শহীদ নুর হোসেন দিবস আজ। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৮৭ সালের এই দিনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন তিনি। আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে নুর হোসেন একটি অবিস্মরণীয় নাম। ১৯৮৭ সালের ১০ই নভেম্বর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের এক লড়াকু সৈনিক হিসেবে তিনি রাজপথে নেমে এসেছিলেন বুকে পিঠে ’গনতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ স্লোগান লিখে। তার রক্তের ধারা বেয়েই ’৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাসকের পতন ঘটে, মুক্ত পায় আমাদের গণতন্ত্র।
নূর হোসেনের এই আত্মত্যাগ তত্কালীন স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী মানুষের আন্দোলনকে বেগবান করে। এ দিনে হাজারো প্রতিবাদী যুবকের সঙ্গে জীবন্ত পোস্টার হয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল অকুতোভয় নূর হোসেন। তাঁর বুকে-পিঠে উত্কীর্ণ ছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এই জ্বলন্ত স্লোগান। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অকুতোভয় সেই যুবকের অগ্নিঝরা স্লোগান সহ্য হয়নি তত্কালীন স্বৈরশাসকের। স্বৈরাচারের লেলিয়ে দেয়া বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালিয়ে তাঁর বুক ঝাঁঝরা করে দেয়। এই আন্দোলনের জোয়ারে নব্বইয়ের শেষ দিকে ভেসে যায় স্বৈরাচারের তক্তপোশ। শহীদ নূর হোসেনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তীব্রতর হয় এবং অব্যাহত লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে।
যে স্বপ্ন চোখে নিয়ে জীবন উৎসর্গ করে ছিলেন নুর হোসেন, তাঁর সে স্বপ্ন আজোও সফল হয়নি।
১৯৯০ এর মুক্ত হওয়া গণতন্ত্র আবার শৃংখলিত হয়েছে, ধংশ হয়ে গেছে গনতন্ত্রের মূলমন্ত্র। তার সে অবদান কি বৃথা গিয়েছে নাকি সেটা আজ সত্যই প্রশ্নের সম্মুখীন।
আজ এই দিনে আমার সত্যই জানতে ইচ্ছে হয়, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল গুলি যেভাবে দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের আবেগ কে পাথর চাপা দিয়ে, গনতন্ত্র কে টুটি চেপে ধরেছে। আর এরশাদের মতও স্বৈরাচার কে আবার ক্ষমতায় দেখতো! তাতে নুর হোসেন যদি টাইম মেশিনে করে আজকের এই অবস্থা দেখতে পেতেন তাহলে তিনি কি এভাবে নিজের জীবন বিলিয়ে দিতেন? নাকি সেদিন মতিঝিলে ঘরোয়া হোটেলে যেয়ে খিচুরী খেয়ে বাসায় ফিরতেন?
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, নভেম্বর, ২০১৮
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:২২