জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত সেশনজটের কারনে ঢাকার সাতটি নামকরা সরকারি কলেজকে গত বছরের শেষের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ করা হয়। এতে করে বৃহত্তর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অস্তিত্বের সংকটে পরে যায়। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটাই সেশনজট মুক্ত। অন্যদিকে ঐ সাতটি কলেজ সেশনজটের গ্যঁড়াকলে বন্দি এবং মারাক্তক হুমকির সম্মুখীন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা শেষ হওয়া সত্ত্বেও ঐ সাতটি কলেজের একই শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কবে হবে তা নিয়ে শিক্ষার্থীগন উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। এমনটাও দেখা গেছে যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করে ফেলেছে,অথচ ঐ সাতটি কলেজের একই শিক্ষাবর্ষের অনেক শিক্ষার্থী এখনও মুক্ত হতে পারেনি। যেমন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক সম্মান কোর্সটি প্রায় তিনমাস পূর্বে সম্পন্ন হয়েছে। অপর দিকে ঐ সাতটি কলেজের এখন পর্যন্ত একই শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষার পর্যন্তও কোনো নাম গন্ধও নেই।
তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ সাতটি নিয়ে লাভ হলো কি? বরং আরো ক্ষতি হয়েছে। যে ক্ষতি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারতেছে ঐ সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীগন। যা নিয়ে অনেক আন্দোলন হলো রাজধানী ঢাকার বুকে। চোঁখ হারালো সিদ্দিক। তাতেও তেমন একটা সুফল হয়েছে বলে মনে হয়না। কারন এখনও ঐ সাতটি কলেজের কার্যক্রমের তুলনায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বেশি এগিয়ে। তাছাড়া ঐ সাতটি কলেজ পরেছে অস্তিত্বের সংকটে। বর্তমানে ঐ সাতটি কলেজের পরিচয় সাত কলেজ নামেই। মনে হচ্ছে যেনো ঐ সাতটি কলেজ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাদেশিক সরকার। প্রাদেশিক সরকার হলে সমস্যা নেই,তবে সায়ত্বশাসিত প্রাদেশিক সরকার থাকা চাই। ঐ সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীগন নিজেদেরকে পরিচয় দেয় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে। কেউ দেয় কলেজের পরিচয়,আবার কেউ সাত কলেজের শিক্ষার্থী হয়েও নিজের পরিচয় দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে। যার কারনে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগন(মূল) মেনে নিতে পারেনা। তারা এটা নিয়ে আন্দোলনও করেছে। যদিও সাতটি কলেজের কোনো শিক্ষার্থীর নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেওয়া একেবারেই ঠিক নয়। কারন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ঐ সাতটি কলেজের বোর্ড মাত্র। বোর্ড আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কখনও এক হতে পারেনা। এইসব নিয়ে সাতটি কলেজের মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়। প্রায় সম্মুখ পানে যুদ্ধ না হলেও স্নায়ু যুদ্ধতো হয়েছে। যেটি কোনো শিক্ষিত জাতীর নিকট কখনও আশা করা যায়না। শিক্ষা যেখানে বন্ধুত্ব শিখাবে,সেখানে যদি শত্রুতার সৃষ্টি হয় তাহলে সাতটি কলেজ কে পৃথক করে লাভ কি হলো?
ঢাকার নামকরা ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজের অস্তিত্ব রক্ষায় সাতটি কলেজের সমন্বয়ে "সেভেন সিস্টারস ইউনিভার্সিটি" নামে সাতটি কলেজকে রুপায়ন করা যায়। যাতে করে বাংলাদেশে তৈরি হবে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমীধর্মী একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। এতে যেমন সত্যিকার পরিচয় মিলবে সাতটি কলেজের,ঠিক তেমনি শিক্ষা পদ্ধতিও হবে উন্নত বিশ্বের মত যুগোপযোগী। পরগাছার মতো অস্তিত্বহীন সাতটি কলেজ খুঁজে পাবে তাদের নিজস্ব পরিচয়। ফুটে উঠবে সমগ্র পৃথিবীতে সেভেন সিস্টারস ইউনিভার্সির স্বকীয় বৈশিষ্ট। দেশ পাবে নতুন এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ও শিক্ষামন্ত্রনালয় তথা সরকারের প্রতি অনুরোধ রইলো যে বৈষম্য দূরীকরণ সহ সাতটি কলেজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য ও সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে দয়া করে সাতটি কলেজকে নিয়ে "সেভেন সিস্টারস ইউনিভার্সিটি" প্রতিষ্ঠা করুন। "ব্যতিক্রমীধর্মী "সেভেন সিস্টারস ইউনিভার্সিটি হবে বাংলাদেশের সুশিক্ষা অর্জনের অন্যতম হাতীয়ার-সেটাই প্রত্যাশা করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪৪