somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই নেত্রীর বচন : রাজনীতির সর্বাঙ্গে পচন

১৮ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক

বাংলাদেশের রাজনীতির শরীরে পচনের শুরুটা হয়তো হয়েছিলো, নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের সোল এজেন্ট হিসাবে দাবী করে আসা দল আওয়ামীলীগের নেত্রী যেদিন, দলীয় স্বার্থকে সমুন্নত রাখবার জন্য নিজামীর সঙ্গে একই মঞ্চে বসে বক্তিমা ঝাড়তে একাত্ম হয়েছিলেন ! কিম্বা তারও আগে, লুইস আঙ্কেল এরশাদ যখন, রাজাকার মান্নানকে তার সরকারের ধর্মমন্ত্রী বানিয়েছিলেন । রাজনীতির হৃৎপিন্ডের পচন শুরু হয়েছিল, আপোষহীন নেত্রী যখন, জামাতের সঙ্গে আপোষ করে, তাদের মন্ত্রীত্ব উপহার দিয়ে , দেশের পতাকা তাদের গাড়িতে লাগিয়ে ঘুরবার মতন অশোভন কাজটি করবার সুযোগ করে দিয়েছিলেন ! সেই দেশের পতাকা, যে দেশের জন্মলগ্নে দেশটির জন্মকে অস্বীকার করেছিল এই যুদ্ধাপরাধীরা । খালেদা যখন , যুদ্ধাপরাধীর বিচারকে দেশকে হানাহানির দিকে ঠেলে দেবার মন্ত্রনা হিসাবে দেখেন, তখন, প্রকারান্তরে তার বন্ধুদল জামাতকে, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগই করে দেন । সেটা বুঝা যায়, আওয়ামীলীগ এর 'যুদ্ধাপরাধীর বিচার' 'যুদ্ধাপরাধীর বিচার' নামক নাটককে (নাটক এজন্য যে, আওয়ামীলীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যু বাচিয়ে না রেখে শেষ করবে, তাদের দু'বছরের কার্যক্রম দেখে অন্তত তা মনে হবার যথেষ্ট কারণ নেই ) বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে জামাতের যুদ্ধাপরাধী নেতারা যখন একের পর এক যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে হাস্য-রসাত্মক মন্তব্য করে স্পর্ধার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন !


দুই

রোম যখন পুড়ছিল, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন । আমাদের একটা বাস নদীতে নিমজ্জিত হলে যখন প্রায়, ৭০ জন নাগরিকের প্রাণ নদের জলে ভেসে যায়, যখন বাসটি তুলতে ৫৪ ঘন্টা সময় লাগে, এমনকি দূর্ভাগাদের লাশটিও তাদের প্রিয়জনদের শেষবারের মতো দেখবার সৌভাগ্য ঘটেনা, সেই দৃশ্য দেখে যখন, গণতন্ত্রের গণমানুষ ভূমিকম্পে রাজধানী ঢাকাতে ২০ লাখের মতো মানুষ প্রাণ হারাবার দৃশ্যটি কল্পনা করেন, এবং অনুধাবন করেন যে, ভূমিকম্পের ২০দিন পর ২০টি লাশ উদ্ধারের পরই হয়তো উদ্ধার কাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে, কারণ, ৫৪ঘন্টায় নিমজ্জিত বাস উদ্ধারের কাহিনী আমাদের সেই সামর্থের সঙ্গেই পরিচয় করিয়ে দেয় ! তখন, আমাদের দুই নেত্রী অশ্লীল লাশের রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকেন । আমাদের একনেত্রী তার সমাভেশে ট্রেনে কাটা পাঁচটি লাশ নিয়ে মর্সিয়া গীত গায়তে গিয়ে নিছক দূর্ঘটনাটিকে ইচ্ছাকৃত হত্যা বলে রাজনীতি করেন । আমাদের অন্যনেত্রী যিনি আবার দেশের সর্ব্বোচ্চ আসনে অধিষ্টিত, দেশের অভিভাবকের জায়গা থেকে তিনি শিশুসূলভ দায়িত্বজ্ঞানহীন বিবৃতি দিয়ে বিনোদন বঞ্চিত নাগরিককে কাতুকুতুতে হাসানোর ব্যর্থ চেষ্টায় রত থাকেন । তখন, নিমজ্জিত বাসের প্রায় ৭০টি লাশ পাঁচটি রাজনৈতিক লাশের কাছে পরাজীত হয় ! তখন দুই নেত্রীর কাউকেউ সেই অভাগা ৭০ জনের জন্য মর্সিয়া বিলাপ জুড়তে দেখা যায়না, শোকগ্রস্থ হতে দেখা যায়না । সেই লাশগুলোর কাছে তাদের ছুটে যেতে দেখা যায়না, কারণ তখন তারা তাদের নগ্ন রাজনীতিতে নিমজ্জিত হয়ে থাকেন ।

আমান বাজারের ৭০ টি লাশের চে, খালেদার সমাভেশের ৫টি লাশের মূল্য কি বেশী ? সেই ৭০টি লাশের চে' রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসীনার দলীয় ক্যাডারের ৩টি লাশের দাম কতো বেশী ?

এই ঝগড়াটে দুই বৃদ্ধা, যাদের দেখে বস্তীবাসী ঝগড়াটে দুই বুড়ির কথা, কিম্বা শিক্ষা, বস্ত্র - বাসস্থান বঞ্চিত কোন গেয়োঁ মহিলার কথা মনে পড়ে যায়, তারা কেন, আমান বাজারের লাশগুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারেননা ?

তাদের এই উতকট রাজনীতি থেকে আমরা নিস্তার চাই । নিস্তার আমাদেরই হাতে । তাদের অন্ধ আনুগত্য থেকে বেরিয়ে আসবার শুভ বোধের উদয় হোক, দুই দলের অন্ধ সমর্থকদের মন এবং মননে !


সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১১:১৭
১৩টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×