় পণ্য আমাদের কাছে স্পেশাল কারন ভারতীয় মিডিয়া দিয়ে ভারতীয় পণ্যকে আমরাই স্পেশাল হবার সুযোগ করে দিয়েছি। মানসিকভাবে আমরা ভারতীয় পণ্যের প্রতি নির্ভরতা তৈরী করেছি।


ফলাফল সরূপ ভারতীয় পণ্যের বাজারের ফলে আমাদের দেশীয় পণ্যের কি কি ক্ষতি হতে পারে -

১) দেশি পণ্যের বাজার কমে যাওয়াতে দেশি বিনিয়োগ কমে যাবে।
২) দেশীয় বিনিয়োগকারীরা দেশীয় পণ্য বাদ দিয়ে ভারতীয় পণ্য আমদানীতে আরও বেশি বিনিয়োগ করবেন।
৩) দেশীয় পণ্যের বাজার হারিয়ে যাবার ফলে দেশীয় পণ্যের সৃশ্টিশীলতা কমে যাবে, যা একটি দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে বিনশ্ট করে দেয়।



Tista Rever in drought


উপরোক্ত ক্ষতিগুলো থেকে জাতীয় পর্যায়ে কি কি সমস্যা হতে পারে দেখা যাক -

১) অর্থনৈতিকভাবে আমরা ভারতের কাছে দায়বদ্ধ হয়ে যাব।
২) বাজার নিয়ন্ত্রনে ভারতের স্বেচ্ছাচারিতা বৃদ্ধি পাবে।
৩) আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারতের আদর্শ বাস্তবায়ন করে চলতে হবে। মতের মিল না হলে ভারতের আর বাংলাদেশ আক্রমন করা লাগবেনা, বাজার নিয়ন্ত্রন করেই কুপোকাত করে দেবে। (সম্প্রতি পেয়াজের বাজার এর একটি সরল উদাহরন মাত্র)

উপরের তিনটির যে কোন একটির কারনে দেশে একটি ভয়াবহ অরাজকতা তৈরী হতে পারে। স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এমনকি ১৯৭৪ সালের বিপর্যয় অন্য রূপে দেখা দিতে পারে।

মতের অমিল যেসব বিশয়ে হতে পারে, তার মধ্যে আছে -

১) প্রাকৃতিক সম্পদ ভারতে রপ্তানি
২) ভারতীয় পণ্যের আগ্রাসন বৃদ্ধি
৩) দেশীয় বিনিয়োগকে পাশ কাটিয়ে ভারতীয় বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেয়া
৪) দেশের রাজনীতিকে ভারতীয় প্রভাবমুক্ত রাখা
৫) আর্থ সামাজিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ভারতকে মাথায় রেখে চলা
৬) বিজাতীয় সাংস্কৃতিক ও ধার্মিক আগ্রাসন রোধ



BSF becomes hostile in the border


এই বিশয়গুলো অত্যন্ত বেসিক, অত্যন্ত সংবেদনশীল। পাঠক ভেবে দেখুন, এগুলোর কারনে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠা খুব স্বাভাবিক। এমন হয়ে যাবে যে, ভারত চাইলে এই দেশের ভাল হবে, না চাইলে ভালনা। এরই মধ্যে দেশীয় কতগুলি দালালের মাধ্যমে আপনারা ইতোমধ্যেই প্রত্যক্ষ করেছেন ভারতীয় সাইড এফেক্ট। এমনকি পরিকল্পনা নাকি হয়ে গিয়েছে ভারতীয় মূদ্রা বাংলাদেশে প্রচলনের জন্যে! হায় বাংলাদেশ, বন্ধুকে শত্রু কে, চিনলনা!



