"একটি জাতীয় কল্যাণের অভিন্ন আদর্শে, ব্যাপক মানুষের সার্বিক মুক্তির লক্ষ্যে একটি মাত্র রাজনৈতিক সংস্থার পতাকাতলে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা ছাড়া গত্যন্তর নেই। কিন্তু বহুদলীয় তথাকথিত গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতায় কোনোভাবেই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব নয়।" শেখ মুজিবকে বাকশাল গঠন কেন করতে চাচ্ছেন এই প্রশ্ন করা হলে তিনি এভাবে উত্তর দেন। ৭১ পরবর্তী অস্থিতিশীল অবস্থায় উত্তরটিকে কি সঠিক মনে হচ্ছে আপনার?
জাতীয় ঐক্যফন্ট হয়েছে ডঃকামাল হোসেনের নেতৃত্বে, আপনি একে সমর্থন দিচ্ছেন, বাহবা দিচ্ছেন এবং এতে জাতি উপকৃত হবে বলে চিন্তা করছেন। উনাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য গুলি দেখলে দেখবেন এতে অনেক ভালো ভালো কথা লেখা আছে, খারাপ কিছুই নেই। বাকশালের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কি পড়েছেন? সেখানে কি লেখা আছে যেগুলির ভালো দিক নেই? নাকি সেগুলি পড়েননি, লোকে মুখে শুনেই শেখ মুজিবকে ফেরাউন ভেবেছেন আর বাকশাল ফেরাউনের মন্ত্র ধরে নিয়েছেন!
জাতীয় ঐক্যফন্টে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখার কথা বলা হয়েছে, বাকশালেও ক্ষমতা ভারসাম্য থাকতো। বাকশালে ব্যক্তি কেন্দ্রিক ক্ষমতার ভারসাম্য থাকতো। বাকশালে সকল পেশাজীবির অন্তর্ভুক্তি ছিল। পুলিশ প্রধান, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী প্রধান, জেলা প্রশাসক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরসহ আরো অনেকেই। মেজের জিয়াও ফরম কিনে বাকশালের সদস্য হয়েছেন। এমন দুই একটি পয়েন্ট দেখান যেগুলি বাকশালের মধ্যে ছিলো যা দেশের সাধারণ মানুষের বিপক্ষে ছিলো!
আপনি হয়তো ভাবছেন বাকশালের মাধ্যমে শেখ মুজিব একছত্র ক্ষমতার অধিকারী হতে চেয়েছে। শেখ মুজিব বাকশালের আগেই সাংবিধানিক ভাবেই সকল ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন বৈধভাবে। একক ক্ষমতার জন্য উনার এত ঝামেলায় যাওয়ার কোন প্রয়োজন ছিলো না। আর বাকশালের জন্য যে দলটির প্রথম অবলুপ্ত হয় সেটা কিন্তু বাংলাদেশ আওমীলীগ!
শুধুমাত্র নিজের স্বার্থের জন্য বাংলাদেশ আওমীলীগ এই নামটির বিলুপ্তি করার মত নৈতিক সমর্থন তাঁর নিজের ভিতর থেকে কখনোই আসতো না।
সম্ভবত বাকশালের অধীনে কুষ্টিয়ায় একটি উপনির্বাচন হয়েছিল যাতে কোন দলীয় প্রার্থী না থাকায় একজন জনপ্রিয় স্কুল শিক্ষক বিপুল জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হয়। বাকশালের কোন দলীয় প্রতীক না থাকায় যে কেউ যে কারো সাথে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেতো। সব প্রার্থীই স্বতন্ত্র প্রার্থী।
যাইহোক আপনি এখন ঐক্যফন্ট আর বাকশালকে একসাথে রেখে ঐক্যফন্টের নেতাদের আর শেখ মুজিবকে চিন্তা করে ভেবে বলুন আপনি কেনো বাকশাল সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পুষছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ২:৪১