somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেখা যাক নির্বাচনের আগে সরকারের শেষ বাজেটে ‘ডালাখানি ভরে’ কাকে কী দিলেন অর্থমন্ত্রী।

০৮ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রবীন্দ্রনাথের গানে আছে, ‘যাহা-কিছু ছিল সব দিনু শেষ করে/ডালাখানি ভরে-/কাল কী আনিয়া দিব যুগল চরণে/তাই ভাবি মনে’। কালকের কথা পরে, এখন দেখা যাক নির্বাচনের আগে সরকারের শেষ বাজেটে ‘ডালাখানি ভরে’ কাকে কী দিলেন অর্থমন্ত্রী।

**গরিব মানুষ আগের চেয়ে কম দামে পাউরুটি খেতে পারবেন এবং স্যান্ডেলের দামও কমবে তাই তারা স্যান্ডেল পরতে পারবে।
**মধ্যবিত্তদের জন্য বরং সংকট বেশি কারন যারা চাচ্ছিলেন ছোট একটা ফ্ল্যাট কিনবেন তাদের জন্য ছোট ফ্ল্যাট কেনার পরে নিবন্ধনে খরচ বাড়বে মানে কেনার কি দকার ভাড়া বাসায় থাকুন :)
**যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে পোশাকসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করে কিছু একটা করার চেষ্টা করছিলেন, তাঁদের এখন কর দিতে হবে :) বিসিএস না দিয়ে নিজে কিছু করার চেষ্টা করলে তো এমন হবেই তাইনা।
**নিজের গাড়ি নেই তাইলে একটু আরামে যেতে পাঠাও-উবার আছে ইউজ করতেন ব্যয় বাড়বে এখানেও, কারন আপনাকে এত আরাম কে করতে বলছে।
**নিজে একটা পুরানা গাড়ি কিনতে চাচ্ছিলেন অনেকদিন ধরে কিছু টাকা জমিয়ে দাম বাড়বে পুরোনো গাড়ির, নতুন কিনেন তাইলে অনেকগুলা ট্যাক্স দিতে পারবেন, দেশের জন্য কিছু একটা করা উচিত তাইনা।
**করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়নি। অথচ মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে।
**পোশাক খাত কেবল ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, ফলে এই সময়ে করপোরেট কর বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত ভালো সিগন্যাল নয়।
**সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে আবারও আশার কথা শোনালেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এবারসহ মোট চারবার এ আশার কথা শোনালেন তিনি। বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে যে মান্না দের সেই গানের কলি মনে পড়ে যায়, ‘আশায় আশায় তবু এই আমি থাকি, যদি আসে কোনো দিন সেই সুখপাখি’।
**

এবার দেখা যাক, উচ্চবিত্তদের জন্য কী দিলেন অর্থমন্ত্রী।

**একটু বড় আকারের ফ্ল্যাট নিবন্ধনে খরচ খানিকটা কমবে কারন উনারা তো আবার ছোট ফ্ল্যাট কেনার সামর্থ্য রাখেন না।
**তবে সত্যিকার অর্থে অর্থমন্ত্রী ‘ডালাখানি ভরে’ দিয়েছেন কেবল ব্যাংকমালিকদেরই। ব্যাংকের করপোরেট করহার কমানো হয়েছে আড়াই শতাংশ। এর ফলে তাঁদের লাভের পকেট বরং আরেকটু ভারী হবে। এ ছাড়া আয়করেও খানিকটা ছাড় দেওয়া হয়েছে বেশি আয়কারীদের।
**অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল বৃহস্পতিবার টানা দশমবারের মতো যে বাজেটটি দিলেন, তাতে বিগত ১০ বছরের একটি মূল্যায়ন আছে ঠিকই, কিন্তু ‘কাল কী আনিয়া দিব যুগল চরণে’, তার কোনো বিবরণ পাওয়া গেল না।

কিছু ভালো জিনিস

**শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ, স্থানীয় বিনিয়োগ বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও মোবাইল সেট উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি।
**বাজেটের একটা ভালো দিক হলো, যেসব ব্যক্তির একাধিক গাড়ি আছে, তাদের গাড়ির ওপর সারচার্জ বসানোর সিদ্ধান্ত।
**পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, এতে ব্যবহার কমবে, বাঁচবে পরিবেশ।
**চাল আমদানিতে আবার ২৮ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে, এতে কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পাবেন।

সংকটের উল্লেখ নেই

গত এক বছরেই দেশে সবচেয়ে আলোচিত ছিল দুই বিষয়। যেমন সরকারি ব্যাংক খাতের সংকট বেসরকারি খাতে ছড়িয়ে পড়া আর রোহিঙ্গা সংকট। এই দুই অধ্যায় সামান্য ছুঁয়ে গেছেন অর্থমন্ত্রী। এক জায়গায় বলেছেন, ‘দু-একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি সাময়িক উদ্বেগ তৈরি করলেও সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।’ এর পুরস্কার হচ্ছে করপোরেট করহারে মালিকদের ছাড়। এই ছাড় পাওয়ার কারণে আমানতকারীরা সামান্যতম সুবিধা পাবেন না, কমবে না ঋণের সুদহার। অন্যদিকে, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে দেশের মানুষের করের টাকার কত অংশ বাড়তি ব্যয় হচ্ছে, তার কোনো হিসাবই দিলেন না অর্থমন্ত্রী। অতিথি খাতে কত ব্যয় তা জানার অধিকারটাই পেলেন না সাধারণ করদাতারা।

কিন্তু দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত। এই খাতের বিনিয়োগের কোনো খবরের কথা উল্লেখ করলেন না অর্থমন্ত্রী। রবীন্দ্রনাথকে ধার করে বলতে পারি, ‘তোমার বীণায় সব তার বাজে,/ওহে বীণকার,/তারি মাঝে কেন নীরব কেবল/একখানি তার। কারণ, অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই ‘তার’টির অবস্থা ভালো নয়। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বেড়েছে সামান্য।

তথ্য সুত্রঃ প্রথম আলো, বাংলা ট্রিবিউন এবং বাজেট অধিবেশন।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×