গতকাল ছিলো ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস! পাকিস্তান বাহিনী আমাদের ২লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত লুঠে নিয়েছে, তাদের এটাকে অবশ্য তখন কাঠমোল্লারা যুদ্ধে এসব জায়েজ এবং গনিমতের মাল হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলো! যার প্রেক্ষিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এটাকে অপরাধ হিসেবে মনে করেনি! এখনো কি দেশে যুদ্ধ চলছে? বিউটিরা কি তবে গনিমতের মাল?
বিউটিকে গত ২১ জানুয়ারি অপহরণ ও ধর্ষণ করেন বাবুল মিয়া নামের প্রতিবেশী এক যুবক। এ ঘটনায় বিউটির বাবা সায়েদ আলী ৪ মার্চ হবিগঞ্জ আদালতে বাবুলকে আসামি করে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আসামিপক্ষ পরিবারটিকে বারবার মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছিল। যে কারণে বিউটির বাবা নিরাপত্তার কথা ভেবে ১৩ মার্চ বিউটিকে তার নানাবাড়ি লাখাই উপজেলার গনিপুর গ্রামে পাঠিয়ে দেয়।
কিন্তু না তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি বিউটির। শনিবার ভোরে বিউটির নানি ফাতেমা বেগম ঘুম থেকে উঠে দ্যাখেন ঘরে নাতনি নেই! এরপর দুপুর ১২টার দিকে লোকজনের কাছ থেকে খবর পান, শায়েস্তাগঞ্জের ছাতাগর্ত হাওরে এক যুবতীর লাশ পাওয়া গেছে। পরে বিউটির বাবা গিয়ে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন।
আচ্ছা, একজন পিতা তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হলে থানায় আশ্রয় নেয়া ছাড়া আর কি করতে পারে?
আসলে বিউটির বাবা দিনমজুর, তার পকেটে টাকা নেই, তিনি সরকারী বা বেসরকারি কোন চাকুরীও করেন না! বিউটি নিজেও কোন নামকরা কলেজের স্টুডেন্ট না তার জন্য কলেজ স্টুডেন্ট, সাধারন মানুষ ফুঁসে উঠবে! সে শুধুই এক গ্রামের দিনমজুরের মেয়ে!
এটাই সত্য। আর এ কারণেই প্রথম দফা ধর্ষিত হবার পরে মামলা হলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধর্ষককে গ্রেফতার করেনি। বিউটির জীবন বাঁচাতে এগিয়ে যায়নি। তাঁকে নিরাপত্তা দেয়নি। যদি প্রথমবারে ধর্ষককে গ্রেফতার করা হতো, বিচারের মুখোমুখি করা হতো তাহলে বিউটিকে অন্তত জীবন দিতে হতো না!
যাইহোক বিউটি, আপাতত বাংলাদেশ এমনই! পরিবর্তনের আশা খুব ক্ষীণই! পরিবর্তন যদি হতো সেদিনই হতো যেদিন পূর্নিমা রানীর মা আকুতি মিনুতি করেছে, তনুর মা-বাবা ভয়ে ঘরের দরজা আটকিয়ে দমবন্ধ করে ছিলো কিংবা ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে রেইললাইনে শুয়ে বাবা মেয়ে একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকিয়ে দুনিয়া ছেড়েছে!
ছবিটি ব্লগে দিতে চায়নি তবে শিরোনামের কারনে দিতে হয়েছে!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৫৬