somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যত রুখবে তত অদম্য হবো .....

২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শুধু ঢাকাতেই পৌনে একশো স্পট এবং ৪০০ এর বেশি হোটেল এবং ২০০০ এরও বেশি ফ্ল্যাটে চলছে অবৈধ জমজমাট দেহ ব্যবসা।বাংলাদেশে বয়স ১৮ হবার আগেই যৌন অভিজ্ঞতা হচ্ছে ৫০ ভাগ শহুরে তরুনের। এছাড়া প্রায় ৮০ ভাগ তরুন পরোক্ষ ভাবে প্ররোচিত হচ্ছে যৌন কর্মে লিপ্ত হতে। এদের ৩৩ ভাগ লিপ্ত হচ্ছেন দলগত যৌন কর্মে। আবার অনেকেই পর্নগ্রাফি দেখে যৌন কর্মে উদ্দিপ্ত হচ্ছে যাদের বয়স ১১ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। নগরীর ৮৫ ভাগ হোটেলে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে সাত হাজার খদ্দেরের সমাগম হয়। আর এদের আনন্দ দেবার জন্য প্রতিদিন প্রায় সাড়ে পাচ হাজার ললনা নিজেদের বিলিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এই হোটেল গুলোর মাসিক আয় প্রায় ১২ কোটি টাকা। (তথ্যসূত্র- খোঁজ পর্ব ০৭- মন্দ মেয়ের উপাখ্যান)

তারপরও এদেশে ধর্ষণ হয়। ধর্ষিতাকে ধর্ষকের সাথে বিয়ে দিয়ে সমাজ তৃপ্তির ঢেকুর তোলে।যে দেশে বাসে, ট্রেনে, পিকাপে, নৌকায় ধর্ষণ ডাল ভাত হয়ে গেছে, সে দেশে রাস্তাঘাটে যৌন হয়রানি তো স্টার্টার। ই্দানিং কর্মজীবী নারীদের কে ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েছে। বাড়বেই তো। যত দোষ তো এদেরই। ঘর থেকে বের হয় কেন? তাছাড়া কর্মজীবী স্বাবলম্বী নারীদের ধর্ষণ করা পৃথক স্বাদের কিনা !!

৯০ দশকের শেষ ভাগে এসে ধর্ষণ এদেশের সংবাদ পত্রের প্রথম পাতায় জায়গা করে নেয়। সেখানে থাকতো- কাকে, কোথায়, কিভাবে, কয়জন মিলে ধর্ষণ করেছে। বলাই বাহুল্য সেই সময়ের স্পট হিসেবে বেছে নেয়া হত পাট ক্ষেত কে। লেখা থাকতো মুখে গামছা বেধে পালা ক্রমে ধর্ষণ। কিংবা গ্রামের নিন্ম মধ্যবিত্তদের নড়বড়ে ঘরেই দেশে সু-সন্তানরা এই কর্ম সম্পাদন করতেন। কারন মেয়েটি তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বা বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করেছেন।(কত্তবড় সাহস!!)

যারা ৯০ দশকের মাঝামাঝি বাংলা সিনেমা দেখেছেন, তারা দেখেছেন সিনামার গল্পে নায়কের বোনকে অব্ধারিত ভাবেই ভিলেনের ধর্ষণের শিকার হতে হতো। দৃশ্যগুলো চিত্রায়নেও ছিলো অভিনবত্ব। নায়কের বোন কে গুন্ডা বাহিনী ধরে আনতেন, অন্ধকার রাতে গলিতে কিংবা টিলার উপর মেয়েটার কামিজের হাতা ছিড়ে ফেলা হতো, সালোয়ার খোলা অবস্থায় পাশে পড়ে থাকতো, আর ভিলেন কিছুক্ষন পর প্যান্টের চেইন আটকাতো। এখানে কোন ধরনের ফিজিকাল প্লেজারের বিষয় দেখানো হতো না। বরাবরই ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ফুটে উঠতো। তারপর? হয় মেয়েটাকে মেরে ফেলা হতো কিংবা মেয়েটা আত্মহত্যা করতেন। একজন ধর্ষিতার তো এ সমাযে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই অথবা দরকার নেই।

একবিংশ শতকে এসে সেই ধর্ষণ স্পট বদলেছে। ধান ক্ষেত পাট ক্ষেতের জায়গায় এখন বাস, ট্রেন, মাইক্রো, নৌকা, লিফট।যেন ঘর থেকে বেরলেই তোমাকে উচিত শিক্ষা দে্বো। গার্মেন্টস কর্মী যে ঘরে থাকেন সেখানটাই তো অরক্ষিত, তারপরও তাকে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে বাসে ধর্ষণ করা হয়। কারন তুমি বাইরে বেরিয়ে জগতের ক্ষতি করেছো।পুরুষ তার পায়ের নিচে তোমাকে দাসী করে রাখতে পারেনি। বলতে পারছে না তুমি অক্ষম।(অকর্মন্য পুরুষ তো আর তোমাকে অক্ষম বলে দাবী করতে পারেন না, তাই না?)

লক্ষ্য করে দেখলাম- ধর্ষণ এর খবর গুলো খুব দ্রুত সামাজিক যোগাযোগের সাইটে ছড়িয়ে পড়ে। কোথায় কখন কে ধর্ষিত হয়েছেন সেই খবরের লিংক গুলো শেয়ার করেস্ন সেই পুরুষ শ্রেনি। নারী কে ছবির মাধ্যমে শেখান আত্ম্রক্ষার কৌশল। কখনো নিজেদের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। নারী খোলামেলা পোশাক পরলো কেন, রাতে ঘর থেকে বের হলো কেন, নারী ঘরে থাকলো না কেন, নারী ওড়না পরলো না কেন --- এগুলো বলা হয় ধর্ষণ এর মতো ঘৃন্য অপরাধ কে, সামাজিক স্বীকৃ্তি দেবার জন্য।

মাঝে মাঝেই মনে হয় নারী দের জন্ম হয়েছে নিজেদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার মূল্য দেবার জন্য নয়, পুরুষের রাজকীয় লাম্পট্য মুখ বুজে সহ্য করার জন্য। তাদের চাপিয়ে দেয়া অনুশাসন মেনে চলার জন্য। নারী নাকি স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে কারন, পুরুষ তাদের কে সে সুযোগ দিয়েছে। সত্যি তো। অনেক ভাগ্য করে এসেছিলাম। (হায় রে মাথা মোটা পুরুষ মানুষ !! নরাধম-ই থেকে গেলেন, মানুষ আর হতে পারলেন না।)

সময় গড়িয়েছে, মেয়েরা খরগোসের মতো নয় কচ্ছপের মতো ধীরে ধীরে এগিয়েছে। উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। ঘরে বাইরে ১৮ ঘন্টা পরিশ্রম করেও নিজের ক্যরিয়ার নিয়ে ভেবেছেন। নারী সমস্ত প্রতিকূলতা কে জয় করতে পারলে, পুরুষের মানসিক দৈন্যতা কে জয় করতে পারেননি। পুরুষের মানসিক বিকৃ্তিই নারীদের সারা জীবনের অভিশাপ।

“অন্ধকারের দিনে ফিরতে পারি না বলেই কি,
আমি অপমানের জ্বলন্ত কয়লার উপর দিয়ে হেঁটে যেতে চাই,
যেতে চাই দুঃখের দিকে”

মুক্তিযুদ্ধের সময় যে চারটি অপরাধ ক্ষমা করা হয়নি তার একটি ধর্ষণ। আশা করবো সরকার দেশের চলমান এই পরিস্থিতি গুরুত্বের সাথে নিবেন। দ্রুত বিচার এর আওতায় এনে অপরাধী কে খুঁজ়ে বের করে যথাযথ শাস্তি দিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৩
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×