Tipaimukh dam


ভারতের রপ্তানিকৃত পণ্যের একটি বড় অংশ আসে সীমান্তে চোরাচালানীর মাধ্যমে। এতে ভারত বাংলাদেশ উভয়েই জড়িত। এই অবৈধ সীমান্তের বাজার ভারতীয় মশলা ও বিভিন্ন কৃশিজাত পণ্য, গবাদি পশু, মাদক দিয়ে সয়লাব। ভারতীয় বিশাক্ত মাদক বাংলাদেশে ঢুকে নশ্ট করছে তরুন সমাজকে। কৃশিজাত পণ্যের অনুপ্রবেশ ক্ষতিগ্রস্থ করছে দেশীয় কৃশিজাত পণ্যের। হতাশ হয়ে পড়ছেন কৃশকরা। তরুন সমাজ বাপ-দাদাদের মহান পেশা ছেড়ে শহরমুখী হচ্ছে। কুরবানির গরুর হাটে বাজারে ভারতীয় গরুর দাম কম হবার কারনে দেশীয় গরু উতপাদন ব্যহত হচ্ছে সঠিক দাম না পাবার কারনে। বছর প্রতি ২০-২৫ লাখ গরু অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাঁচার হয় সীমান্ত দিয়ে।

সবচাইতে ক্ষতিকর একটি বিশয় হল, পণ্য পাঁচারের বিনিময় প্রথা। ওপার থেকে যা আসে, এদিক থেকে তা টাকা দিয়ে কেনা হয়, তাই অগোচরেই ঘটে যায় মূদ্রা পাঁচারের মতন ঘটনা। এর সাথে দেশীয় মূল্যবান ধাতু যেমন লোহা, তামা, পিতল, স্টিল ইত্যাদিও বিনিময় হিসেবে গ্রহন করা হয় সীমান্তে। এতে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্ষতি নিরূপন সর্বসাধারনের জন্যে সহজ করে দেয়া যায় একটি দৈনন্দিন জীবনের ঘটনা থেকে। ধরুন আপনি একটি দোকানে একটি বেনসন কিনতে গিয়েছেন যার দাম ৯ টাকা। আপনি দোকানীকে ১০ টাকার একটি নোট দিলেন এবং দোকানী আপনাকে ১ টাকা ফেরত না দিয়ে এক টাকা মূল্যের একটি প্রান ক্যান্ডি দিল। এতে কে লাভবান হল?



Trade and exchange


উপরের সমস্যাগুলোতে দেখা যায় আমরা বাংলাদেশিরাই নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারি। ভারত একটি দেশ হিসেবে চাইবেই স্বদেশের ক্ষমতায়ন সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে। কিন্তু আমরা বাংলাদেশিরা ৩০ লাখ শহীদের বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীনতা কেন অন্য রাশ্ট্রের হাতে তুলে দিব? ভারতকে এই আগ্রাসনে সবক্ষেত্রেই দোশারোপ করা যায়না, এই আগ্রাসনের দায়-দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে।

শুধু বিরোধীতার স্বার্থেই ভারত বিরোধীতা করে আমাদের কোন কাজে আসবেনা। প্রতিটি সরকারই ভারতের সাথে অর্থনৈতিকভাবে চুক্তি করে থাকে এবং ভবিশ্যতেও তা অবশ্যম্ভাবী। এসব নিয়ে অনলাইনে প্রচুর লিখালিখি হয়েছে। সবাই জানে কোন সরকার কি করেছে। সেসবের ফিরিস্তি না দিয়ে আমাদেরকেই দেশের স্বার্থে সকল চুক্তির প্রতি কড়া নজর রাখতে হবে। প্রতিটি সরকারকেই চুক্তি ভাল-মন্দ যাচাই করতে বাধ্য করতে হবে। সর্বোপরি দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।

