আমার লিস্টে যারা ডাক্তার আছেন, তাদের অধিকাংশই আমার সব পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়েন, কিন্তু ডাক্তারদের নিয়ে কিছু লেখা বা পোস্ট দেয়া অথবা ভূল চিকিৎসার অভিযোগে রোগী মারা গেলে, সেই অভিযোগের খবর শেয়ার করলেই শুধুমাত্র কমেন্ট বা মেসেজ দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেন। এই বিশেষ সময়টুকুতে আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান ও ধন্য মনে করি, বাকি সময় তো ভুলেই যাই আমার এতো ডাক্তার বন্ধু আছে! তাদের একতার প্রশংসা করতেই হয়।
.
সাংবাদিকদেরও এটা পেশা যে সমাজের কোথাও কোনো অনিয়ম বা অসঙ্গতি চোখে পড়লে তা সবার সামনে তুলে আনে, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। কাজেই, অন্যান্য সকল ক্ষেত্রের মতো চিকিৎসাক্ষেত্রেও অনিয়ম হলে বা সুচিকিৎসা না হলে বা এমন কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠলে সেটা নিয়েও তারা প্রতিবেদন করেন, করাটাই তাদের পেশা। এজন্য একজন সাংবাদিকের সকল ডাক্তার বন্ধু কেন নারাজ হবে? অথচ দেখা যায়, ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলেই সকল ডাক্তার এক হয়ে যান। খুব ভালো কথা। কিন্তু অভিযোগ ওঠার কথা লেখা আর অভিযুক্ত করা কি এক কথা? এটা তো ঠিক যে ঢাবির ঐ শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে একটা সন্দেহ তার সহপাঠিদের মধ্যে আছে, এজন্য তারা হাসপাতালে ভাংচুরও চালিয়েছে। এই কথাটাই তো লিখেছে পত্রিকা, সরাসরি তো ডাক্তার বা হাসপাতালকে দোষ দেয়নি, তাই না? প্রমাণ হাতে না এলে মূল ধারার কোনো পত্রিকা তা করেও না।
.
ভালো-মন্দ সব পেশাতেই আছে। অসাধু ডাক্তার যেমন আছে তেমনি অসাধু সাংবাদিকও হয়তো আছে। তাই বলে সন্দেহটা প্রকাশ করা যাবে না? বাকস্বাধীনতা থাকবে না? সাংবাদিকরা লিখবেন, ডাক্তাররাও একমত নাহলে প্রতিবাদ করবেন, এটাই স্বাভাবিক। অথচ ডাক্তাররা হর-হামেশাই বলে থাকেন, ডাক্তারদের নিয়ে কিছু লিখতে হলে ডাক্তারি জেনে বুঝে নাকি আসতে হয়। আপনারা কি ভাই সাংবাদিকতা শিখে এসে সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? নিশ্চয়ই না। এটাও ঠিক না যে সব ডাক্তার রোগীর সঠিক চিকিৎসা দেন, হাসপাতালগুলোতে কোনো অনিয়ম হয় না। আমার মাস দুয়েক আগের অভিজ্ঞতা বলে একই রোগীর চোখের পাওয়ার দুইদিনের ব্যবধানে দুজন ডাক্তার দুইরকম (অনেকটা ব্যবধান) নির্ণয় করেছেন।
.
কাজেই, আসুন সকল ক্ষেত্রেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, ভালোকে খারাপ থেকে আলাদা করি। যার যার পেশায় থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে চেষ্টা করি।
+দেব দুলাল গুহ