গেট খোলার পর সরু একটা রাস্তা ধরে আমরা আগাচ্ছিলাম। যে রাস্তার দুই পাশে উচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। একটু হাটার পরই আমরা মূল গীর্জায় হাজির হলাম। সেখানে আগে থেকেই একজন গীর্জা পরিচালক ছিলেন আমাদের অপেক্ষায়। সবচেয়ে মজার এবং লক্ষয় করার বিষয় ছিল সেখানে ঢোকার পরই কেমন যেন একটা শান্তি শান্তি ভাব চলে আসে আমাদের সবার মাঝে। আমরা সেই পরিচালকের সাথে পুরো চার্চটি ঘুরে দেখি। তিনি ঘুরে ঘুরে দেখান আর বর্ণণা দেন।
আমরা ঘুরে দেখি স্কুল ঘর, হোস্টেল গুলো,খেলার মাঠ, পুকুর, তাদের কবরস্থান। কবরস্থানে গিয়ে দেখলাম বেশ কিছু বিদেশী মিশনারির কবরে যারা এদেশকে ভালবেসে, এদেশের মানুষকে ভালবেসে মৃত্যুর পরও এখানেই রয়ে গেছেন। জানলাম আমাদের দেশের অনেকেই এভাবেই মানব সেবায় পৃথিবীর নানা দেশে পরে আছেন। যে পরিচালক আমাদের ঘুরে দেখাচ্ছিলেন, তিনি খুব আন্তরিকতার সাথে তার ছোট্ট অথচ বেশ গোছানো ঘরে নাস্তা করালেন। খুব আগ্রহ নিয়ে তিন মেয়ের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার গল্পও করলেন।
এরপর আমরা চলে গেলাম এই চার্চের ভেতর অবস্থিত একমাত্র হাসপাতালটিতে। যেখানে গিয়ে খুজে পেলাম আমার শিরোনামটি। এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সালের মধ্যে। তখন এটিই ছিল এই মহাকুমার একমাত্র হাসপাতাল। এবং যেখানে ফ্রি চিকাতসা দেয়া হতো। একটা সময় বন্ধ হয়ে যায় এই হাসপাতলটি। হাসপাতালের কেবিনগুলোতে এখন অবশ্য ছাত্রীরা থাকে। তবে চার্চের সকলের ইচ্ছা আবার হাসপাতালটি চালু হোক। ২/৩ বার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলেও কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। এখন অবশ্য সেখানে প্রতিদিন অপুষ্টিতে ভোগা মা এবং শিশুদের সেবা দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। যার ৯৫ ভাগই মুসলিম, ৪ ভাই হিন্দু আর ১ ভাগ খ্রিস্টান। এত কিছুর পরও বরিশালের প্রথম হাসপাতালটি এখনও চালু হয়নি। হয়নি অক্সফোর্ডমিশন বাসীর স্বপ্নপূরণ। তাদের স্বপ্ন পূর্ণ হাসপাতাল না হোক মা ও শিশু সেবার হাসপাতালও তো হতে পারে। আসলে ভাল কাজগুলো অদৃশ্য শক্তিবলে আটকেই যায় কেন জানি। ও হ্যা এতক্ষণ বলছিলাম বরিশালের সবচেয়ে পুরাতন ও ঐতিহাসিক অক্সফোর্ড মিশন চার্চের কথা।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:১১