somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ঋণাত্মক শূণ্য
দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

বিদ'আতে শয়তান খুশি! কেন?

২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিদ'আত; ইসলামী শিক্ষামতে ইসলামের ভিতর ইবাদত হিসাবে যে কোন কিছু নতুন সৃষ্টি করা (যাতে আল্লাহর নির্দেশ নেই, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম করে দেখিয়ে যান নাই কিংবা বলে যান নাই) হচ্ছে বিদ'আত। বিদ'আত মূলত মানুষ সওয়াব পাওয়ার আশাতেই শুরু করে; ভালো মনে করে শুরু করে। কিন্তু ইসলামে বিদ'আত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ মর্মে এরবায বিন সারিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “(ধর্মের মাঝে) নতুন কিছু সৃষ্টি করা থেকে তোমরা সাবধান! কেননা প্রত্যেক নতুন সৃষ্টি পথভ্রষ্টতা।” (আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, ইবনু হিব্বান হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

অনেকেই বলেন এটাতো বারণ নাই; ওটাতো বারণ নাই। মূল বিষয় হচ্ছে উপরের যে হাদিসটি দেওয়া হয়েছে; এবং এরূপ আরও প্রচুর হাদিস আছে যার দ্বারা প্রমানিত যে নতুন কোন ইবাদাত তৈরী হলেই সেটা বিদ'আত আর প্রত্যেক বিদ'আতই বাতিল। যদিও আমাদের সমাজে কিছু লোক বলে থাকেন যে কিছু বিদ'আত আছে ভালো (নাউজুবিল্লাহ)। তারা কি এটা বুঝেন না যে যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল বিদ'আত কে, জ্বী হ্যাঁ সকল বিদ'আতকেই প্রথভ্রষ্টতা বলেছেন।

আমাদের সমাজে প্রচলিত বিদ'আত গুলির মধ্যে আজকে একটি বিদ'আত পালন হচ্ছে, ঈদ-ই-মিলাদুন নবী নামে। যেটি স্পষ্ট বিদ'আত; কিন্তু কিছু মানুষ এটি পালনে খুবই তৎপর। এমনকি তারা এটি পালনের স্বার্থে রাসুলুল্লাহ ও তাঁর সাহাবীদের নামে মিথ্যা কথা প্রচারেও পিছ পা হচ্ছেন না!

বিদ'আত জিনিষটার শুরু হয় ভালো মনে করে, আর একারণে অনেকেই বিদ'আত থেকে চেষ্টা করেও ফিরে আসতে পারেন না।

নিচের অংশটুকু এই ব্লগেরই একজন ব্লগারের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া; আমি কথাগুলির সাথে একমত দেখেই সরাসরি কপিপেষ্ট করে শেয়ার করছি।

কেন শয়তান বিদ'আতে খুশি হয়


১. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "অতঃপর, সর্বোত্তম বাণী হল আল্লাহর কিতাব। সর্বোত্তম হেদায়াত হল মুহাম্মাদের হেদায়াত। সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যাপার হল এর মাঝে নতুন কিছু সৃষ্টি করা। আর প্রত্যেক বিদ'আতই ভ্রষ্টতা"। অর্থাৎ বিদআত করলে সে সরাসরি ভ্রষ্টতার মধ্যে পড়লো, শয়তান খুশি না হয়ে যায়?

২. আবার উপরের হাদিসেই ফেরৎ আসেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন যে প্রত্যেক বিদ'আতই ভ্রষ্টতা; আর সেখানে কিছু বিদ'আতী বলে, কিছু বিদ'আত আছে ভালো! সরাসরি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথার বিরোধীতা করানো যাচ্ছে; শয়তান খুশি না হয়ে পারে?

