বেগম জিয়া বলেছেন ক্ষমতায় গেলে তিনি বেকারদের ভাতা দেবেন! ভালো কথা, কিন্তু তিনি এটা বলেননি ক্ষমতায় গেলে তিনি বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য কী কী করবেন যেটা জাতির জন্য বেশি দরকারি ছিল। উনি কি জানেন দেশে বর্তমান বেকারের সংখ্যা কত? বছরে কত পারসেন্ট হারে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে? দেশে মোট শ্রমশক্তির পরিমাণ কত? দেশের অর্থনীতি কি বেকারদের ভাতা দেওয়ার মতো শক্ত অবস্থানে আছে? ২০২১ সাল পর্যন্ত দেশে বেকারের সংখ্যা কত দাঁড়াবে? আমার মনে হয় তিনি এত হিসেব নিকেশ করে কথাটা বলেননি! বলার কথাও না!
দেশে কর্মজীবী শক্তির চেয়ে, শ্রমশক্তি বেশি বৃদ্ধির কারণে বেকার সংখ্যার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। বর্তমানে দেশে ১ কোটি ৫৪ লক্ষ পুরুষ ও ১ কোটি ২০ লক্ষ মহিলা বেকার আছে। এর মধ্যে আরও প্রায় ১ কোটির মত আছে যারা দিনমজুর এবং এদের চাকুরীর কোন গ্যারান্টি নেই। শ্রমশক্তির জরিপে আরও ১ কোটি ১১ লক্ষ গৃহিণীকে বেকার দেখায়নি যারা পরিবারের কাজ করে কিন্তু কোন পারিশ্রমিক পায় না!
নতুন করে প্রতিবছর আরো ১৩ লক্ষ বেকার যোগ হচ্ছে দেশের শ্রমশক্তিতে!
তবে এর চেয়েও আরো আশংকার কথা হচ্ছে দেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতক পাশ কর্মশক্তি শিক্ষা জীবন শেষ করার পরেও বেকার থাকে! দক্ষিণ এশিয়ায় এর চেয়ে বেশি উচ্চশিক্ষিত বেকার আছেন কেবল আফগানিস্তানে, ৬৫ শতাংশ। এর বাইরে ভারতে এর হার ৩৩ শতাংশ, নেপালে ২০ শতাংশের বেশি, পাকিস্তানে ২৮ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।
যাইহোক বেগম জিয়া ওয়াদা দেওয়ার সময় এ পরিসংখ্যানগুলো কি তার মাথায় ছিল? উনি ক্ষমতায় গেলে বেকারত্ব সমস্যা সমাধান করার জন্য স্পেশাল কিছু করবেন? যেটা অতীতে কোন সরকার করেনি! না এমন কিছু তিনি বলেননি। তিনি এও কি বলেছেন যে, তিনি ক্ষমতায় গেলে যাদেরকে দায়িত্ব দেবেন সেই মন্ত্রী, আমলারা বেকারত্ব সমস্যা সমাধান করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করবে। না এমন কিছুও তিনি বলেননি তিনি যা বলেছেন এগুলো অতীতে অনেকেই বলেছে। এগুলো কথার কথা! উনার দরকার ছিল সমস্যার গোড়া থেকে চিন্তা করা। উনার এই কথা থেকে উনার কর্মীরা উজ্জীবিত হতে পারে, সাধারণ মানুষ এখানে কিছুই খুজে পাবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৪