somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবিসি কি নিরপেক্ষ?

২৮ শে জুলাই, ২০১০ ভোর ৫:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা সময়ে ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন বা বিবিসি-কে আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব দিতাম। পাবনার একটা বাজারের নামই ছিল বিবিসির বাজার -- ওখানে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে গোপনে বিবিসি শোনা হত।

সম্প্রতি বিবিসি 'ফৌজি বাণিজ্য' নিয়ে একটি ধারাবাহিক প্রচার করছে। সেটা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উপরে। এখন তাদের এককালীন মিত্র শেখ হাসিনা ক্ষমতায়। এখন এমন অনুষ্ঠান প্রচারের সময় কিনা, সেটা প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিডিআর ঘটনার পরে এমনিতেই সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে যে অনাস্থার সম্পর্ক তৈরী হয়েছে, তাতে এমন একটি মিথ্যা ধারাবাহিক বিবিসি-র পুরাতন ঐ মিত্রকে বিপদেই ফেলবে।

শেখ সাহেবের সময়ে বিবিসি তার নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিল, প্রেসিডেন্ত জিয়ার সময়ে বিবিসি তার নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিল, এরশাদের সময়ে বিবিসি তার নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিল।

প্রথম ব্যতয় দেখা দিল মিসেস জিয়ার প্রথম শাসন কালে। সে সময়ে প্রথম উপমহাসাগরীয় যুদ্ধ হল। ঠিক বেঠিক জানি না, বিবিসি তার সরকারের পক্ষে কথা বলার জন্য ধীরে ধীরে মুসলমানদের বিপক্ষে কথা বলা শুরু করলো।

আস্তে আস্তে বিবিসি মুসলমানদের বিপক্ষে চলে যাবার পরেও এদেশের মানুষ বিবিসি শুনতে চাইত। আমাদের বাসাতে দীর্ঘদিন সকালে বিবিসির খবর শুনে দিনের শুরু হত।

কিন্তু একটা সময়ে দেখা গেল বিবিসি কেমন যেন বাংলাদেশ বিরোধী খবর দিতে আরম্ভ করেছে। সেটা কিছুকাল পরে বাংলাদেশ বিদ্বেষী মনোভাবে রূপান্তরিত হয়ে গেল।

মিসেস জিয়ার প্রথম ইনিংসের শেষের দিকে শেখের বেটির সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময়ে বিবিসি তার বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা শুরু করে। এর ফল স্বরূপ শেখের বেটি ধর্মভিত্তিক রাজণীতিক দল জামাআতের সাথে ও সহযোগীতায় ১৯৯৫-৯৬ সময়কালে বাংলাদেশে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির জন্ম দেয়।

এর পরে বিবিসি ভেবেছিল শেখের বেটির পক্ষে প্রচারণা ভালিয়ে গেলে অনেক লাভ হবে। সে জন্য তারা অনেক খবরই দিতে থাকে, যেগুলো মিসেস জিয়ার বিপক্ষে গেলেও সার্বিকভাবে বাংলাদেশের বিপক্ষেই গিয়েছিল।

এরপরে ক্ষমতার পালা বদলে মিসেস জিয়ারা ক্ষমতায় এলেন। এবারে বিবিসি শেখের বেটির পক্ষে বলতে যেয়ে ল্যাজে গোবরে করে ফেলল। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের বিপক্ষে বলতে গিয়ে প্রকারন্তরে তারা বাংলাদেশ বিদ্বেষী প্রচারণায় মেতে উঠলো।

সমসাময়িক সময়ে দ্বিতীয় উপমহাসাগরীয় যুদ্ধ শুরু হল। অনৈতিকভাবে ইরাক আর আফগানিস্তানে পশ্চিমা পরাশক্তিগুলো তেল কূপ দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠল। নিরীহ মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করা হল, আর বিবিসি-র মত বাঙ্গালীদের কাছে প্রিয় বেতারটি সেই নৃশংসতার পক্ষে সাফাই গাইতে লাগলো।

এরপরে বিবিসি তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিল যে তারা একটি পক্ষ। তারা যুদ্ধবাজ জর্জ বুসের "হয় তুমি আমার পক্ষে, আর না হয় তুমি আমার বিপক্ষে" নীতিতে গভীর আস্থা আনলো।

আর আমরাও বিবিসি-র উপর থেকে আস্থা উঠিয়ে ফেললাম।

সম্প্রতি বিবিসি 'ফৌজি বাণিজ্য' নিয়ে একটি ধারাবাহিক প্রচার করছে। সেটা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উপরে। এখন তাদের এককালীন মিত্র শেখ হাসিনা ক্ষমতায়। এখন এমন অনুষ্ঠান প্রচারের সময় কিনা, সেটা প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিডিআর ঘটনার পরে এমনিতেই সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে যে অনাস্থার সম্পর্ক তৈরী হয়েছে, তাতে এমন একটি মিথ্যা ধারাবাহিক বিবিসি-র পুরাতন ঐ মিত্রকে বিপদেই ফেলবে।
৮টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×