মুসলমান যাত্রী ভাই ও বোনেরা আপনারা জানেন কি, মুসলিমদের সারা বিশ্বে এত পিছিয়ে পড়ার, জঙ্গি হয়ে উঠার কারণ তারা 'প্রশ্ন করতে ভুলে গেছে'।
আপনারা যে সব মুসলিমদের নিয়ে গর্ব করেন তারা প্রশ্ন করেছে বলেই ওই অবস্থানে যেতে পেরেছে এবং আপনারা তাদের নিয়ে গর্ব করতে পারছেন।
আজকাল কিছু অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত হুজুররা বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে নানা রকম বয়ান দেন। সত্য মিথ্যা মিলিয়ে নানান কিচ্ছা কাহিনী বলেন। আর আমরা সোবহান আল্লাহ বলে সব কিছু নির্দ্বিধায় বিশ্বাস করে বাড়ি ফিরি।
এটা হচ্ছে অন্ধত্বের প্রথম ধাপ।
ইসলাম নিয়ে যে যাই বলে তা বিশ্বাস করার আগে একটু খতিয়ে দেখুন, সে ঠিক তথ্য দিচ্ছে কিনা।
যেমন, অনেকেই বলে থাকে বা অনেক বই পত্রেও লেখা থাকে যে 'আইয়ামে জাহেলিয়ামের যুগে কন্যা শিশু জন্ম নেয়া মাত্রই জ্যান্ত কবর দেয়া হত'।
এইক্ষেত্রে আপনি ছোট ছোট প্রশ্ন করতে পারেন, যেমন
প্রশ্ন ১। কবর দেয়া হত নাকি পুড়িয়ে মারা হত?
প্রশ্নের পেছনে যুক্তিঃ পুড়িয়েও মারতে পারত, কারণ সেখানে তখন পৌত্তলিকদের(মূর্তি পূজারী) রাজত্ব ছিল। আর এইসব করত মূলত তারাই(কথিত আছে) আর পৌত্তলিকরা সাধারণত কবর দেয়না, পোড়ায়।
প্রশ্ন ২। সত্যিই কি কন্যা শিশু জন্ম নেয়া মাত্রই মেরে ফেলা হত?
প্রশ্নের পেছনে যুক্তিঃ ১। কন্যা শিশু জন্ম নেয়া মাত্রই যদি মেরা ফেলা হত তাহলে সেখানে বিয়ে করার জন্য পর্যাপ্ত নারী পাওয়া যেত না। সেটা হয়ে যেত নারীহীন এক পুরুষ সমাজ। মানুষের বংশবৃদ্ধি থেমে যেত। কিছুদিনের মধ্যেই সে সমাজ বিলুপ্ত হয়ে যেত।
যুক্তি ২। তখনকার মানুষেরা একাধিক বিয়ে করত। কেউ কেউ ৪-১০ পর্যন্ত বিয়ে করত বলে বিভিন্ন বই থেকে জানা যায়।
যদি কন্যা শিশুদের কে জন্মের পরপরই মেরে ফেলা হত তাহলে একজন পুরুষের এতগুলা বিয়ে করা সম্ভব হত না।
উপরে প্রক্রিয়া অনুসরন করে আমরা যেকোন ঘটনার সত্য মিথ্যা নিরুপন করতে পারি এবং নিজের বিশ্বাসকে একটা শক্ত ভিত দিতে পারি।
কুরানকে বলা হয় 'বিজ্ঞানময় কুরান'! আর আপনার বিজ্ঞান সম্পর্কে যদি নূন্যতম ধারনাও থাকে তাহলে আপনি নিশ্চই জানেন 'বিজ্ঞানে অন্ধবিশ্বাসের কানাকড়ি মূল্যও নাই'।
তাই কোন কিছু অন্ধভাবে বিশ্বাস করার আগে এর কার্যকারণ, যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলুন।
দেখুন, আপনি আগের চেয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন। আপনার ভিতরের জঙ্গি মনোভাব দূর হয়ে যাচ্ছে। আপনি হয়ে উঠছেন আগের চেয়ে অনেক বেশী সহনশীল। আপনার ধর্ম নিয়ে কেউ কটাক্ষ করলেও আপনি আর আগের মত হিংস্র হয়ে উঠছেন না। অন্য ধর্মাবলম্বিদেরকেও শত্রু মনে হচ্ছে না। তাদেরকেও আপন মনে হচ্ছে। এমনকি নাস্তিকদেরও। জীবনটা আগের চেয়েও মধুর মনে হচ্ছে।
প্রকৃত শিক্ষাতো মানুষকে এসবই শিখায়।
এসব যদি আপনার ভিতরে না থাকে তাহলে আপনার ধর্মের গৌরব কোথায়? অশান্তি সৃষ্টিতে কোন গৌরব নেই।
একটা শান্তিপূর্ণ নির্মল পৃথিবী কি খুব অসম্ভব?