ছেলের স্কুলে গিয়ে বসে থাকতে ভালো লাগে না অনামিকার।স্কুলের বাইরে প্রতিদিন অভিভাবকের জটলা বাদে।অভিভাবকদের পাহাড় সমান অভিযোগ।স্কুল ছুটি হবার আগে কিংবা পরে অবলীলায় শিশুদের সামনে এসব অভিযোগ করতে থাকে মায়েরা।পাখা নেই,বেঞ্চ খারাপ,আয়া নেই, টয়লেটের অবস্থা খারাপ,দারোয়ান বেশি কথা বলে এরকম কত অভিযোগ এমনকি যৌন নির্যাতনের কথা শোনা যায়।অনামিকা এসব ব্যাপারে কারো সাথে কথা বলে না। নিজের মত থাকে একটা বড় বটগাছের ছায়ায়।হয়ত বই পড়ে না হয় গান শোনে হেড ফোন লাগিয়ে তবুও এসব কথা শোনা তো যায়।কেউ কেউ গায়ে পড়ে এসে কথাগুলো বলে।
এক মা বলছেন, তিনি তার সন্তানকে 'গুড টাচ' ব্যাড টাচ শিখিয়েছেন।বাচ্চারা সত্যি কি বুঝতে পারে? বুঝতে পারলে ওরা যদি ব্যাড টাচ চিনতে না পারে তখন কী হবে?আর শুধু কন্যাশিশুকে শেখানো তো অন্যায়। পুত্র সন্তান শিখুক কোনটি ব্যাড টাচ তার বোনের জন্য,তার মায়ের জন্য,সবার জন্য।
এই টাচ শেখানোর মাধ্যমে শিশুরা সত্যি কী শিখছে?
শিশুদের মনের মাঝে প্রভাব কি পড়ছে না? তারা দেখছে তাদের চারিদিক অবিশ্বাসে ভরা,তাদেরকে আমরা বয়সের আগেই বড় বানিয়ে দিচ্ছি।সতর্ক করতে গিয়ে আমরা তাদেরকে ঠেলে দিচ্ছি এমন এক পৃথিবীতে যেখানে সে প্রতিটা মানুষকে দেখে অবিশ্বস্ততার চোখে,প্রতিটা মানুষকে দেখে ঘৃণ্য মনোভাব নিয়ে।নিজেদেরকে গড়ে তোলে সীমাহীন সংকীর্ণতায়।সচেতনতা ভালো তবে অধিক সচেতনতা মানুষের প্রতি অবিশ্বাসী ও বিশ্বাসঘাতকতা সৃষ্টি করে।
@রুবাইদা গুলশান
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১১