ফুটবল বিশ্বকাপ আসলেই আমাদের দেশের কিছু মানুষ এর মধ্যে ধর্মের ব্যপারটিকে নিয়ে আসেন। যদি আপনি ইসলাম ধর্মের কথা বলেন তাহলে এসকল খেলাধূলাকে আপনি কোনভাবেই জায়েজ করতে পারবেন না। এই সকল খেলাধূলা শরীয়াহ বিরুদ্ধ এখানে কোন মুসলিম ফারহেজগার খেলোয়াড় খেললেও সে ইসলাম বিরুদ্ধ কাজ করছে। এজন্য আপনি কোন খেলোয়াড় মুসলিম বা দেশ হওয়ার কারনে আপনি মুসলিম হলে অতি উৎসাহ দেখানোটাও সমীচীন নয়। যাইহোক সেটার বিস্তর বিশ্লেষণ করা মুফতি, মাওলানাদের কাজ। আমি বলছি অন্য আরেকটা বিষয় নিয়ে। সেটা হচ্ছে ব্রাজিল আর্জেন্টিনা সমর্থন নিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দেশে ফুটবলের সমর্থক এই দুটি দেশেরই বেশি। এই দুটি দেশকে সমর্থন দিতে গেলে এক শ্রেণীর মানুষ কিংবা মোল্লারা বলে থাকেন এই ইহুদী নাসারার দেশকে সাপোর্ট করা তাদের পতাকা নিয়ে মাতামাতি করা চরম গুনাহর কাজ। এবং এই বিষয়টি বলে তারা যে উদাহরণ টেনে আনেন তা হলো প্যালেস্টাইন, ইসরাইল ইস্যু। তাদের দাবি ইসরাইলের ইহুদিরা প্রতিনিয়ত প্যালেস্টাইনীদের প্রতি অত্যাচার করছে, অন্যায় ভাবে তাদের জায়গা দখল করে আছে, তাদের শিশুদের হত্যা করছে প্রতিদিন তাই ইহুদীদের দেশ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাকে সমর্থন করা মারাত্মক গুনাহের কাজ।
এখন আমরা দেখব আসলে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার সাথে ফিলিস্তানের কি রকম সম্পর্ক।
ব্রাজিল ফিলিস্তিন সম্পর্কঃ ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকার বৃহৎ দেশ যে- কিনা সর্বপ্রথম ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধ পূর্ববর্তী যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছিলো তার প্রতি শক্ত সমর্থন আছে ব্রাজিলের এবং ব্রাজিল মনে করে জেরুজালেমেই ফিলিস্তিনের রাজধানী হওয়া উচিত। এছাড়া ব্রাজিল মনে করে ইষ্ট ব্যাংক, গাজা স্ট্রিপ, ইষ্ট জেরুজালেম প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে আমাদের দেশের সব মুসলমানরা যা দাবি করে ব্রাজিলের পররাষ্ট্রনীতিও তাই মনে করে।
আর্জেন্টিনা ফিলিস্তিন সম্পর্কঃ ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে আর্জেন্টিনা অফিশিয়ালি ঘোষনা করেছিল ফিলিস্তিন হবে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র। এছাড়া আর্জেন্টিনা ল্যাটিন আমেরিকার সেই দেশ যারা ইজরাইল ও ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছে। ২০১২ সালে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টানা ফার্নানদেজ ডি ক্রিচনার ইসরাইল-ফিলিস্তিন ডিলিগেটদের সাথে মিটিং করে এবং ঘোষনা দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীন সার্বভৌত্বের পক্ষে। এবং ঘোষণার সাথে সাথে এই বলেন ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়া ইসরাইলীদের সহিংস পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সাধারণ একটি প্রতিক্রিয়া। ইসরাইলের আধিপত্যকামিতা এবং অব্যাহতভাবে ইহুদি উপশহর নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীর উচিত এ ধরনের অবস্থান গ্রহণ করা।' প্রেসিডেন্টের এই ঘোষনার পরপরেই ইসরাইল ও আমেরিকার চরম রোষানলে পড়ে আর্জেন্টিনা।
এছাড়াও আর্জেন্টিনার পর বলিভিয়া, পেরু উরুগুয়েও স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে ঘোষণা দেয়। অথচ আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ ইহুদি নাসারার দেশ মনে করে এসব দেশকে প্রতিনিয়ত দুষে যাচ্ছে। আসল কথা কিছু অজ্ঞ মোল্লাদের কারনেই এমন হচ্ছে। যারা আসলে না জেনে বিভ্রান্তি গুলি ছড়িয়ে যাচ্ছে।
Relation Between Brazil
Argentine Israil relations