somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সারা বিশ্বে যে পরিবর্তনগুলো নিয়ে এলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৮:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যেদিন থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে প্রবেশের করেছেন সেদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাকি বিশ্বের সম্পর্ক অনেক কিছুই বদলে গেছে।
এশিয়ায় পারমানবিক উত্তেজনাকে উশকিয়ে দেওয়া
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসন বড় ধরনের নিরাপত্তার প্রশ্ন তৈরি করেছে এশিয়ায়।
শপথের আগেই তাইওয়ানের প্রসঙ্গে তার মন্তব্যই শুধু চীনকে হতবাক করেনিই বরং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের তৈরি দ্বীপে তার প্রবেশ আটকে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনও। অন্যদিকে এক সময় এই উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে ওবামা প্রশাসনের নীতি ছিল কৌশলগত সহনশীলতা প্রদর্শন করা।কিন্তু ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বলেছে কৌশলগত সহনশীলতা বা ধৈর্যের যুগ শেষ।
ট্রাম্পের আগামীর যে পদক্ষেপগুলো নিতে যাচ্ছে তা সকলেরি অজানা। তবে অনিশ্চিত কর্মকাণ্ড সর্বস্ব এই মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধান তার প্রাথমিক দিনগুলোতে যেসব কাজ করেছে তাতে আগামী বছরগুলোতে এশিয়ায় পারমানবিক উত্তেজনা যে বাড়বে সেটা নিশ্চিত বলা যায় ।


রাশিয়ার সাথে সম্পর্কে আরও জটিলতা বৃদ্ধি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একজন দক্ষ নেতা হিসেবে প্রশংসা করেছিলেন। তার সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চান বলেও তখন জানিয়েছিলেন।রাশিয়ার অ্যাম্বাসেডরের সাথে আলাপের সূত্র ধরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন আকস্মিক পদত্যাগ করলে ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ককে ঘিরে উদ্বেগের বিষয়টি চলতে থাকে। ট্রাম্প বলেছিলেন মি. পুতিনের ওপর বিশ্বাস রাখতে চান তিনি। কিন্তু তা হয়তো দীর্ঘস্থায়ী হবে না সতর্ক করেন তিনি।তবে তা আর হয়নি। বরং সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার ঘটনাকে ঘিরে সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। সেই হামলার জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষ সিরিয়ার সরকারকে দোষারোপ করেন কিন্তু রাশিয়া অব্যাহত ভাবে বাশার আল আসাদের প্রতি সমর্থন দিয়ে আসছে।ট্রাম্প বলেছেন রাশিয়ার সাথে সম্পর্কের দিক থেকে সর্বকালে সবচেয়ে নিচের দিকে এখন যুক্তরাষ্ট্র। দুদেশের সম্পর্ক ভালো হলে সেটা জাতির জন্য দারুণ ব্যাপার হতো বলে উল্লেখ করলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন ঘটছে তার বিপরীত।


নেটোর দিকে অধিক মনোযোগ দেয়া
আগে নেটোর প্রতি সমালোচক মনোভাব ছিল ট্রাম্পের কিন্ত তিনিই আবার এই সংগঠনকে সেকেলে বলেও আক্রমণ করেছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস মাতিস ফেব্রুয়ারি মাসে নেটোর সদস্যদের সতর্ক করে বলেছেন সদস্য দেশগুলো যদি ট্রাম্পের চাহিদা মোতাবেক জিডিপির ২% প্রতিরক্ষা খাতে খরচ করতে না পারে তাহলে ওয়াশিংটন তার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন। তবে নেটোর প্রতি মনোযোগী হওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেটোর প্রধান জেনস স্টোলটেনবার্গ। ট্রাম্পও তার মনোভাব বদলে ফেলেন এবং বলেন নেটো আর প্রাচীন বা সেকেলে প্রতিষ্ঠান নেই। সন্ত্রাসের হুমকির প্রেক্ষাপটে এই জোটের গুরুত্ব রয়েছে এবং ইরাকি ও আফগান শরিকদের আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য জোটের সদস্যদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।


সামরিক শক্তির ব্যবহার
ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক অভিযানের ব্যাপারে বিরোধী ছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি টুইটারে লিখেছিলেন সিরিয়ার কথা ভুলে যান আমেরিকাকে আবার শ্রেষ্ঠ করে তুলুন।তারপর সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নিয়ে তিনি এপ্রিলে সিরিয়ায় সরকারি বিমানঘাঁটিতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্দেশ দেন । আর সেটাই প্রথম সিরিয়ায় সংঘাত শুরুর পর সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিরিয়া লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা। অল্প সময়ের ব্যবধানে আফগানিস্তানে মাদার অফ অল বোম্বস নিক্ষেপ করে আবারও বিশ্বের সামনে নিজের সামরিক শক্তির পরিচয় দিলেন আমেরিকা।


বাণিজ্য যুদ্ধ এর দিকে এগিয়ে নেয়া
বেশ কয়েক দশক ধরেই যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সাথে যেভাবে বাণিজ্য পরিচালনা করছেন, তার বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কর্মহীনতার অজুহাতে বর্তমানে চলছে এমন অনেকগুলো বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন । বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা থেকেও আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেওয়ারও চিন্তাভাবনা রয়েছে তার। তিনি প্রথম কর্ম দিবসেই ১২জাতির বাণিজ্য জোট ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ টিপিপি বাতিল করেন।তিনি চীনের বিরুদ্ধে মুদ্রা কারসাজিরও অভিযোগ তুলে নেতিবাচক প্রচার চালাচ্ছেন। তবে বিশ্লেষকদের আশঙ্কা এটা এক ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধ এর দিকে নিয়ে যেতে পারে।


জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গ পুনর্বিবেচনা
ট্রাম্প বলেছিলেন দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম একশো দিনের মধ্যেই তিনি প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাতিল করবেন।তবে সেটা তিনি করেননি। তার সিনিয়র উপদেষ্টাদের মধ্যে এই বিষয়ে বিভক্তি রয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রণীত জলবায়ু প্রবিধান পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।মানুষের দ্বারা জলবায়ু পরিবর্তন সৃষ্টির বিজ্ঞানসম্মত বিষয়টিকে বারবার নাকচ করে আসছেন ট্রাম্প এবং একে তিনি কাল্পনিক আখ্যা দিয়ে আসছেন।অন্য অনেক বিষয়ে তিনি এক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক মতামত প্রকাশ করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি নভেম্বরে বলেন তিনি স্বীকার করেন মানুষের কর্মকাণ্ড এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মাঝে কিছু যোগাযোগ আছে এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তের বদলে এই বিষয়ে নজর দেবেন।যদিও মার্কিন জলবায়ু নীতির আমল পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে মিস্টার ট্রাম্পকে আইনগত এবং পদ্ধতিগত কিছু বাধা পেরোতে হবে। তবে সমালোচকদের আশঙ্কা তার অবস্থান বিশ্বে উষ্ণায়ণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে অনিচ্ছুক দেশগুলোকে আরও অপারগ করতে পারে।


ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে সংশয়
ইরানের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধের বিনিময়ে অবরোধ তুলে নেয়ার যে চুক্তি হয়েছিল তাকে বারাক ওবামার প্রশাসন ঐতিহাসিক বোঝাপড়া বলেই মূল্যায়ন করেছে। কিন্তু ট্রাম্প একে বলেছেন আমার দেখা এই যাবত কালের সবচেয়ে বাজে কোনও চুক্তি।

সূত্র বিবিসি
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৮:০৩
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×