কি কি সমাধান এখন থেকেই কার্যকর করা যায় তাহলে? দেখা যাক -

১) ভারতীয় প্রতিটি পণ্য কেনার আগে খেয়াল করুন বিকল্প দেশীয় পণ্য দোকানীর কাছে আছে কিনা। যদি না থাকে তাহলে অন্য দেশীয় বিকল্প পণ্য আছে কিনা
২) দেশীয় পণ্যের বাজারে বিপ্লব ঘটাতে হবে।
৩) কুরবানীতে ভারতীয় গরুর আধিক্য কমাতে হবে, দেশী গরুর মাংস বেশি সুস্বাদু। দামে একটু বেশি হলেও মান ভাল। কুরবাণীর মাংস বেশি খাবার চিন্তা বাদ দিয়ে দেশের ভালর জন্যে চিন্তা করার সময় এসেছে।
৪) সরকারী ভাবে আমদানীতে ভারতীয় পণ্যের সাথে সাথে অন্য দেশীয় পণ্যের আমদানী করা যায় কিনা, সেই বিকল্প খুজে বের করা। মোদ্দা কথা, পণ্য আমদানীতে ভারতীয় পণ্যের সাথে সাথে অন্যান্য দেশ হতে আমদানীর পরিমান একটি ব্যালেন্সে নিয়ে আসা। যাতে আমাদের আমদানী শুধুমাত্র ভারতের উপরেই নির্ভরশীল হয়ে না যায়।
৫) গুরুত্বপূর্ণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, যেগুলো ভারত থেকে আমদানী হয়, সেগুলো বাংলাদেশে উতপাদন করার ব্যাপারে বিশেশ ভাবে গুরুত্ব দেয়া।
৬) দেশীয় পণ্যের বাজার বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার নিমিত্তে দেশীয় মিডিয়াকে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে সম্প্রচারের অনুমতি দিয়ে দেয়া। বিশ্বকে মিডিয়া দিয়ে চেনানো, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ।
৭) দেশীয় পণ্য ব্যবহার করে মানসিক শান্তি পাবার জন্যে মিডিয়াকে প্রচার বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করা।
৮) দেশীয় পণ্য ও সেবার মান বাড়ানোর জন্যে অত্যন্ত সক্রিয় মনিটরিং সিস্টেম গড়ে তোলা।
৯) শিক্ষিত বেকার তরুনদের কৃশিকাজে ফেরানোতে উতসাহ দেয়া

১০) সীমান্তে অবৈধ পণ্যের বাজার বন্ধ করতে হবে। তা শতভাগ করা যাবেনা কোনভাবেই। তবে বাংলাদেশের স্বার্থ যেন ক্ষুন্ন না হয়, সেভাবেই বাজার গড়াতে হবে। দেশীয় অর্থ পাঁচার রোধ করতে হবে, পণ্যের বিনিময়ে পণ্য দিতে হবে। দেশ হতে গুরুত্বপূর্ণ ধাতু ভারতে পাঁচার সম্পূর্ণভাবে রোধ করতে হবে।

১১) দেশীয় দালাল, যারা ভারতের কাছে টাকা খেয়ে, ক্ষমতায় থেকে এই দেশকে করিডোর দিয়ে, গ্যাস দিয়ে, তিস্তার পানি দিয়ে, ছিটমহল দিয়ে, সুন্দরবন দিয়ে, দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পণ্যের প্যাটেন্ট দিয়ে, সর্বোপরি দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর পায়তারা করে, তাদের পরিত্যাগ করা এবং তাদের ভারতপ্রীতির ভূত মাথা থেকে নামাতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা।


এবং

১২) সর্বোপরি, স্বদেশী পণ্য ব্যবহারকে বাংলাদেশি জাতিয়তাবাদের একটি অংশ বলে মনে করা; যেই জাতীয়তাবাদ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মাস্টারমাইন্ড করেছিলেন ৩২ বছর আগে। স্বদেশী পণ্য কিনে ধন্য হবার কারন আছে, কারন এতে প্রকৃত দেশপ্রেম ও জাতিয়তাবাদ প্রকাশিত হয়।



Trade with balance


আমরা বাংলাদেশিরা ভারতের সাথে সমতার ভিত্তিতে বাণিজ্য চাই। বাস্তবতার নিরিখে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাই, দেশ ও দশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নয়।

বিঃ দ্রঃ ছবিগুলো গুগল থেকে সংগৃহীত।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপর আরেকটি লেখাঃ রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র, এর উপযোগিতা, ভয়াবহতা এবং নির্মম বাস্তবতা ।


আগামী কয়েকদিন ইন সা আল্লাহ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের উপর এরকম তথ্যবহুল আরো কিছু স্বকীয় এবং ব্যক্তিগত লেখা প্রকাশ করবো।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩১
৮টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×