প্রবীণ জনপ্রিয় অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানকে এশিয়ান টিভির একটি টকশোতে উপস্থাপক মীর সাব্বির প্রশ্ন করছেন। হাতের মোবাইল থেকে দর্শকদের প্রশ্ন তিনি একে একে তুলে ধরছেন।
মীর: আপনার পারিবারিক অনেক সমস্যার কথা আমরা শুনেছি। এর পরেও আপনি কী করে এতো সুন্দর করে হাসির নাটকে অভিনয় করেন, হাসেন?
এটিএম: আমি যখন অভিনয় করি, তখন আমি (মাথায় হাত দিয়ে দেখিয়ে) মাথার সব সার্কিট অফ করে দেই। যতক্ষণ অভিনয় করি, ওর(চরিত্র) মধ্যে ডুবে থাকি। আবার যখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসি, তখন আবার সবকিছু মনে পড়ে যায়।
মীর: আচ্ছা, পরের প্রশ্ন হলো, আপনিতো অনেক ধার্মিক একজন মানুষ। কিন্তু নাটকে আপনার সংলাপ শুনে অনেক সময় মনে হয়, আপনি অধার্মিক! এটা কেন?
এটিএম: আমি ধার্মিক না। হ্যাঁ, আমি ধার্মিক না। আমি একটা ধর্ম পালন করি, একটা পদ্ধতি মেনে চলি, পালন করতে চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি, ধর্ম মানে মানুষকে ভালোবাসা। ধর্ম মানে পরচর্চা পরনিন্দা না করা, মানুষের ক্ষতি না করা, পারলে উপকার করা। আমার ধারণা সব ধর্মগ্রন্থই এটা বলে, আমাদের পবিত্র কোরআন থেকে বুদ্ধিজম সনাতনী ধর্ম, সব। আমার কাছে ধর্ম মানে মানুষকে ভালোবাসা।
মীর সাব্বির: আমরা মনে হয় উত্তরটা পেয়ে গেছি।
.
এটিএম শামসুজ্জামানের বয়স কম নয়। অনেক বছর ধরেই তিনি অভিনয় জগতে আছেন। কিন্তু তিনি অসম্ভব মেধাবি ও গুণী শিল্পী হওয়া স্বত্বেও খুব সাদামাটা জীবন যাপন করেন। সাংসারিক সমস্যার কথা বোধ করি কারো অজানা নয়। এরপরেও তিনি যে নীতিতে চলেন, যে ধর্মকে ধারণ করেন হৃদয় দিয়ে, আমি তাকে শ্রদ্ধা জানাই।
আসলেই, পূজার্চনা করা, অতিরিক্ত খরচ করে দেবীর মূর্তি বানিয়ে বাজি পটকা ফুটিয়ে পূজা করা কিংবা পশু কোরবানি বা বলি দেয়াটাই শুধু ধর্ম নয়, পরের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয়া, মনের পশুত্ব বা খারাপ প্রবৃত্তিকে কোরবানি দেয়া, কারো ক্ষতি না করা, সৎপথে নীতি নিয়ে চলা, মনকে পবিত্র রাখা, পরচর্চা পরনিন্দা না করা, লোভ না করা --এসবই ধর্ম। সব ধর্মেই এই কথাগুলো কমন বলে আমার ধারণা। আসুন, এটিএম শামসুজ্জামান এর মতো আমরাও ধর্মের সারকথা বুঝে প্রকৃত ধার্মিক হই।
সবাইকে পবিত্র ঈদের শুভেচ্ছা জানাই। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ঈদ।
ধর্ম যার যার,
উৎসব সবার।
দেব দুলাল গুহ / দেবু ফরিদী
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫০