মেয়েটার 'আত্মহত্যা'র খবর পেলাম এইমাত্র। কোনোদিন দেখি নাই, চিনতাম শুধু ওর বাবাকে। মেয়েটার সাথে এইতো গত পরশুদিন আঙ্গিনার উৎসবে প্রথম দেখা, পরিচয়ও হয়নি। তবে ও সম্ভবত আমাকে চিনতো। আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলছিলাম, আর ও বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। লাল শাড়ি পরা ছিলো, আর চোখজোড়ায় বড় বড় করে কাজল দেয়া ছিলো। এটুকুই মনে আছে শুধু।
.
আমার এলাকার এক ছোটভাইয়ের সাথে সম্পর্ক ছিলো বলে শুনেছি। আমি আরও মজা করে বলতাম, 'আর কাউকে পাইলি না পাগলা!?' ও বলতো, 'দাদা, ভালো লেগে গেছে, কী করবো বলেন?ওই আগে..' আমি বলতাম, 'সেটাই। এসব হঠাৎ হয়ে যায়। কিছুই জেনে বুঝে হয় না।'
.
ওর সুবাদেই ফেসবুকে দেখেছিলাম একবার। উৎসবের সেই শেষদিনই যে শেষ দেখা হবে,বুঝিনি। আজ দু:সংবাদটা শোনার পর থেকে বারবার ওর মায়াকরা চাহনিটা মনের পর্দায় ভেসে উঠছে। কত কিছু করার ছিলো ওর, কত কিছু দেওয়ার ও পাওয়ার ছিলো জীবন থেকে! নিশ্চয়ই অনেক অভিমান আর অনেকটা রাগ নিয়ে অনেক কষ্টে চলে গেলো মেয়েটা। কিন্তু তাই বলে এভাবে চলে যাবে? আত্মহত্যা কি কোনো সমাধান হতে পারে? কী পেলে তুমি এই কাজটা করে? যাহোক, সবই তাঁর ইচ্ছা। ঈশ্বর ওর আত্মার শান্তি বিধান করুন। পরিবারকে আর আপনজনদের এই শোক সইবার শক্তি দিন।
.
জীবনে অনেক না-পাওয়া থাকবে, রাগ থাকবে, অভিমান থাকবে, চলে যেতে ইচ্ছা করবে সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে। কিন্তু তাই বলে হতাশ হইও না। বরং আস্থা রাখো নিজের ওপর, ভরসা রাখো স্রষ্টায়। লড়াই চালিয়ে যাও বেঁচে থেকে। তুমি যাওয়ার পরও সবকিছু যেমন আছে তেমনই থাকবে, শুধু তুমি থাকবে না। তুমি তোমার বাবা-মায়ের বুকটা খালি করে যেও না। তাঁরা তো বকাঝকা একটু দিতেই পারেন, সেই অধিকার তাঁদের আছে। আবার একটু পরে কি তাঁরা তোমায় বুকে টেনে নেন না?
.
যা পাওনি তা ভুলে যাও, হয়তো তার চেয়েও ভালো কিছু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে, সেই দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকো। বোকামি করে এমন কিছু করবে না, যার জন্য নিজেও কষ্ট পাও আর কাছের মানুষদেরকেও কষ্টে রেখে যাও। স্রষ্টা আমাদের মঙ্গল করুন। সত্য ও সুন্দরের জয় হোক।