নুসরাত-আমার বেস্ট ফ্রেন্ডদের একজন।ওর সাথে কথা হচ্ছে না বেশ বিছুদিন। শেষ কথা হল তিন-চারদিন আগে বা তার বেশিও হতে পারে,কি জানি!ঠিক মনে পড়ছে না। আমি তখন দাদাবাড়ি থেকে ফিরে বেশ ক্লান্ত। এমন একটা দিনে হঠাৎ ওর কল। ভ্যাবাচেকা খেলাম-এই সময়ে সাধারণত ও কল করে না ।আমার খুব কাছের বন্ধু,নাড়ি-নক্ষত্র মোটামুটি জানা।ভয় পেলাম-বিপদ-টিপদ হয় নি তো!
-হ্যালো,কি রে?
কল রিসিভ করেই জানতে চাইলাম।
-হ্যালো,নিশা?
ওর ভয়েস শুনে একটু হলেও চমকালাম। এটা ওর স্বভাবিক ভয়েস না। জিজ্ঞেস করলাম
-কোন সমস্যা?
-তোর একটু সময় হবে?
-কেন বল তো!
-না মানে,তোকে কিছু কথা বলতাম।সময় লাগবে।ঠিক বুঝতে পারছি না তুই কিভাবে নিবি!
-আচ্ছা,সমস্যাটা কার?তোর?
-না,তোর।
সতর্ক হয়ে গেলাম সাথে সাথে।কি বলতে চায় মুহূর্তের ভেতর ভাবতে চাইলাম।এমন কি কথা যা সে আমাকে আগে বলে নি?তবে কি. . . . .মনেপ্রাণে চাইলাম আমি যে আশঙ্কা করছি সে সম্পর্কে যেন কিছু না হয়। বললাম
-আরে এত ভূমিকা না করে বল তো কি বলবি?
-মানে,ঠিক কোথা থেকে শুরু করব. . . .
-টেক ইট ইজি!কোন জিনিস নিয়ে বেশি টেনশন করলে তা শুধু প্যাঁচই খাবে।
নুসরাত বলতে শুরু করে। আমি শুয়ে ছিলাম।ওর একএকটা কথার ধাক্কা সামলাতে আমি উঠে বসলাম।কিন্তু একই সাথে ভেতর থেকে অনুভব করলাম,কোন রকম উল্টাপাল্টা রিএকশন দেখানোর সময় এইটা না।সব কথা শান্ত ভাবে শুনলাম।যা আশঙ্কা করছিলাম তাই।অবাক হলাম-এর মাঝে এত কিছু করল সে,অথচ,কতটা সাবধানে লুকাল আমার কাছ থেকে!
নুসরাতের কথা শেষ হল।ও অপেক্ষা করছিল আমি কি বলি তা শোনার জন্য।সামনাসামনি হলে ওকে জড়িয়ে ধরে শান্ত করতাম। মনের ভেতর কেমন একটা অনুভূতি হল।না রাগ না টেনশন-হয়ত আমিই থমকে গেছিলাম সে কিভাবে এটা করল সেটা ভাবতে গিয়ে।কিছুটা সময় নিলাম। তারপর খুবই শান্ত ভাবে,যাতে আমার ভেতরে কি হচ্ছে সেটা সে টের না পায় এমনভাবে আমি ওকে কয়েকটা কথা বললাম। না দেখেও ঠিক বুঝতে পারলাম,টেলিফোনের ও প্রান্তে আমার বন্ধুটি ভীষণভাবে চমকে গেছে আমার শান্ত স্বর শুনে,হিসেবটা ঠিক মেলাতে পারছে না।ও চাইছে আমি যেন ওর সাথে রাগারাগি করি,ওকে ঝাড়ি মারি- অন্য কেউ হলে আমি হয়ত তা-ই করতাম,নুসরাত বলেই করলাম না।
-নিশা!
আরো কিছু বলতে চাইছিল সে।সে সুযোগ দিলাম না। শুধু বললাম-ডোন্ট বি ওরিড। রাখি কেমন?
......(চলবে)
যে সম্পর্কের কোন সীমারেখা নেই,যাকে বাঁধতে চাই না কোন সংজ্ঞা বা শিরোনামেও-১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২৪টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ
একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।
ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!
বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন