somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্যায়ভাবে কোনো কিছু কেড়ে নিলে আপনাকেও কিছু হারাতে হবে

০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জানামতে, সকল ধর্মেই দুনিয়াতে পাপ করলে পরকালে পাপের ধরণ অনুযায়ী কী শাস্তি হবে, তার বর্ণনা দেওয়া আছে। কিন্তু এই 'পরকাল' কি কেউ দেখে এসেছে? কেউ কি দেখে এসে বলেছে, 'হ্যাঁ, অমুক বেঁচে থাকতে তমুকের এই ক্ষতিটা করেছিলো অন্যায়ভাবে, তাই আজ অমুককে এমন শাস্তি পেতে দেখে এলাম'? আমি তো শুনিনি, আপনি শুনেছেন?
.
আমি বলছিনা পরকাল নেই। স্বর্গ-নরক কিংবা বেহেশত-দোযখ নেই তা বলছি না। কিন্তু পাপীরা দুষ্টু হয়। তারা বলবে, 'আরে ধুর, পরকাল আছে কি নাই তারই নাই গ্যারান্টি! কেন শুধু শুধু ধর্মের কথা শুনবো? কেন সৎপথে চলে সারাজীবন কষ্ট করবো, কেন সত্য কথা বলবো? তার চেয়ে আগে দুনিয়ায় তো পরেরটা মেরে ভালো থাকি, আয়েশ-ফূর্তি করি, পরেরটা পরে দেখা যাবে!'
.
এমনটা যাতে কেউ না ভাবতে পারে, তাই একটা কাজ করা গেলে দারুণ হতো। যদি এমন কোনো ব্যবস্থা থাকতো, যে প্রতিটা মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানোর আগে স্বর্গ বা নরকের কিছু স্মৃতিও তার সাথে পাঠিয়ে দেয়া যেত! অথবা যদি অসৎ ব্যাংকারকে টাকা মারার আগে, ঘুষখোর অফিসারকে ঘুষ খাওয়ার আগে, খুনীকে খুন করার আগে, ইঞ্জিনিয়ার-ঠিকাদারকে প্রকল্পের টাকা হাতিয়ে নেয়ার আগে যদি একবার একটু সশরীরে ভানু বন্দোপাধ্যায়ের সেই 'যমালয়ে জীবন্ত মানুষ' ছবিটির মতো স্বর্গ আর নরক থেকে ঘুরিয়ে আনা যেত, তবে সে পাপ করতে ভয় পেত, তার বিবেক জাগ্রত হতো!
.
কথাগুলি এক মন্দিরে বসে ভাবছিলাম। মন্দিরে কাজ করেন এক আর্টিস্ট। জানালেন, মন্দিরের একটি গেট নির্মাণের কাজ নিয়ে কমিটির এক সদস্য নাকি প্রায় ৩০ লাখ টাকাই মেরে দিয়েছিলেন! তার নাকি সম্প্রতি এমন এক রোগ হয়েছে, যে ২২ লাখ কোথা দিয়ে পকেট থেকে চলে গেছে, তিনি নাকি টের পান নি। আর্টিস্টের মতে মন্দিরের টাকা মেরেছে বলেই স্রষ্টা তাকে এই শাস্তি দিয়েছে! আবার এই ঘটনায় হয়তো সেই পাপী নিজেকে বুঝ দিবেন এভাবে যে, 'আজ ঐ টাকাটা না মারলে আমার চিকিৎসা আজ কি দিয়ে করাতাম?' আসলে, যে যেভাবে দুনিয়াটা দেখে আর কি!
.
কিন্তু আমি দেখেছি প্রকৃতি সবাইকেই তার প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দেয়। সে কারো সাথেই চূড়ান্ত অবিচার করে না। যে সারাজীবন অবৈধ পথে অন্যের পেটে লাথি মেরে অর্থ উপার্জন করে, হয় দেখবেন তার সন্তান মানুষ হয়নি, অঢেল টাকার মধ্যে থেকে পড়ালেখা করেনি, ইয়াবাসেবী অথবা গাজা-ফেন্সিডিলখোর হয়েছে, নাহয় দেখবেন হয় সে তার বাবা-মাকে মেরেছে, নয়তো অপকর্ম করতে গিয়ে মরেছে, নয়তো নিজেই কোনো না কোনো কারণে আত্মঘাতী হয়েছে। এটাই হয়। বারবার দেখা।
.
অপরদিকে, সৎপথে সত্যের পথে থাকলে কষ্টের মাঝেও মনের শান্তি থাকে। কিছুদিন আগেই এমন একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ পেয়েছি। আমার থেকে অন্যায়ভাবে কিছু কেড়ে নিয়েছিলেন যিনি, স্রষ্টা তার থেকে আরও অনেক অনেক গুণ মূল্যবান কিছু কেড়ে নিয়েছেন। এটা জেনে একদিকে আমি যেমন মনের দিক থেকে মানবিক কারণে কষ্ট পেয়েছি, আবার অবশেষে দুষ্টের দমন দেরীতে হলেও হচ্ছে দেখে কিছুটা স্বস্তিও পেয়েছি। মাঝে মাঝে এমন কিছু মিরাকেল না হলে আসলেই বিশ্বাস করতে সংশয় হয় যে সৃষ্টিকর্তা আছেন, তিনি দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন করেন এখনও। তিনি নিশ্চয়ই সমাজে এমন কিছু উদাহরণ সৃষ্টি করবেন, যেটা দেখে মানুষের মনের কুপ্রবৃত্তিগুলো ভেতরেই থেকে যাবে, বাইরে বের হতে ভয় পাবে, আর মানুষ হাঁটবে সত্য ও সুন্দরের পথে। নিশ্চয়ই তিনি সত্য ও সুন্দরের ধারক ও বাহক।

দেব দুলাল গুহ / দেবু ফরিদী
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×