somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নীল মনি
ভীষণ কঠিন পোড়ামাটিকে আবার সেই কাদামাটিতে ফিরিয়ে আনা,ভীষণ কঠিন আঘাত দেয়া শব্দমালা গুলো ফিরিয়ে নেয়া।ভীষণ কঠিন নিজের সম্পর্কে কিছু বলা।যে চোখ দেখিনি সে চোখ কেমন করে বিশ্বাস করবে জানি না।যে কখনো রাখিনি হৃদয়ের উপর হৃদয়;সে কেমন করে বুঝবে আমায়!

কপাল

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সব সংসারে এক কথা -শোন আমি বলে তোমার এ সংসার করে গেলাম।অন্য মেয়ে হলে এতদিন কবেই চলে যেত।কপাল ভালো আমার পাল্লায় পড়েছ।কর্তাবাবুর অবস্থা খারাপ।কানের দরজায় তালা মেরেছে।রোজ গিন্নির এমন খোঁচা শোনার ভয়ে কানে হেড ফোন লাগিয়েছে।তাতে নিস্তার নেই।আগে গিন্নি দূর থেকে পুরানো সেই রেকর্ডিং বাজাত এখন একেবারে কানের গোড়ায়। আরো বেশি ঝেঁঝিয়ে,আরো বেশি রুক্ষ কন্ঠে।আর কানে হেড ফোন লাগাতে দোষের ভাগ বেড়েছে।কয়েকদিন বেশ আরামেই ছিল। শীতকালটা ছিল।ওই মাফলার পেঁচিয়ে রেখে দিব্যি হেডফোন লুকিয়ে ফেলা যেত। কিন্তু যেই না গরম কাল এলো তখনি ভেজাল শুরু হল।এক সকালে ঘুম থেকে জেগেছে ওমনি শুরু হয়ে গিন্নির সেই ক্যাঁচক্যাঁচানি। আরে একদিন বাজার করতে দেরি হতেই পারে তার জন্য এতো বকাবকি মোটেও ঠিক না।মনে মনে ভাবলাম গান ছাড়ি হেডফোন দিয়ে।ওমা! গিন্নি গজগজ করতে করতে এসে আমার হেডফোনটাই ছিঁড়ে দিল।মেজাজটাই খারাপ হল।মনে হল বলেই দিই যাও অন্যঘরে যাও তুমি।কিন্তু সে কথা বলার উপায় নাই।বললে আমার রক্ষে নেই।নাটক -টিভিতে শুধু হয় না রে মশাই, ঘরেতেও হয়। গিন্নি কেঁদে কেটে একাকার।এর আগে একবার বলেছিলাম মুখ ফসকে কথাটা। সেইবার তো খারাপ অবস্থা আমার।গিন্নী আমার শ্বশুর আব্বারে বলে দিল।আব্বা শুনে তো আমারে বাড়িতে ডাকলেন।আমি লজ্জায় শেষ।আব্বারে কী বলি।আব্বা আমারে বেশি কিছু বললেন না। শুধু কইলেন বাবাজী আমার মেয়ের মাথা গরম কিন্তু মেয়ে আমার খুব ভালো।সেইটা আমিও বুঝছি।
মেয়ে কত ভালো! নাহ নাহ দোষ দিচ্ছি না। ওই বাসায় বাজার আসতে দেরি হলে একটু চিল্লাপাল্লা করে,মাসের হাত খরচ টা দিতে দেরি হলেও একটু আধটু রাগ করে।আমার গিন্নি বেজায় শক্ত। চারঘন্টা টানা শপিং করে মোটেও ক্লান্ত হয় না।তবে এটা ঠিক আমার অসুস্থতায় সে বডড ছটফট করে।সত্যি কপাল লাগে।সে যাইহোক প্রতিদিন সকাল বেলা অফিস যাই।অফিসে গিয়ে ফিরতে ফিরতে রাত বাজে নয়টা। কোন কোন দিন তার চেয়ে বেশি বাজে।ঘরে ঢুকে দেখা যাবে ছেলের মা দেখছে সিরিয়াল,ছেলে পড়া বাদ দিয়ে ফেসবুকিং।কিছু বললে বলে সারাদিন পড়েছি এখন অবসর।