somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্বাক বসন্ত [মোট ২৫ পর্ব] পর্ব-২৩

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দুবাই থেকে জাহাজ আমস্টারডাম যাবার আগে অস্থির হয়ে সাইন অফ করে শুধু নিরুর জন্য দেশে ছুটে এসেছিল চৌকস সেকেন্ড অফিসার নিশাত জামান যে কিনা আর কয়েকদিন পরেই এমনি এক জাহাজের চিফ অফিসার হবে। ক্যাপ্টেন স্টিভ বারবার বলছিল
জামান তুমি আমস্টারডাম যাবার পর সাইন অফ কর!
না, সে কথা মানেনি। তাকে শুধু বলেছিল
দেখ স্টিভ, তুমি প্লিজ আমাকে বাধা দিও না, যে করেই হোক নিরুকে আমার চাই ই চাই ওকে ছাড়া আমার জীবন ভাবতে পারিনি কোনদিন।
ক্যাপ্টেন স্টিভ অবাক হয়েই বলেছিল
‘হু ইজ নিরু?’
ওহ স্টিভ সরি! আমি তোমাকে বেফাঁস বলে ফেলেছি। নিরু ইজ মাই ডার্লিং এন্ড মাই ড্রিম এন্ড আই কেন নট সারভাইভ উইদাউট নিরু! গত কয়েকদিন থেকেই আমি ওকে স্বপ্নে দেখছি আর এখানে আসার পর ওর চিঠিতে জরুরী এক সংবাদ জেনেছি!
আই মিন ইউ আর টেলিং এবাউট ইয়োর লাভ এফেয়ার? যার ছবি তোমার কেবিনে সাজান রয়েছে?
ইয়েস স্টিভ, ইউ আর রাইট!
ও! রিয়েলি সি ইজ এ নাইস লেডি!
বেটার ইউ আসক ফর এনাদার সেকেন্ড অফিসার এন্ড রিলিজ মি। আই উইল জয়েন আফটার এ মন্থ হোয়েন ইউ উইল বি ইন লন্ডন!
ঠিক আছে জামান তুমি যাও আমি তোমার টিকেটের ব্যবস্থা করছি। আর দেখি ইরান বা ইন্ডিয়া থেকে কোন সেকেন্ড অফিসার পেলে তাকে দিয়ে এই এক মাস চালিয়ে নিচ্ছি তবে তুমি জানতো আমস্টারডাম থেকে আমরা মাইনর রিপেয়ারের জন্য লন্ডন যাব এবং তুমি কিন্তু আমরা লন্ডন ছেড়ে যাবার আগেই ফিরে আসবে।
হ্যাঁ ঠিক আছে তুমি দরকার মনে করলে আমার টিকেট ওই ভাবে করিয়ে নিতে পার দুবাই-ঢাকা-লন্ডন।
আচ্ছা জামান ঠিক আছে আমি তাই করছি। উইশ ইয়োর বেস্ট লাক এন্ড হ্যাভ আ নাইস টাইম উইথ নিরু।

সঙ্গে সঙ্গে দুবাইর এজেন্ট ইউসুফ বিন আহমেদ কানুর অফিসে রেডিওতে জানিয়ে দিয়েছিল। আমাকে জরুরী ভাবে একজন সেকেন্ড অফিসার দাও, এখানে থাকতেই যেন পাই আর নিশাত জামানের জন্য দুবাই- ঢাকা-লন্ডন একটা টিকেট করে দাও ঢাকা ডিপার্চার হবে এক মাস পর। ওকে ক্যাপ্টেন। ঠিক তিন দিন পরের একটা তারিখে নিশাতের ঢাকা যাবার টিকেট পাঠিয়ে দিল তার পর দিন এবং তার পর দিন ইন্ডিয়ান এক সেকেন্ড অফিসার এলো নিশাতের জায়গায়। টিকেট হাতে নিয়ে দেখে পরশু রাতে বিমানের ফ্লাইটে ঢাকা যাবে এবং আগামী জানুয়ারি মাসের ২৬ তারিখে বিমানের ফ্লাইটে আবার দুবাই ট্রানজিট হয়ে গালফ এয়ারে লন্ডন। সময়মত সাইন অফ করে সিডিসিটা নিয়ে সন্ধ্যায় এজেন্টের গাড়িতে দুবাই এয়ারপোর্টে চলে এলো। সারাক্ষণ একটা কথাই মাথায় ঘুরছে, হঠাৎ নিরু এতোটা ব্যস্ত হলো কেন? এমন কি হয়েছে? নিরু ভাল আছেতো? গত দুই বছর ধরেই নিরু বলছে আপনি দুলাভাইকে বলুন। কিন্তু নিশাতই বলতে পারছিল না, ভেবেছিল চিফ অফিসার না হয়ে নিরুকে আনবে না। যতবার ঢাকায় গেছে প্রতিবারেই সিঙ্গাপুর থেকে কেনা ইয়াশিকা ইলেক্ট্রো ৩৫ জিএসএন ক্যামেরা দিয়ে অনেক ছবি তুলেছে এবং তখন দেশে রঙ্গিন ছবি ওয়াস প্রিন্ট হতোনা বলে সিঙ্গাপুর কিংবা মিডল ইস্টের কোথাও থেকে প্রিন্ট করিয়ে নিত। ছবিগুলি নিরুকে দেখাবার পর সব নিশাতের আলমারিতে যত্নে রেখে দিয়েছে। কিছু ছবি নিয়ে যেত সাথে করে। জাহাজে ওর রুম সাজাত নিরুর ছবি দিয়ে। সাত বছরের ছবি গুলো বছর অনুযায়ী ভাগ করে করে সাজাত। বিয়ের পর সবাইকে এই ছবি দেখিয়ে চমকে দিবে বলে দেশে কাউকে এই ছবি দেখাত না।

দুবাই এয়ারপোর্ট থেকে টেক অফ করার পর রাতের ডিনার সার্ভ করল তার পরে প্লেনে বসে পাঁচটি ঘণ্টা ধরে এক নিরু ছাড়া আর কোন চিন্তা মাথায় আসেনি। দূর সম্পর্কের চাচার মেয়ে নিরুকে কাছে থেকে দেখার কথা আজও ভুলেনি। নিশাত যখন সবে মাত্র ক্যাডেট হিসেবে জাহাজে জয়েন করতে লন্ডন যাচ্ছে। নিরু তখন কলেজে ভর্তি হবে। দেখা অনেক হয়েছে। একই গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি। যদিও নিশাতের বাবা চাকুরী উপলক্ষে করাচী সহ বিভিন্ন শহরে বসবাস করে কিন্তু গ্রামে নিয়মিত যাতায়াত আছে। জমিজমা দেখতে হয়, শীতের খেজুর রস, পিঠা, আম বাগানের আম খেতে হয় তাছাড়া ঈদ পার্বণে গ্রামে আসতেই হয়। তখন অনেক দেখেছে কিন্তু কখনও তেমন করে চোখে পড়েনি।
[চলবে। এতক্ষণ নিশাতের সাথে নিরুর চায়ের নিমন্ত্রণের অপেক্ষায় থাকুন। ধন্যবাদ]
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×