আমাদের দেশে নারীশিক্ষার পথ এখনো দুর্গম, অল্পবিস্তর পড়ালেখা করলেও উচ্চশিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ তুলনামূলক ভাবে খুবই কম। তাই অনেক পরিবারই মেয়েদেরকে উচ্চশিক্ষার পিঠস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে নারাজ।
সমাজের সকল বাঁধা ডিঙ্গিয়ে এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও যদি মেয়েদের যৌন হয়রানির শিকার হতে হয় তাহলে ব্যাপারটা মেয়েদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথকে আরো দুর্গম করে দেয়।
অন্ততপক্ষে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারী যেন কোন প্রকার যৌন হয়রানির শিকার না হয় সেটা আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে, নয়তো আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা এই একই অনিশ্চিত পরিস্থিতি রেখে যাচ্ছি।
যেখানেই নারীদের যৌন হয়রানি করা হবে সেখানেই সেটা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্ত হাতে দমন করতে হবে, তাহলেই কেবল নারীদের প্রতি এই যৌন সন্ত্রাস বন্ধ করা যাবে।
প্রাসঙ্গিক খবরঃ শাবিপ্রবির লোকপ্রশাসন বিভাগের একজন ছাত্রীকে ওই বিভাগের পিওন হাত ধরে টেনে নিয়ে অশ্লীল ইঙ্গিত করেছে। ঘটনার দিন (৩০ মার্চ ২০১৪, রবিবার) ব্যাপারটা বিভাগের শিক্ষককে জানানো হলেও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
পরদিন লিখিত অভিযোগ করার পর বিভাগের প্রধান ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন এবং ঐ বিভাগেরই আরেক শিক্ষক অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. নাসির উদ্দিন ওই মেয়ে সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করেন।
ঘটনার পর ৩ দিন ওই পিওন বিভাগে কাজ করেছে, তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, তাই বাধ্য হয়েই ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে উপাচার্য বরাবর তিন দফা দাবি নিয়ে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়,
দাবিগুলো হচ্ছে
১। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাময়িক বহিষ্কার এবং তদন্ত সাপেক্ষে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
২। কুরুচীপূর্ণ মন্তব্য করার জন্য ড. নাসির উদ্দিনকে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে আর এমন মন্তব্য করবে না বলে মুচলেকা দিতে হবে
৩। ঘটনার ৪ দিন পরও বিভাগ কেন কোন ব্যবস্থা নেয়নি তার কারণ দেখাতে হবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই বিভাগের শিক্ষক ড. শামীমা তাসনিমকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে এবং আজ ১২.৩০ মিনিটে আল্টিমেটামের ২৪ ঘণ্টা শেষ হবে, দাবি পূরণ না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
মূললেখা