গিন্নি বলে মাত্র নিয়ে বসলাম।সারাদিন সংসারের অনেক কাজ করেছি।কর্তাবাবুর দিকে কেউ আর তাকায় না।ছেলে তার জগৎ নিয়ে ব্যস্ত। গিন্নী ব্যস্ত 'সাত ভাই চম্পা' নিয়ে।আমাকে এক গ্লাস পানি দিবে এমন কেউ নাই। সবাই সবার মত চলছে। আমিও তাই।নিজের মত থাকি।নিজের চা নিজেই বানাই।বারান্দায় গিয়ে বসি।এরপর ছুটির দিনগুলো শান্তি নেই।সেই বাজারের উৎপাত।বেল বাজছে।কেউ এসেছে।মিরর ভিউতে দেখি গ্রাম থেকে আমার বোন আর তার ছেলে এসেছে।গিন্নির আজ মেজাজ গরম,তার মধ্যে ও এসেছে।বোন আমার ভীষণ রাগী।আসলেই তার ভাবীর সাথে ঝগড়া বাঁধবে।বোনের রাগ ভাঙাব নাকি গিন্নির? সেই সময় মন বলে পালিয়ে যা রে, পালিয়ে যা। দূর অজানায়।
কী যে যুগ আসল মানুষ মেহমান দেখে খুশি হয় না।অথচ আগের যুগের মানুষ মেহমান না পেলে রাস্তাঘাট থেকে মেহমান ধরে আনত।আহা সেই সব সোনালি যুগ কই গেছে।এখন খালি সবার মুখে ক্ষীর কাঠাঁল আর অন্তরে বিষ।ক্যান আসলো,যায় না কেন,কবে যাবে।এসব চিন্তায় বিভোর।আন্তরিকতা উঠে গেছে।মানুষগুলো জানে না মেহমান হল রহমত স্বরূপ।কোথায় যেন পড়ছিলাম।সব ভালো মনেও নেই। মেহমান যখন ফিরে যায় তখন সে ওই বাড়ির সমস্ত গুনাহ নিয়ে সাগরে নিক্ষেপ করে অর্থাৎ ওই বাড়ির মানুষ গুনাহ থেকে পাক পবিত্র হয়।এই যুগে মেহমান মানে বাড়তি ঝামেলা।এক কাপ চা দিতেও মনে হয় অনেক কষ্ট হয়।এই জন্য কোন বাসায় এখন আর চা খাওয়ার কথা বলে না।বললে বলে একটু চা করে দেব? আরে জিজ্ঞেস করার কী আছে? দিতে চাইলে বানায় দে।
বোন রে জিজ্ঞেস করি কী রে হঠাৎ কী মনে করে!বোন আমার কথা বলে ফিসফিস করে। ভাইজান টাকা লাগব। ঘর করব।আমি বলি কত টাকা।বলে চার লাখ টাকা।আমি বলি এত টাকা তো নাই।বোন আমার কান্না শুরু করে।আমি বলি দেব কিছু।তাও কাঁদে।গিন্নি আমার রান্নাঘর থেকে ছুটে আসে।এই সেরেছে।গিন্নি এবার সব জেনেই ছাড়বে।জিজ্ঞেস করে। আমি সত্যিটা বলি।গিন্নি শুনে কয় আমার অ্যাকাউন্টে লাখ দুয়েক টাকা আছে ওটা দিয়ে দাও।
এও কি সত্যি।আমি নিজের কপালে হাত বুলিয়ে বললাম কপাল আমার সত্যি ভালো;তোমায় পেয়েছি বউ।গিন্নি আমার হাসে।গিন্নি আবার বলে শোন আমি বলে তোমার এ সংসার করে গেলাম।অন্য মেয়ে হলে এতদিন কবেই চলে যেত।কপাল ভালো আমার পাল্লায় পড়েছ।
আমি হাসলাম। এই প্রথম এই কথাটি শুনতে আমার বড়ই মধুর লাগল।আহা এমন গিন্নি পেতে কপাল লাগে কপাল!
@রুবাইদা গুলশান

#মজার লেখা লিখতে পারি না,সামান্য প্রচেষ্টা।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৩:১৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×