৩. আরও একটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, "আল্লাহ তা’আলা বিদআতকারীর তওবায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাখেন যতক্ষণ না সে তার বিদআত পরিত্যাগ না করে।" - এখন যে বিদ'আত করছে সে তো মনে করে ভালো কিছু করছে; আর সে ভালো কিছুর জন্য কেন তওবা করবে? সেহেতু বিদ'আতী বিদ'আত করতে করতেই ধ্বংসের পথে এগিয়ে যায়; আর শয়তান হয় খুশি।

৪. আরও একটি বর্ণনায় এসেছে, "যে ব্যক্তি বিদআতীকে আশ্রয় দেয় তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ"। এখন আশ্রয় মানে কি শুধু ঘরের মধ্যে ঢুকায় থাকতে দেওয়া? আরও বড় করে চিন্তা করলে দেখবেন যদি কেউ কোন বিদ'আতীর কথাবার্তাকে সাপোর্ট করে, সেটাও তাকে আশ্রয় দেওয়ারই নামান্তর হয়। আর আমি-আপনি এই কাজটি করে (বিদ'আতের পক্ষে সাফাই গেয়ে) আল্লাহর অভিশাপে পড়ছি; শয়তান খুশি না হয়ে উপায় আছে?

৫. আরও একটি বর্ণনায় এসেছে, "অচিরেই আমার পরে এমন সব লোক তোমাদের নেতা হবে যারা সুন্নাতকে বিলুপ্ত করবে, বিদ'আতের অনুসরণ করবে এবং নামায নির্দিষ্ট ওয়াক্ত থেকে বিলম্বে পড়বে।" সুন্নাত বিদায় করে বিদ'আতএর জায়গা হচ্ছে, পাকাপোক্ত হচ্ছে; আর শয়তান খুশি না হয়ে উপায় আছে?

৬. আরও একটি বর্ণনায় এসেছে, "শুনে রাখো ! আমি তোমাদের আগেই হাওযে কাওসারে উপস্থিত থাকবো। অন্যান্য উম্মাতের তুলনায় তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে আমি গৌরব করবো। তোমরা যেন আমার চেহারা কালিমালিপ্ত না করো। সাবধান! কিছু লোককে আমি মুক্ত করতে পারবো। আর কিছু লোককে আমার নিকট থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হবে। তখন আমি বলবো , হে আল্লাহ ! এরা তো আমার সাহাবী ! তিনি বলবেনঃ তোমার পরে এরা কী বিদআতী কাজ করেছে, তা তুমি জানো না।" কষ্ট করে ইবাদাত মনে করে কাজ করবেন; আর কেয়ামতের দিন আপনাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া হবে; এটাও কি শয়তানের জন্য খুশির খবর নয়?

৭. আরও একটি বর্ণনায় এসেছে, "কেউ বিদআত চালু করলে তার দায় তার উপর বর্তাবে। কোন ব্যক্তি বিদআত চালু করলে বা বিদআতীকে মুক্তি দিলে তার উপর আল্লাহর অভিশাপ এবং ফেরেশতা ও মানবকুলের অভিশাপ।" কেউ কারও কারণে বিদ'আত করলে এই পাপের ভাগ যার কারণে বিদ'আত শুরু হলো সে পাবে; আবার আল্লাহ, ফেরেস্তা এবং মানুষের অভিশাপ তাদের উপর পড়বে। শয়তান খুশি না হয়ে কই যায় বলেন?

যে লোক চুরি করে, ডাকাতি করে, খুন, ঘুষ খাওয়া, সুদ খাওয়া সহ বিভিন্ন পাপ কাজ করে; তার মাঝে মধ্যে হলেও মনে হয় যে সে খারাপ কাজ করছে। তার হেদায়াত পাওয়ার জন্য এই মনে হওয়াটাও কাজ করতে পারে। কিন্তু যিনি বিদ'আত করছেন, তিনি সব সময়ই মনে করছেন যে তিনি ভালো কাজ করছেন। এবং তার এই চিন্তা তাকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রাখে যে তিনি "বিদ'আত" বিষয়টা যে কি তাও একটু জানতে চান না। ভালো কাজ করছেন শান্তি নিয়েই চলতে থাকেন।

উপরের সকল হাদিসের রেফরেন্স অবশ্যই আছে; এবং সকল হাদিসই সহীহ হাদিস। ইচ্ছাকরে রেফরেন্স দেই নাই। যদি কোন ভাই/বোন ঘাটতে গিয়ে বিদ'আত সম্পর্কে আরও একটু পড়েন; এই আশাতেই।

আল্লাহ আমাদেরকে বিদ'আত থেকে বাঁচার তৌফিয়ক দান করুন। আমিন।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২১
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×